গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি ঃ
দেশবরেণ্য সাংবাদিক শাহ আলমগীর এর কাল রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি/২০২১) দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। গতবছর এইদিনে সকাল সাড়ে ১০টার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন চাঁদের হাট, অগ্রদূত নিকেতন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও যুগান্তর স্বজন সমাবেশের উদ্যোগে প্রয়াতের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল, প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, শোকর্যালি ও স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। শাহ আলমগীর ২০১৩ সালের ৭ জুলাই পিআইবির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পান। সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ সাহিত্য পুরস্কার ২০০৬, চন্দ্রাবতী স্বর্ণপদক ২০০৫ সহ বেশকিছু সম্মাননা অর্জন করেন।
প্রায় ৪০ বছর সাংবাদিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন শাহ আলমগীর। উপমহাদেশের প্রথম শিশু-কিশোর পত্রিকা সাপ্তাহিক কিশোর বাংলা পত্রিকায় ১৯৮০ সালে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে তিনি এ পেশা শুরু করেন। এরপর তিনি কাজ করেন দৈনিক জনতা, বাংলার বাণী, আজাদ ও সংবাদ পত্রিকায়। ১৯৯৮ সালের নভেম্বর থেকে ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত যুগ্ম বার্তা-সম্পাদক হিসেবে প্রথম আলোতে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি চ্যানেল আইয়ের প্রধান বার্তা সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর একুশে টেলিভিশনে হেড অব নিউজ, যমুনা টেলিভিশনে পরিচালক (বার্তা) এবং মাছরাঙা টেলিভিশনে বার্তা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
শাহ আলমগীরের পৈতৃক বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর। তবে বাবার চাকরি সূত্রে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে জীবনের দীর্ঘ একটি সময় কাটে তার। গৌরীপুর আর.কে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, গৌরীপুর সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বাংলা সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স করেন। পারিবারিক জীবনে শাহ আলমগীর এক পুত্র ও কন্যা সন্তানের জনক।
তিনি ছিলেন দেশের সাংবাদিকদের অভিভাবক ও গৌরীপুরের সাংবাদিকদের পরমাত্মাীয়। এখনকার সাংবাদিকদের উন্নয়নে তিনি ছিলেন নিবেদিত মানুষ। সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিকাশে চাঁদের হাট এর কার্যক্রমে জড়িয়ে ছিলেন এখানেও। গৌরীপুর আর.কে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও গৌরীপুর সরকারি কলেজে রয়েছে স্মৃতিবিজড়িত। সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের হাতেখড়ি এই গৌরীপুরে। চাঁদের হাটের মাধ্যমে গৌরীপুরে সংস্কৃতির বিকাশ ও মানবিক-সামাজিক কার্যক্রমে দৃষ্টান্তস্থাপন করেছিলেন তিনি।