এম এ আজিজ, স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ \ ময়মনসিংহে মেঘনা গ্রæপের ডিপোতে চাঞ্চল্যকর ডাকাতির ঘটনায় আন্তঃজেলা ডাকাতদলের ৮ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় ডাকাতদলের হেফাজত থেকে লুিণ্ঠত ৪ হাজার লিটার সোয়াবিন তেল ও একটি ট্রাক উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের মাঝে চার ডাকাত আদালতে স্বিকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা এ সব তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে বেলতলী নামক এলাকায় মেঘনা গ্রæপের ডিপোতে গত ২২ সেপ্টেম্বর রাতে ২৫/৩০ জনের একটি ডাকাতদল কর্মচারী পরিচয়ে ঐ ডিপোতে প্রবেশ করে পাহারাদের হাত পা বেধে রাত সাড়ে ৮ টা থেকে ৬ ঘন্টাব্যাপী ডাকাতি করে। ডাকাতদল মেঘনা গ্রæপের একটি ট্রাকে করে (কোম্পানীর ট্রাক ভর্তি) ৮ হাজার ৩৮৮ লিটার সোয়াবিন তেলের কার্টুন ও নগদ ২ লাখ ১১ হাজার টাকা, আনুসাঙ্গিক জিনিসপত্রসহ ২৯ লাখ ২৬ হাজার ২৪৬ টাকার মালামাল লুটে নেয়। এই ঘটনায় কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা নং-১২/১০০০ তারিখ-২৩/০৯/২০১২ ইং ধারা- ৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড)।এ ঘটনায় কোতোয়ালী মলে থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দের পরিকল্পনায় পুলিশ পরিদর্শক ফারুক হোসেনের নেতৃত্বে এসআই নিরুপম নাগ, মিনহাজ উদ্দিন, এএসআই সুজন চন্দ্র সাহা সহ একটি চৌকস ও শক্তিশালী টিম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তদন্ত শুরু করে। তদন্তকালে কয়েকদফায় ৮ ডাকাতকে গ্রেফতার করে। এর মাঝে গত ২৮ সেপ্টম্বর ভালুকার জামাল হোসেনকে জয়দেবপুর থেকে, নজরুল ও আবু সাঈদ সৈকত ওরফে শওকতকে জামালপুর থেকে, বাদল ওরফে আসলামকে বরিশাল থেকে, মোঃ ইন্তাজ আলীকে টঙ্গী থেকে, মোঃ রাকিবকে নীলফামারী ও মোঃ ইউনুছকে রাজধানীর খিলগাও থেকে গ্রেফতার করে। এর মাঝে ইন্তাজ আলী, নজরুল ইসলাম, আবু সাঈদ সৈকত ওরফে শওকত ও বাদল ওরফে আসলাম ডাকাতির ঘটনায় নিজেদের জড়িয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
গ্রেফতারকৃতদের তথ্য মতে মেঘনা গ্রæপের লুণ্ঠিত আলামত ১৩ লাখ টাকা মুল্যের ট্রাক ও একটি মোবাইল ফোন গাজীপুরের টঙ্গী থেকে উদ্ধার করে। ডাকাতদলের তথ্য মতে, কোতোয়ালী পুলিশের চৌকস এই টিম টানা দুদিনের অভিযানে শরীয়তপুর থেকে ৪ হাজার লিটার সোয়াবিন তেল, যার মুল্য প্রায় ৭ লাখ ২৮ হাজার টাকা উদ্ধার করে। এ সময় শরীয়তপুরের ডাকাত মোঃ আবুল কালামকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, এই ডাকাতদলের সর্দার জয়নাল। এই ডাকাতদলে ২৫/৩০ জনের সদস্য রয়েছে। যাদের বাড়ি দেশের বিভিন্ন জেলায়। বিভিন্ন অপরাধে জেলখানায় থাকাকালে তাদের পরিচয় ঘটে। পরবর্তীতে জামিনে এসে সবাই গাজীপুরে কাছাকাছি বসবাস শুরু করে এবং একে অপরের সাথে যোগাযোগ করে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়। পুলিশ সুপার গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের বরাত দিয়ে আরো বলেন, ডাকতদলের এ সব সদস্য দিনে পিকআপ চালানোসহ নানা পেশায় জড়িত থাকলেও তাদের দলনেতা জয়নালের নেতৃত্বে বিভিন্ন সময় দেশের বিভিন্ন জায়গায় ডাকাতি, দুঃসাহসিক চুরিসহ নানা ধরনের অপরাধ করে আসছে। কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ বলেন, ডাকাতদলের সর্দার জয়নালসহ অন্যান্যদের গ্রেফতারে চেষ্ঠা চলছে। এদের মাঝে অনেকেই পুলিশের নজরদারিতে রয়েছে। পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে। তিনি আশা করছেন অল্প সময়ের মধ্যে আরো কয়েকজনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) খন্দকার ফজলে রাব্বি, রায়হানুল ইসলাম, ফালগ্নুনী নন্দী, শাহীনুল ইসলাম ফকির ও কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।