সরকারের ভুর্তুকীকৃত ও আমদানীকৃত সার পাচারে অপ্রতিরোধ্য ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌরসভার খুচরা ডিলার আলী আক্তার খান পাঠান। রোববার (২৯ মে/২০২২) হ্যান্ডট্রলি যোগে নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়ায় পাচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সার সিন্ডিকেট চক্র অন্য উপজেলায় সার পাচার করে গৌরীপুরের কৃষকদের নিকট থেকে সার সংকটের অজুহাতে হাতিয়ে নিচ্ছে অধিকমূল্য! দুর্বল সার মনিটরিংয়ের কারণে সার পাচার অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে এ উপজেলায়।
তবে এ অভিযোগ প্রত্যাখান করে আলী আক্তার খান পাঠান জানান, তিনি গৌরীপুর উপজেলার সহনাটী ইউনিয়নের গিধাউষা এলাকায় সার পাঠিয়েছেন। এদিকে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, আব্দুল আজিজ খান পাঠানের পুত্র আলী আক্তার খান পাঠান গৌরীপুর পৌরসভার একজন খুচরা সার ডিলার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত। এছাড়াও তিনি বিসিআইসি সারের ডিলার মেসার্স শ্যামল বসাকের ডিলারশীপ পরিচালনা করেন। এ ডিলার বোকাইনগর ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিলার। সে কারণে গিধাউষায়ও সার পাঠানোর যৌক্তিক নয়!
এদিকে সার পরিবহনে নিয়োজিত হ্যান্ডট্রলি (স্থানীয়ভাবে প্রস্তুত ইঞ্জিনচালিত ভ্যানগাড়ী) চালক মো. আল আমিনের সার বোঝাই হ্যান্ডট্রলিটি নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার বেখৈরহাটি গ্রামে স্থানীয় জনতা আটক করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, গৌরীপুরের সারের ডিলার আক্তারের দোকান থেকে সার এনেছেন। তার নিকট কোনো ভাউচার। তিনি এক পর্যায়ে বলেন, সহনাটী ইউনিয়নের সরিষাহাটি বাজারে সার নিয়ে যাবেন। সারের হ্যান্ডট্রলিটি বেখৈরহাটি গ্রামের নজরুল ইসলাম ও সাইদুল ইসলামের বাড়ি সামনে দেখা যায়। সরিষাহাটি যাওয়ার রাস্তা সেখান থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার পিছনে ফেলে আসছে। জনতার নিকট একপর্যায়ে স্বীকার করেন, সারা কেন্দুয়ায় নিয়ে যাচ্ছেন।
অপরদিকে আক্তার হোসেন গত ১১ডিসেম্বরেও ইউরিয়া সার কেন্দুয়া পাচারের অভিযোগ রয়েছে। হ্যান্ডট্রলি চালক মাসুদকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় এ প্রতিনিধিকে জানান, তিনিও সরিষাহাটি যাচ্ছেন। ভুলক্রমে কেন্দুয়া চলে যাচ্ছিলো। মুঠোফোনে অপরপ্রান্ত থেকে সারের ডিলার মো. আলী আক্তার খান পাঠান বলছিলেন, ‘ক’ সরিষাহাটি যাবে। তখন হ্যান্ডট্রলি চালক মাসুদ আবারও এ প্রতিনিধিকে চলেন, আমি সরিষাহাটির আমিনুল ভাইয়ের দোকানে সার নিয়ে যাবে। এসব জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নির্দিস্ট গন্তব্যে চালককে যেতে বললে, তিনি সরাসরি সার বোঝাই হ্যান্ডট্রলি কেন্দুয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এ সড়কপথে সার ডিলার আল আমিন সার পাচারের অভিযোগে ইতোমধ্যে ইউএনও হাসান মারুফ পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতে অর্থদন্ড দেয়া হলেও তার বিরুদ্ধে নেয়া হয়নি কোন বিভাগীয় ব্যবস্থা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সরকারের প্রণোদনা ও ভুতুর্কীমূল্যে উপজেলাভিত্তিক নির্ধারিত ডিলারদের নিকট দেয়া সার উচ্চমূল্যে কালোবাজারে বিক্রি করছে। স্থানীয় কৃষকদের মাঝে সার সংকট সৃষ্টি করে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে অধিকমূল্য। সার পাচার বিষয়ে আলী আক্তার খান পাঠান ডিলারকে একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছে বলে জানান সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা কৃষি অফিসার লুৎফুন্নাহার। তিনি বলেন, সার পাচারের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এবার কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।