আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ময়মনসিংহ-৪ সদর আসনে মনোনয়ন পেতে তৎপর হয়ে উঠেছেন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী ও বিভিন্ন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ সদর আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী দুজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ এবং দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সরকার রোকন।
অন্যদিকে মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য মোহাম্মদ কামরুল আহসান এমরুল এ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী।
আর ৫ আগস্টের পর থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের খুঁজে পাওয়া যায় না। দলের নিবন্ধন স্থগিত হওয়ার পর থেকে তারা আরও অদৃশ্য হয়ে গেছে।
আবু ওয়াহাব আকন্দ: এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী আবু ওয়াহাব আকন্দ দলের বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি এক সময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অপ্রতিরোধ্য একজন মানুষ। দীর্ঘসময় ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপি ও মহানগর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।
আওয়ামী শাসনের বিরুদ্ধে রাজপথে সবসময় ছিলেন সোচ্চার। দায়িত্ব পেয়েছেন বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের। বিগত ১৮ সালের নির্বাচনে ময়মনসিংহ-৪ সদর আসন থেকে প্রার্থী হয়ে তৎকালীন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে রেকর্ড ভোট পেয়েছেন। ফলে সদরবাসীর কাছে অনেকটা গ্রহণযোগ্য একজন মানুষ। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি দলীয় প্রার্থী হবেন। সেই লক্ষ্যে কাজ করছেন।
আবু ওয়াহাব আকন্দ জানান, বিএনপির দুর্দিনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে বিগত ১৮ সালের রাতের ভোটের নির্বাচনে লক্ষাধিক ভোট পেয়েছি। ভোটচুরির মহোৎসবের ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি জোটের বিপরীতে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে সারা দেশে রেকর্ড করেছি। এবার দলীয় মনোনয়ন পেলে বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির কাণ্ডারি তারেক রহমানকে ময়মনসিংহ-৪ সদর আসনটি উপহার দিতে চাই। সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি। সদরের মাঠ চষে বেড়াচ্ছি, ভোটারের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি।
রোকনুজ্জামান সরকার রোকন: অন্যদিকে বিএনপির আরেক সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীর মধ্যে রোকনুজ্জামান সরকার রোকন এক সময়ের রাজপথ কাঁপানো ছাত্রনেতা। তিনি জননেতায় পরিণত হতে সদরবাসীর দ্বারে দ্বারে দিন রাত ঘুরে ফিরছেন। বিগত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনের পর সম্প্রতি দক্ষিণ জেলা যুবদলের সভাপতির পদ থেকে পদোন্নতি পেয়ে হয়েছেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব। এখন তার প্রত্যাশা সদরের কাণ্ডারি হতে চান তিনি।
রোকনুজ্জামান সরকার রোকন জানান, ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে দলীয় সব আন্দোলনে সরব ভূমিকা রেখেছি। আওয়ামী স্বৈরশাসকের জেল-জুলুম, অত্যাচার-নির্যাতন সবই ভোগ করেছি। মহান আল্লাহতালার ও বিএনপির কাণ্ডারি তারেক রহমানের নির্দেশে প্রত্যাশার দলীয় পদও পেয়েছি। দলের স্বার্থে কাজ করছি। এখন অবহেলিত সদরবাসীর সেবা করতে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। মনোনয়ন পেলে বিজয়ী হয়ে ধানের শীর্ষ উপহার দেব ইনশাআল্লাহ।
এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী ময়মনসিংহ মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য মাওলানা মোহাম্মদ কামরুল আহসান এমরুল। অবহেলিত সদরবাসীর সেবা করতে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ময়মনসিংহ সদর আসন থেকে নির্বাচন করতে দিন রাত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
সদর আসন নিয়ে পরিকল্পনার বিষয়ে মাওলানা মোহাম্মদ কামরুল আহসান এমরুল যুগান্তরকে বলেন, সন্ত্রাস, দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ ও নেশামুক্ত আধুনিক সদর গড়ার অঙ্গীকার। নগরীর যানজটমুক্ত একটি নিরাপদ মহানগরী গড়ে তুলব। সদরে পানি ও পানি নিষ্কাশনের সুষ্ঠু পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। সদরসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলের রাস্তা-ঘাট উন্নত করা। কর্মসংস্থানের সৃষ্টির লক্ষ্যে কারিগরি শিক্ষার প্রসার। কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে শিল্প ও কলকারখানা স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ। কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা। কৃষি খাতকে আরও আধুনিকভাবে গড়ে তোলা আমার লক্ষ্য। সদর এলাকার চাষিদের জন্যে ফসল সংরক্ষণাগারের ব্যবস্থা করা। ফসল বাজারজাত করণে সহায়তা করা। চিকিৎসা খাতকে আধুনিক ও উন্নতভাবে গড়ে তোলা আমার লক্ষ্য।
সূত্র : যুগান্তর