আজ শুক্রবার ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

||
  • প্রকাশিত সময় : আগস্ট, ১, ২০২১, ১২:৫৩ পূর্বাহ্ণ




গৌরীপুরে সরকারি কলেজের সেই ৫০বছর পূর্তি উৎসব!

বলছিলাম ২০১৪ সালের ১ আগস্টের কথা। ঈদের পরেরদিন ছোট করে হলেও আমরা আমাদের প্রিয় ক্যাম্পাসে এক হতে চাই। কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য শুধুমাত্র এই কলেজের ৫০বছরের দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য, হয়তো পরে বিশাল অনুষ্ঠান হবে, কিন্তু ১আগস্ট সেই আর পরের অনুষ্ঠানের আমেজ এক নয়….. শিক্ষার্থী আর শিক্ষার্থীদের আয়োজন, সঙ্গে থাকবেন আমাদের প্রিয় শিক্ষকবৃন্দ। এমন উদ্দেশ্য নিয়ে শুরু হয় প্রচার-প্রচারণা। কলেজের ৪৮বছরপূর্তি থেকে আমি নিয়মিত প্রতিবেদনও করেছিলাম। আজ ৫০বছরে পা রাখতে সেই শিরোনামেও দৈনিক যুগান্তরে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
কলেজের সম্মানিত শিক্ষক ও আমরা ক’জন চেষ্টা করছিলাম যাতে ৫০বছরপূর্তি উদযাপন করা হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ নানা অজুহাতে শুধু পিছপা হলে গেলেন… রাজনৈতিক নানা কারণ আর কারণ দেখাতে দেখাতে আর করা হলো না সেই অনুষ্ঠান। অবশেষে আমরা ক’জন সিদ্ধান্ত নিলাম এই কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষার্থী হিসেবে প্রারম্ভিক যাত্রাটা শুরু করবো। আমন্ত্রণ জানানোও হলে অনেককে… বিশাল সাড়া পড়লো, সেই আগ্রহ দেখে ৫টি চটপটির দোকানসহ শিশু খাদ্যের ১টি দোকানসহ ১০টি স্টলও করার সিদ্ধান্ত হলো। অবশেষে কর্তৃপক্ষ সেই আয়োজনে করতে নিষেধ করলেন…..পণ করেছি ‘পা’ রাখবো ৫০বছর পূর্তিতে সেই আশাটা অন্তত পূরণ করবো।
সেই আশা পূরণের জন্যই নানা বাঁধা-নিষেধ উপেক্ষা করে আমি একটি ব্যানার নিয়ে কলেজে পৌঁছে গেলাম। যারা কথা দিয়েছিলেন তাদের অনেকেই নেই…. গেইটেও তালাবদ্ধ। ভিতরেও আমাদেরকে প্রবেশ করতে দিলেন না। তৎকালিন অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ মহোদয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলো বললেন উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নিষেধ। তারপরেও আমরা অনঢ় কলেজের মাটিতে পা রেখেই বের হবো…. কলেজের ভিতরে কয়েকজন নেশাখোর নেশায় তখন ব্যস্ত…. কারা তাদেরকে অনুমোদন দিয়েছেন এসব নানা মুঠোফোনে দীর্ঘ আলাপচারিতা শেষে গেইট খুলে দেয়া হলো।


ঢাক-ঢোল পিটিয়ে নেচে-গেয়ে আমরা ক’জনই শুরু করলাম ৫০বছরপূর্তি উৎসবের প্রারম্ভিক যাত্রা। এটাই আমাদের ক্যাম্পাস, আমাদের শিক্ষাঙ্গন, আমাদের কলেজ। তারপরের দিনের বর্ণনা পরেই দিবো।
শোভাযাত্রাটি শুরু হলো। স্বপ্রণোদিতভাবে কলেজের বর্তমান-সাবেক শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ঐতিহ্যবাহী গৌরীপুর সরকারি করেজের ৫০বছর পূর্তি উৎসব। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ হারুণ পার্কে এসে শেষ হয়।
সেই দিনের আলোচনা সভায় কলেজের ১৯৯৯ব্যাচের ছাত্র হিসেবে আমি সভাপতিত্ব করলাম। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখলেন সাবেক ভিপি বেগ ফারুক আহাম্মেদ, তৎকালীন গৌরীপুর প্রেসক্লাব সভাপতি মোঃ শফিকুল ইসলাম মিন্টু, দৈনিক সমকাল প্রতিনিধি হুমায়ুন কবীর, কবি সেলিম আল রাজ। আড্ডায় অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখেন ১৯৯৯ব্যাচের মো. জাহাঙ্গীর আলম, কামরুল ইসলাম সোহেল, ২০০১ব্যাচের মোঃ নাজমুর করিম রেজা, ২০১৪ ব্যাচের রুবেল মাহমুদ, ২০১২ব্যাচের মাহমুদুর যোবায়ের, ২০১৩ব্যাচের এনামুল হক, ২০০৮ব্যাচের মোঃ কামরুল ইসলাম, ২০০৯ব্যাচের নুর-ই-আলম, ২০০৭ব্যাচের ফয়সাল আহম্মেদ সাত্তার, ২০১৩ব্যাচের শাহাদাত হোসেন হৃদয়, শান্তা, সিগ্ধা, রোদশি, আনিকা, ২০১২ব্যাচের সাবিকুর রহমান, ২০০১ব্যাচের ওয়াবদুর রহমান, ২০০৫ব্যাচের নাজিম উদ্দিন আহাম্মেদ, ১৯৯৩ব্যাচের আবুল কাসেম সুমন, ১৯৯১ব্যাচের পিযুষ রায় গনেশ প্রমুখ। আমার অনুরোধে সেইদিনে যারা অংশ নিয়েছিলেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
শুরুতেই ৬৯’র গণঅভ্যূত্থানে পুলিশের গুলিতে শহীদ কলেজের শিক্ষার্থী নান্দাইলের আজিজুল হক হারুন, ১৯৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন মদনের আঃ আজিজ স্মরণে এক মিনিটি নীরবতা পালন করা হয়। ৭১’র রণাঙ্গনে অংশ নেয়া মুক্তিযুদ্ধদের সুস্বাস্থ্য ও প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
এইদিনের পরে এখনো আশায় আছি, গলায় একখানা ফিতা ঝুলিয়ে উৎসবমুখর একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সেইদিনের অতৃপ্ত আত্মার তৃপ্তি নিবো। বুকে বুক রেখে বন্ধুদের খোঁজে পাবো….. প্রিয় সেই দিনের প্রতিক্ষায় আছি ………… আজ নয়, একদিন হবেই…………

লেখক ঃ মো. রইছ উদ্দিন, উপজেলা প্রতিনিধি, দৈনিক যুগান্তর, গৌরীপুর : গৌরীপুর সরকারি কলেজের ১৯৯৯ব্যাচের এইচএসসি শিক্ষার্থী, গৌরীপুর সরকারি কলেজ বিএনসিসি কন্টিনজেন্টের সাবেক সার্জেন্ট।




Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও খবর




অনলাইন জরিপ

জাতিসংঘের বিশেষ দূত এলিস ক্রুজ বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল সব মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। আপনিও কি তা-ই মনে করেন?

View Results

Loading ... Loading ...

পুরনো সংখ্যার নিউজ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০