ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় ভবিবল প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ান হয়েও জেলা টুর্নামেন্টে রোববার (৯ ফেব্রæয়ারি/২৫) খেলতে পারলো না গৌরীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভলিবল টিম। খেলার জন্য প্রস্তুতি নিতে এসে স্কুলমাঠে শোনতে পায় বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতি ময়মনসিংহ জেলা পর্যায়ে আয়োজিত ৫৩তম শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ভলিবল ও ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট গতকালেই (শনিবার, ৮ ফেব্রæয়ারি/২৫) হয়ে গেছে।
এ খবর শোনে মাঠেই খেলোয়াড়রা কান্নায় ভেঙে পড়েন। জাতীয় পর্যায়ের খেলার স্বপ্ন, দু:স্বপ্নে পরিণত হয়। খেলোয়াড়দের চোখের পানিতে জার্সি আর ভলিবল ভিজতে দেখা যায়। এ ঘটনা জেনে ক্ষুব্দ হয়ে উঠেন অভিভাবকরাও। এ প্রসঙ্গে অভিভাবক রিপন আহমেদ বলেন, মেয়েরা চ্যাম্পিয়ান হয়েছে শুনে উৎফুল্ল হয়েছিলাম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রোববার সেই খেলা দেয়ার জন্যও আমন্ত্রণ জানিয়েছি। এখন হতাশ হলাম, খেলা হয়ে গেছে গতকাল! এ ঘটনার তদন্ত ও গাফিলতির সঙ্গে জড়িতদের বিচার হওয়া উচিত।
এ দিকে অত্র খেলার সম্পাদক ও জেলা শিক্ষা অফিসার মোহছিনা খাতুনের দাওয়াতপত্রে দেখা যায়, ভলিবল (ছাত্রী) ৯ ফেব্রæয়ারি সকাল ১১টায় বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। এ আয়োজনে সভাপতি হিসাবে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাছিমা আক্তার ও প্রধান অতিথি হিসাবে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) লুৎফুন নাহারের নাম উল্লেখ রয়েছে। তবে দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, দাওয়াতপত্রে তারিখ ভুল ছাপা হয়েছিলো। তার সংশোধনীও দেয়া হয়েছে। অপরদিকে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম এর সভাপতিত্বে গত ২২জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ৫৩তম শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা পরিচালনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় ভলিবল ছাত্রী ৮ ফেব্রæয়ারি সকাল ১২টায় বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করেছে। একই দিন সকাল সাড়ে ৯টায় ময়মনসিংহ জিমসেনিয়ামে ব্যাডমিন্টনের সিডিউল উল্লেখ ছিলো। কাধে ব্যাগ আর জার্সি পড়ে খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো গৌরীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভলিবল ও ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতার খেলোয়াড় মীম আক্তার, ফাবিহা তাহসিন নৌরিন, ইসরাত জাহান জ্যোতি, নাদিয়া আক্তার সৌরভী, মরিয়ম আক্তার জুঁই, শ্রাবন্তী, নিশিতা সিদ্দিকা, আবিদা ইসলাম জিম, আলিফা মনি রায়া, রাফিয়া আফরিন, মোছা. মাওয়া, প্রাপ্তি রানী দাস। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, আমরা রোববারের প্রস্তুতি নিয়ে যাচ্ছিলাম। আমাদের নিকট দেয়া সিডিউল অনুযায়ী রোববার খেলা ছিলো। কিভাবে শনিবার হলো, সেটা আমরা এখনো জানি না।
এ প্রসঙ্গে একাডেমিক সুপারভাইজার কমল কুমার রায় বলেন, ৭ তারিখের খেলাটা ৯ তারিখ হবে, এধরণের একটি বার্তা আমরা অবহিত হয়ে, তা সবাইকে অবগত করা হয়েছে। তবে ৯ তারিখের খেলা ৮ তারিখ অনুষ্ঠিত হবে। এমন কোনো বার্তা আমার জানা নেই। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন জানান, তারিখ সংশোধনের কোনো ইমেইল আমরা এখনো পাইনি। সময়সূচী পরিবর্তনের কোনো পত্র বা অবহিত করা হয়নি। খেলার নির্ধারিত সিডিউল সবাইকে দেয়া হয়েছে। কোনো আমন্ত্রণপত্র আমরা দেইনি। উপজেলা শীতকালীন ক্রীড়া উদযাপন কমিটি ও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইউএনও এম সাজ্জাদুল হাসান বলেন, উপজেলা চ্যাম্পিয়ান টিম খেলায় অংশ নিতে পারলো না, এটা অত্যন্ত দু:খজনক। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।