আজ শুক্রবার ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

প্রধান প্রতিবেদক || দৈনিক বাহাদুর
  • প্রকাশিত সময় : জানুয়ারি, ২৮, ২০২৩, ৭:০৬ অপরাহ্ণ




গৌরীপুরে ৯৭টি প্রকল্পের ১ কোটি ৮১লাখ টাকা ও ১৩টি প্রকল্পের ১২৭ মেট্রিকটন চাল-গম আত্মসাতের ঘটনায় দুদকে অভিযোগ!

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ৯৭টি প্রকল্পের বরাদ্দকৃত ১ কোটি ৮০লাখ ৭৬হাজার ৮২৫ টাকা এবং ৬টি প্রকল্পে বরাদ্দকৃত ৬৩.০৪৯ মেট্টিক টন চাল এবং ৭টি প্রকল্পে বরাদ্দকৃত ৬৩.০৪৯ মেট্টিক টন গম আত্মসাতের ঘটনায় গেল বুধবার (২৫ জানুয়ারি/২০২৩) দুর্নীতি দমন কমিশন ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক মো. আবুল হোসেন। তিনি বলেন, অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধানের অনুমতি চেয়ে প্রধান কার্যালয়ে অভিযোগটি প্রেরণ করা হয়েছে। এ অভিযোগ দায়ের করেন উপজেলার মইলাকান্দা ইউনিয়নের মইলাকান্দা গ্রামের মৃত ফয়েজ উদ্দিন আহাম্মেদের পুত্র মো. ফাইজুল হক শেখর। তিনি জানান, সরকার বরাদ্দ দিয়েছে উন্নয়নের জন্য একটি চক্র সেই উন্নয়নের প্রকল্পের নাম দিয়ে বরাদ্দকৃত টাকা, চাল ও গম লুট করে নিয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতেই লুটপাটকারীদের চিহ্নিত করতে এ অভিযোগ দায়ের করেছি।

এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার সোহেল রানা পাপ্পু সাংবাকিদের জানান, এসব প্রকল্প প্রণয়ন ও বরাদ্দ দিয়েছেন এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন স্যার। আমরা কোনো প্রকল্পের কাজ ছাড়া বরাদ্দকৃত অর্থ, চাল ও গম ছাড় দেইনি। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ এমপি বলেন, আমি এলাকার উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ দিয়েছি। বরাদ্দকৃত টাকা, চাল ও গম দিয়ে যারা প্রকল্প নিয়েছে তারা প্রকল্প বাস্তবায়ন বা উন্নয়ন করবেন। কেউ আত্মসাৎ করার তো সুযোগ নেই! কেননা প্রশাসন প্রকল্প এলাকা ঘুরে- কাজ দেখে তারপর প্রকল্পের টাকা ছাড় দেন।

অভিযোগে জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ কর্তৃক গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষন এর আওতায় ১ম কিস্তির নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক উন্নয়নখাতে এ বরাদ্দ প্রদান করেন। বাস্তবে এসব প্রকল্পের কোন কাজ হয়নি। একই স্থানকে ভিন্ননাম দেখিয়ে প্রকল্প তৈরি, অস্তিস্থবিহীন প্রকল্পের নাম দেখিয়ে ২০২২-২৩অর্থ বছরের গ্রামীন অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা/কাবিটা ও টি.আর) কর্মসূচির আওতায় যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে সেই প্রকল্পের অর্থ, চাল ও গম মাঠ পর্যায়ে কোনো কাজ না করেই সমদুয় বরাদ্দ লুট করে নিয়েছে। সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম জনসম্মুখে প্রকাশ-প্রচার করার অর্থবরাদ্দ থাকার পরেও ১১০টি প্রকল্পের কোথাও এসব প্রকল্পের প্রজেক্ট প্রোফাইল খোঁজে পাওয়া যায়নি। সোনামপুর মোড় হইতে ঘাটেরকোনা পর্যন্ত রাস্তা পুনঃ নির্মাণ প্রকল্পের বরাদ্দ ৪লাখ টাকার দেয়া প্রকল্প সম্পূর্ণ ভুয়া। একই সড়ককে দুটি নাম অনন্তগঞ্জ বাজার হইতে খানপাড়া পর্যন্ত রাস্তা পুনঃ নির্মাণ ও খানপাড়া এলজিইডির রাস্তা হতে খানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যারয় পর্যন্ত রাস্তা পুনঃ নির্মাণ প্রকল্পের ৯টাকা লুট করা হয়েছে। এ দিকে ভাংনামারী ইউনিয়নের বারুয়ামারী রোকন মাস্টারের বাড়ি তাগার মোড় পর্যন্ত রাস্তা পুনঃ নির্মাণ ১২ মেট্টিক টন, নাওভাঙ্গা কালাম কেরানীর বাড়ি হইতে নতুন ব্রীজ পর্যন্ত রাস্তা পুনঃ নির্মাণ প্রকল্পের ১১.০৪৯ মেট্টিক টন চাল লুট করা হয়েছে। তিনি দাবী করেন, এ এলাকায় কালাম কেরানী নামে এ অঞ্চলে কোনো ব্যক্তি নেই, তাগার মোড় নামেও কোন স্থান নেই। শতভাগ ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে আত্মসাত করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, বোকাইনগর ইউনিয়নের মানিকদির হতে তেলিহাটি পর্যন্ত রাস্তা পুনঃ নির্মাণ ৯ মেট্টিক টন যে বরাদ্দ দেয়া হয়। বাস্তবে এ রাস্তাটি সড়ক ও জনপদ বিভাগের নতুন রাস্তা নির্মাণ হয়েছে। তাই প্রকল্পের নাম দেখিয়ে অর্থ লুটে নিয়েছে চক্রটি। অচিন্তপুর ইউনিয়নের মহিস্মরণ বাজার হতে লংক্ষাখোলা ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তা মেরামতের নামে ১লাখ ২০হাজার টাকা লুট করা হয়েছে। বাস্তবায়নে এ ধরনের কোন সড়ক এ ইউনিয়ন নেই। এছাড়াও ২নং গৌরীপুর ইউনিয়নের বায়ড়াউড়া পাকা সড়ক হতে নয়ন মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত ১লাখ ২০হাজার টাকা কোনো কাজ ছাড়াই উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে। বায়ড়াউড়া গ্রামে কোন পাকা সড়ক নেই, প্রকল্পও নেই। অচিন্তপুর ইউনিয়নের গাগলা মোড় হতে আবুল কালামের বাড়ি হয়ে সীমানা পর্যন্ত রাস্তা মেরামত একটি সড়কেই ভিন্ননামে একাধিক প্রকল্প বরাদ্দ দিয়ে কাজ ছাড়াই বরাদ্দকৃত অর্থ, চাল ও গম লুটে নেয়া হয়েছে। কবির উদ্দিনের রাইস মিল হইতে মসজিদ পর্যন্ত রাস্তা মেরামত ১লাখ ১৪হাজার টাকা ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে আত্মসাত করা হয়েছে। সোনামপুর মোড় হতে ঘাটেরকোনো রাস্তা মেরামত-একই সড়ককে ভিন্ন ভিন্ন নামে একাধিক প্রকল্প দিয়ে কোন কাজ ছাড়াই বরাদ্দকৃত টাকা, চাল ও গম আত্মাসাৎ করা হয়েছে। কান্দাপাড়া পাকা রাস্তা হইতে তাহেরপুর পর্যন্ত রাস্তা মেরামত প্রকল্পের নামে বরাদ্দকৃত ১লাখ ১০হাজার টাকা লুট করা হয়েছে, কেননা তাহেরপুর নামে কোনো গ্রাম এ ইউনিয়নে নেই।

অভিযোগে আরও জানা যায়, মনিপুর হইতে রফিক মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত খাতে ১লাখ ২০হাজার টাকা ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে আত্মাসাৎ করা হয়েছে। পাঁচাশি চার রাস্তা মোড় হইতে ভাষাপীঠ বিল পর্যন্ত রাস্তা মেরামত প্রকল্পে ১লাখ ১৪হাজার টাকা ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে লুট করা হয়েছে। ভাষাপীঠ বিল নামে গৌরীপুর উপজেলার কোন বিল নেই। বড়বাজার হতে ঘাটপর্যন্ত রাস্তা মেরামত খাতে ১লাখ ১০হাজার টাকা আত্মাসাৎ করা হয়েছে। এ নামে উপজেলায় কোন রাস্তা নেই। নাপ্তের আলগী বাজার হতে আবুল কালামের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত খাতে ১লাখ ১০হাজার টাকা ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে আত্মাসাৎ করা হয়েছে। বাস্তবে এটি নতুন পাকাসড়ক। এছাড়াও অন্যান্য প্রকল্পের কোনো কাজ দেখা যায়নি।




Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও খবর




অনলাইন জরিপ

জাতিসংঘের বিশেষ দূত এলিস ক্রুজ বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল সব মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। আপনিও কি তা-ই মনে করেন?

View Results

Loading ... Loading ...

পুরনো সংখ্যার নিউজ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০