ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের পাঁচাশী গ্রামে বিদ্যুৎ লাইনের খুঁটি স্থাপনকে সাজ্জাদুল হক নিহতের ঘটনায় সোমবার (২০ ফেব্রæয়ারি/২০২২) গৌরীপুর থানায় মামলা হয়েছে। নিহতের পুত্র মো. আতাউর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৬জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা ৬জনকে আসামী করা হয়েছে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মাহমুদুল হাসান। তিনি জানানয়, ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এজাহারভুক্ত আসামী পাঁচাশী গ্রামের আরশেদ আলীর ছেলে আবু কাউছার (২৫), মো. রুমন (২৭) ও মৃত সৈয়দ আলীর ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৫০) কে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ঈশ^রগঞ্জ আবাসিক প্রকৌশল বিভাগের অধিনে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের খুঁটি স্থাপন নিয়ে দ্ব›দ্ব চলছিল। শিবপুর থেকে পাঁচাশীগামী সড়কের শিমুল মিয়ার বাড়ির সামনে রোববার (১৯ ফেব্রæয়ারি/২০২২) সকালে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে হামলাকারীরা কুপিয়ে সাজ্জাদুল হক (৬৩) গুরুত্বর আহত করে। মচিমহায় নেয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মামলায় পাঁচাশী গ্রামের মো. সিরাজুল ইসলামের পুত্র শাহরিয়ার কবীর শিমুল (৩৫), মো. আবু রায়হান চন্দন (৩০), মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে মো. বাবুল মিয়া (৩৮), আরশেদ আলীর ছেলে আবু কাউছার (২৫), মো. রুমন (২৭), মৃত সৈয়দ আলীর ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৫০), মৃত বেরাজ খাঁর ছেলে মো. ইসলাম খাঁ (৪৫), মৃত আব্বাস আলীর ছেলে মো. খোরশেদ আলী (৫০), মৃত জবর উদ্দিনের ছেলে উজ্জল মিয়া, (৩৯), মো. শাহাজুলের ছেলে মো. সুজন মিয়া (২৮), মো. আব্দুর রাশিদের ছেলে মাসুদ মিয়া (২৫), মৃত তমিজ খাঁর ছেলে মো. আল আমিন (২৮), মৃত আদম খাঁর ছেলে সিদ্দিক খাঁ (৫০), মো. নজরুল ইসলামের ছেলে মো. শাওন (২৫), মো. সাহাজুলের ছেলে মো. মেরাজ (২৬) ও ধুরুয়া গ্রামের মৃত আব্দুল হাইয়ের ছেলে কায়েস আল কায়কোবাদ লাজুক (৪৫) কে আসামী করা হয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন আসামী রয়েছে।
নিহতের ভাই মো. নজরুল ইসলাম জানান, খুঁটি স্থাপনকে কেন্দ্র করে বিরোধ নিষ্পত্তি করার জন্য রোববার পাঁচাশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সালিশ ছিলো। সালিশের যাওয়ার সময় ওরা পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে আমার ভাই সাজ্জাদুল হককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, পাঁচাশী গ্রামের খাঁ বাড়ি ও মোড়ল বাড়ির মধ্যে খুঁটি স্থাপনকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছিলো। এ বিরোধের জের ধরে রোববার দুপুরে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের প্রায় ১০ জন আহত হন। পরে আহতদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাজ্জাদুল হক (৬৩) মারা যান। এছাড়াও গুরুতর আহত মো. লাল মিয়া মেম্বার (৭০), এনামুল সরকার (৫০), কালা মিয়া (৬০), জুলেখা আক্তার (৪০), শফিকুল ইসলাম (৪৫), জুবায়ের আহমেদ (২০), সোহরাব (৫০), এনামুল হক সরকার (৪৫) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সাজ্জাদুলের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্দ জনতা খাঁ বাড়ি ও তার আশপাশের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। এ রির্পোট পাঠানো পর্যন্ত ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মাহমুদুল হাসান জানান, ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। সন্ধ্যায় জানাযা শেষে পারিবারিক কবরাস্থানে লাশ দাফন সম্পন্ন হয়েছে।