ব্যাকটেরিয়াজনিত পাতা পোড়া রোগ, ব্রাস্ট, সীতবøাইটসহ ধানের সর্বরোগে আক্রান্ত হয়েছে রহমত-৩ জাতের ধান। এতে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মইলাকান্দা ইউনিয়নের অর্ধশত কৃষকের রোপিত ধানখেত ধ্বংস হয়ে গেছে। ¤øান হয়ে গেছে শৌলঘাই গ্রামের কৃষকের ঈদের আনন্দও।
ক্ষতিগ্রস্থ ধানের চারা দেখে উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফার ইয়াসমিন জলি জানান, জিংকের অভাব রয়েছে, ব্যাকটেরিয়াজনিত পাতা পোড়া রোগ, বøাস্ট-সীতবøাইট রোগের কারণে এসব ধানখেত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পরবর্তীতে এ জাত যেন কৃষক আর না করে সে জন্য পরামর্শ দেয়া হবে।
মইলাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার ফজলুল হক জানান, ধানের সবুজ চারা গুলোতে যখন ধানের শীর্ষ আসা শুরু করবে, ঠিক সেই মুর্হূতে ধানের পাতাগুলো কালচে রঙ ধারণ করে মরে গেছে। শীর্ষটা আর বের হতে পারছে না, আটকে যায়। উঁচু ধানগাছ গুলো রোগাক্রান্ত হয়ে আস্তে আস্তে ছোট হয়ে যাচ্ছে।
নিজের ফসলের খেত দেখে স্ট্রোকে আক্রান্ত হন কৃষক শাহেদ আলী। এরপরে প্রায় ১৯দিন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরছেন রোববার (৭এপ্রিল/২৪)। তিনি শৌলঘাই গ্রামের মফিজ উদ্দিনের পুত্র। তিনি জানান, গত বোরো মৌসুমে পোকার আক্রমণে ফসল নষ্ট হয়। আমনের ধান অতিবৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়। এবার সর্বরোগে ধানের খেত মরে যাচ্ছে। আমি বেঁচে থাকবো কিভাবে? তিনি জানান, উপজেলা কৃষি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করার পর ব্যবস্থাপত্র দেন। সেই ব্যবস্থা অনুযায়ী ওষুধ দিলেও ধানখেত বাঁচানো যায়নি।
সবুজপাতা গুলো পুড়ছে না, আমার কপাল পুড়ছে। ধান না হলো খাবো কি? ধানের খেতে মড়ক এসেছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৫০শতাংশ ফসলের জমি ধ্বংস হয়ে গেছে। আমাদের ঈদ নাই, ঈদের আনন্দতো আল্লাহ’ই কেড়ে নিয়েছেন। কথাগুলো বলছিলেন কৃষক আব্দুস সালাম। তিনি শৌলঘাই গ্রামের আব্দুল আজিজের পুত্র। এ গ্রামের ইয়ার হোসেনের পুত্র কবির উদ্দিন জানান, ধানখেত গলা সমান উঁচু ছিলো, এখন নিচু হয়ে যাচ্ছে। ৪০শতাংশ জমিতে বøাস্ট-বিএলবি’র আক্রমণ করেছে। আসন আলীর পুত্র আব্দুল হেকিম জানান, তার ৩৬শতাংশ জমির পুরো ধান ধ্বংস হয়ে গেছে। কৃষক ফজলুল হক জানান, মইলাকান্দা ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক কৃষক রহমত-৩ উচ্চফলনশীল জাতের ধানের চারা রোপন করেছিলেন। সবার খেতে পোকামাকড় ও রোগবালাইয়ের আক্রমণে ধ্বংস হয়ে গেছে। কৃষি বিভাগকে জানানোর পরেও কৃষকের পাশে কেউ আসে নাই।
এ প্রসঙ্গে উপসহকারী কৃষি অফিসার খাবিরুল ইসলাম জানান, আমাকে কেউ আগে অবহিত করে নাই। খবর পেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ খেতগুলো দেখেছি। আশপাশের অন্যান্য জমির ফসল রক্ষায় কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।