আজ শুক্রবার ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

||
  • প্রকাশিত সময় : নভেম্বর, ৮, ২০২০, ১০:১৭ পূর্বাহ্ণ




একনজরে জো বাইডেন

বাহাদুর ডেস্ক :

টানটান উত্তেজনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন জো বাইডেন। এর মাধ্যমে বিশ্বের সবচেয়ে পরাক্রমশালী দেশটির সর্বোচ্চ পদে আসীন হওয়ার জন্য তার প্রায় অর্ধশতাব্দীর লড়াইয়ের সফল সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে। আর বাইডেনের এই জয়ের ফলে ১৯৯২ সালের পর এই প্রথম কোনো প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প এক মেয়াদ শেষেই হোয়াইট হাউস থেকে বিদায় নিচ্ছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বয়সী প্রেসিডেন্ট হিসেবে আগামী ২০ জানুয়ারি শপথ নিতে যাওয়া বাইডেন ১৯৪২ সালের ২০ নভেম্বর আমেরিকার পেনসিলভানিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা জোসেফ এবং মা ক্যাথরিন ছিলেন আইরিশ বংশোদ্ভূত। বাইডেনদের পারিবারিক ব্যবসা ছিল খনিজ তেলের। পঞ্চাশের দশকে অবস্থাপন্ন পরিবারটি আচমকাই আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হয়। সেই ক্ষতি থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি বাইডেনের বাবা সিনিয়র জোসেফ। ফলে জন্মের পরে কয়েক বছর বাইডেন ছিলেন মামাবাড়িতে। সে সময় সপরিবারে শ্বশুরবাড়িতেই আশ্রয় নিয়েছিলেন বাইডেনের বাবা। এরপরও বেশ কয়েক বার ঠিকানা বদল করতে হয়েছে বাইডেন পরিবারকে।

অবশেষে সেকেন্ডহ্যান্ড গাড়ির সেলসম্যান হিসেবে থিতু হন জোসেফ বাইডেন সিনিয়র। কিন্তু তাদের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি থেকে যায় মধ্যবিত্ত স্তরেই। উচ্চবিত্ত পরিবারের গণ্ডি তারা আর পেরতে পারেননি। ২ ভাই এবং ১ বোনের সঙ্গে মধ্যবিত্ত ক্যাথলিক পরিবারেই বড় হন জো বাইডেন। ভাইবোনদের মধ্যে তিনি ছিলেন সবচেয়ে বড়।

বাইডেনের প্রাথমিক পড়াশোনা ক্লেমন্টের আর্চমেয়ার অ্যাকাডেমিতে। পড়াশোনায় বিশেষ আগ্রহ না থাকলেও ফুটবল এবং বেসবলে ছিলেন চৌকস। বিশ্ববিদ্যালয়েও ফুটবল খেলা চালিয়ে গেছেন। ডেলাওয়্যার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ১৯৬৫ সালে স্নাতক সম্পন্ন্ করেন। তবে স্কুলের পরে বিশ্ববিদ্যালয়েও তার রেজাল্ট ছিল পেছনের সারিতেই।

১৯৬৮ সালে তিনি সাইরাকিউজ ইউনিভার্সিটি কলেজ অব ল’ থেকে আইনবিদ্যায় ডিগ্রি পান। ৮৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে তার স্থান ছিল ৭৬। মেধাতালিকায় বিশেষ এগোতে না পারলেও বাইডেন এই সময় মুক্তি পেয়েছিলেন স্কুলজীবনের তোতলামির সমস্যা থেকে। পরে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ সময় ধরে কবিতাপাঠ করে করে তিনি এই সমস্যা থেকে মুক্ত হন।

বাইডেনের প্রথম চাকরি ছিল উইলমিংটন ল’ ফার্মে। ফার্মের প্রধান ছিলেন রিপাবলিকান উইলিয়াম প্যাট্রিক। বাইডেনের পরবর্তী কর্মস্থল ল’ ফার্মের কর্ণধার ছিলেন ডেমোক্র্যাট। তার সান্নিধ্যে বাইডেনও সক্রিয় ডেমোক্র্য়াটপন্থী হয়ে ওঠেন।

এরপর ধীরে ধীরে আইনজীবী বাইডেনকে ছাপিয়ে যায় তার রাজনীতিক সত্ত্বা। কাউন্টি কাউন্সিলের দায়িত্ব পালন করার পরে তিনি ১৯৭২ সালে প্রথম অংশ নেন সিনেটর হওয়ার লড়াইয়ে। প্রথম চেষ্টাতেই সাফল্য ধরা দেয়। ১৯৭২ সালেই তিনি ডেলাওয়্যার থেকে জুনিয়র সিনেটর হন।

তবে প্রথমবার সিনেটর হিসাবে তাকে শপথ নিতে হয়েছিল শোকবিধ্বস্ত অবস্থায়। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল তার দুই শিশুপুত্র বো এবং রবার্ট। দুই ছেলেকে ফিরে পেলেও বাইডেন এই দুর্ঘটনায় হারিয়েছিলেন তার প্রথম স্ত্রী নেইলিয়া এবং শিশুকন্যা নাওমিকে।

শিক্ষাবিদ নেইলিয়া হান্টারকে ১৯৬৬ সালে বিয়ে করেছিলেন বাইডেন। ১৯৭২ সালের ১৮ ডিসেম্বর ক্রিসমাস ট্রি কিনতে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন নেইলিয়া। সঙ্গে ছিল তাদের তিন সন্তান। পথে ট্রাকের সঙ্গে তার গাড়ির সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান নেইলিয়া এবং ছোট্ট নাওমি।

নেইলিয়া এবং নাওমির মৃত্যুর পরে জীবন থেকে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছিলেন বাইডেন। রাজনীতি থেকেও সরে দাঁড়াবেন বলে ভেবেছিলেন। তাকে আবার জীবনের পথে ফিরিয়ে আনেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী জিল ট্রেসি জ্যাকবস।

জিল ছিলেন বাইডেনের ভাইয়ের কলেজের সহপাঠী। ভাইয়ের মাধ্যমেই জিলের সঙ্গে বাইডেনের পরিচয় হয়। পরিচয়ের ২ বছর পর ১৯৭৭ সালে তারা বিয়ে করেন। তাদের এ কমাত্র মেয়ে অ্যাশলে ব্লেজার একজন সমাজকর্মী।

দীর্ঘ রাজনীতিক জীবনে ১৯৭৩ থেকে ২০০৯ অবধি বাইডেন ছিলেন ডেলাওয়্যারের ডেমোক্র্যাট সিনেটর। এরপর ২০০৯ থেকে ২০১৭ অবধি প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার দুই দফার মেয়াদে বাইডেন ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট।

টি.কে ওয়েভ-ইন




Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও খবর




অনলাইন জরিপ

জাতিসংঘের বিশেষ দূত এলিস ক্রুজ বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল সব মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। আপনিও কি তা-ই মনে করেন?

View Results

Loading ... Loading ...

পুরনো সংখ্যার নিউজ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০