আজ শনিবার ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

||
  • প্রকাশিত সময় : জুলাই, ৪, ২০২০, ৪:০৭ অপরাহ্ণ




একালের তালেব মাস্টার- মোখলেছুর রহমান

একালের তালেব মাস্টার
মোখলেছুর রহমান

(একদা এক কবিবন্ধু শুধালেন একবার,
এমন একটা কবিতা লিখুন বঞ্চিত সবার
কথা উঠে আসবে, থাকবে করুন বাস্তবতা
এবং আমাদেরই বাংলাদেশের কথা।)

তাই-
কবিবন্ধুর অনুরোধে লিখতে বসি কবিতা,
যখন আমি লিখতে বসি ভুলে যাই যে সবি তা।
মনের যতো ভাবনাগুলো হৃদয়কোণে দেয় হানা,
লিখতে গেলে হারাই সবি খুঁজে পাইনা সূচনা ।
খালি পেটে কী আর লিখি পেটের ক্ষুধা রয় পেটে,
দিনগুলো তাই যাচ্ছে কেটে খুদকুঁড়ো আর মাড় চেটে।
দারিদ্র্যেরই জাঁতাকলে আমার মতো মাস্টার যতো,
নিষ্পেষিত জীবন তাদের বুকে জমা হাজার ক্ষত।
বেতন বিহীন চাকরি করি কেউ জানেনা
বেতন কতো?
সমাজ জানে মাস্টার আমি বেতন বোধহয় হাজার শত।
সুখে থাকার অভিনয়টা যাচ্ছি আমি খুব করে,
সংসার চলে অনটনে যাচ্ছি সয়ে চুপ করে।

ঘরে বৃদ্ধ মাতা-পিতা অসুস্থতায় রয় পড়ে,
নিজের অভাব থাকুক যতো তাদেরটা সই কী করে?
কতো আশা ছিলো মায়ের ছেলেটা তার বড় হবে!
দশ গেরামে নাম হয় এমন একটা চাকরি পাবে!
চাকরি বড় পেতোই ছেলে যদি দিতো লাখ দশেক,
ঘুষের টাকায় চাকরি নিলে হারাতে হয় মান-বিবেক।
চার সনদের চাকরি পেলাম সনদের চে বেতন কম।
তিন হাজারের চাকরি শুরু গোপন রাখতে চায়না মন।
তবু আশায় বুক বেঁধে রই দুখের দিনটা হবে গত।
অবশেষে মাসিক বেতন পাঁচের ঘর আর পেরোয় না-তো।

ঈদের সময় সন্তানেরা গলায় ধরে বলে আমায়,
নতুন জামা দাওনা বাবা! পুরান জামা দেবোনা গায় ।
তাদের কথা শুনে আমি কেঁদে ভাসাই বুক,
দুঃখ শত বাড়ে আরো দেখে তাদের মুখ।আমার আশার দিনগুলো সব ধীরে ধীরে যাচ্ছে ক্ষয়ে,
নিত্য তবুও বিলাই আলো দুঃখ ক্লেশ বুকে সয়ে।

জ্ঞানের আলো দিয়ে যাদের দেখালাম আজ আলোর মুখ,
তাদের কেউ আজ জজ-ব্যারিস্টার, এটাই আমার মনের সুখ।
কতো বছর পরে এবার অনেক শিক্ষক পেলো বেতন,
ভেবেছিলাম বেতন পেলে বাবা-মায়ের বাড়বে যতন।

এসেছে দুই হাজার বিশ সাল মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার,
সকল শিক্ষক পাবে বেতন দুঃখ কারো রবেনা আর।
তবুও না হয় মনের আশা এমপিওটা পাবো এবার।
আশায় আশায় বুক বেঁধে রই
পেয়েও পাওয়া হলো না আর।
মুখে হাসি পেটে ক্ষুধা তবুও বিলাই জ্ঞানালোক,
নিজকে বোঝাই ধৈর্য ধরো বাঁধ বাঁধ বুক।

এমন সময় হঠাৎ করে কোত্থেকে এক দৈত্য,
ভাইরাস নামে গর্জে উঠে মানুষ মারে সত্য।
সারা দেশের প্রতিষ্ঠানে ঝুলিয়ে দেয় তালা,
নন এমপিও শিক্ষক যতো তাদের হাতে থালা।
এরই মধ্যে কতো শিক্ষক শিক্ষকতা ফেলে,
কেউবা চালায় ঠেলাগাড়ি কেউবা মরে ঝুলে।
কী আর করা জাতি গড়া যাদের হাতে ন্যস্ত,
পেটের দায়ে অনেক শিক্ষক কুলির কাজে ব্যস্ত।
এসব দেখেও যদি থাকে কর্তারা সব চুপ করে,
কী আর হবে বেঁচে থেকে ননএমপিওরা যাক মরে।

সুখে থেকো এ সমাজের মাথা ওয়ালা যতো গুণী
নন এমপিও শিক্ষকদের আজ জীবন নিয়ে টানাটানি।
একালেরই তালেব মাস্টার এটাই মোদের পরিচয়।
আমার অভাব থাকুক যতো সবাই যেনো ভালো রয়।




Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও খবর




অনলাইন জরিপ

জাতিসংঘের বিশেষ দূত এলিস ক্রুজ বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল সব মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। আপনিও কি তা-ই মনে করেন?

View Results

Loading ... Loading ...

পুরনো সংখ্যার নিউজ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০