আজ শুক্রবার ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

প্রধান প্রতিবেদক || দৈনিক বাহাদুর
  • প্রকাশিত সময় : নভেম্বর, ২৩, ২০২১, ৫:০৯ অপরাহ্ণ




গৌরীপুরে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে বাবার লাশের অপেক্ষায় থাকা লিজা!

‘তুমি ভালো করে পরীক্ষা দিও, কোনো চিন্তা করবা না, সাহস রেখো’ তোমাকে ময়মনসিংহের বড় কলেজে পড়াবো, ডাক্তার হতে হবে তোমার’ এভাবেই সাহস যোগান বাবা আলাল উদ্দিন (৪০)। প্রত্যেকটি পরীক্ষার আগে ও পরে ইনিয়ে-বিনিয়ে মেয়েকে জিজ্ঞাসা করতেন। হাজারো কিলোমিটার দূরে থেকে উৎকন্ঠায় ছিলেন মেয়ের পরীক্ষা নিয়ে। সেই উৎকন্ঠা আর সাহস সঞ্চারশক্তির মানুষটি মৃত্যুর খবর পৌঁছে সোমবার সকালে। তিনি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সহনাটী ইউনিয়নের সহনাটী দক্ষিণপাড়ার মৃত আব্দুল মুন্নাফের পুত্র।

মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন সৌদি আরবে কর্মরত ভাগ্নে রুবেল মিয়া। তিনি জানান, তার মামা দীর্ঘদিন যাবত বুকের ব্যাথা অনুভব করছিলেন। হাসপাতালে নেয়ার পর ফুসফুসের পানি ও খাদ্যনালী শুকিয়ে গেছে বলে কর্তব্যরত সৌদি ডাক্তার তাকে জানান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে রোববার রাতে মারা গেছেন।
এদিকে বাবার মৃত্যুর সংবাদে বারবার সজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন এসএসসি পরীক্ষা আফরিন জাহান লিজা। জ্ঞান ফেরার পরেই বাবাকে একনজর দেখার আকুতি জানান। তবে এইদিনে তার ছিলো জীব বিজ্ঞান পরীক্ষা। লিজা ৫ম শ্রেণির সমাপনি পরীক্ষায় ও জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন করেন। উপজেলার গিধাউষা হাসন আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগে মেধাতালিকায় প্রথমস্থান। পরিবার ও শিক্ষকদের অনয়-বিনয়ের পর সবার মতো বাবা লাশের জন্য প্রতীক্ষায় থাকা লিজা পরীক্ষা অংশগ্রহণে রাজি হয়। ‘চোখের সামনে বারবার ভেসে আসছে বাবার স্মৃতি’ কী; লিখবে লিজা! তারপরেও উত্তরপত্র নিয়ে নেত্রকোণার কেন্দুয়ার বেখৈরহাটী নরেন্দ্রকান্ত (এন কে) উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষার টেবিলে বসে লিজা।

গিধাউষা হাসন আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শহীদুজ্জামান ফকির জানান, লিজা অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী, তার বাবার মৃত্যুতে আমরাও শোকাহত। পরীক্ষা হলে আমিই হলসুপার ছিলাম। ‘ওর অশ্রুসিক্ত চোখের পানি নিঃশব্দে শুধু ওর খাতা ভিজেনি, আমাদের হৃদয়কেও নাড়া দিয়েছে’। বাবার এমন সংবাদের পরেও পরীক্ষা হলে আসায় আমরা তাকে সর্বোচ্চ সাহস জুড়িয়েছি।

সন্তানের মৃত্যু সংবাদে বারবার মোর্চা যাচ্ছেন আলাল উদ্দিনের মাতা হালিমা খাতুন। ৬ ছেলে আর ৩ কন্যার মধ্যে সে ছিলো তৃতীয়। খুবই আদরের। আলাল উদ্দিন আর দুলাল উদ্দিন ছিলো যমজ। দুলাল উদ্দিনও মারা গেছেন ৬বছর আগে। স্ত্রী পারভীন আক্তার জানান, কথা হয়েছিলো ১০/১৫দিনের মধ্যে দেশে আসবেন। সবাইকে নিয়ে কতো স্বপ্নছিলো। সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য দু’বছর আগে সৌদি আরবে কর্মের জন্য ছুটে যান তিনি। বড় মেয়ে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী আর ছোট ছেলের বয়স মাত্র ৩বছর।




Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও খবর




অনলাইন জরিপ

জাতিসংঘের বিশেষ দূত এলিস ক্রুজ বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল সব মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। আপনিও কি তা-ই মনে করেন?

View Results

Loading ... Loading ...

পুরনো সংখ্যার নিউজ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০