গৌরীপুর প্রতিনিধি ঃ
বিশাল অংকের ভুতুড়ে বিল কারণে অনেকই পথে বসার উপক্রম হয়েছে। বাড়িভিটা বিক্রি করেও বিদ্যুৎ বিল দেয়ার নেই সামর্থ্য। কোনাপাড়া গ্রামের আলাল উদ্দিনের পুত্র মো. হেলাল উদ্দিন একজন মুদি দোকানী। তার ২০২০সালের নভেম্বর মাসে বিদ্যুৎ বিল এসেছে ৯লাখ ২৪হাজার ৩২৭টাকা। তিনি জানান, অক্টোবর মাসেও বিদ্যুৎ বিল এসেছে ৮হাজার ১১৪টাকা, ইউনিট ছিলো ১২হাজার ৯৬০। এক মাস পরে নভেম্বর মাসে হঠাৎ করে মিটারে রিডিং ৯৩হাজার ৮১৪ইউনিট উঠে যায়। বিদ্যুৎ বিভাগে আবেদন নিবেদন করেও আমি প্রতিকার পাচ্ছি না। মিটারের এ রিডিংয়ের বিপরীতে বিদ্যুৎ বিভাগ ৯হাজার ২৪হাজার ৩২৭টাকার বিদ্যুৎ বিল করে দিয়েছে।
এসব ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে। বিদ্যুৎ বিভাগের দুর্নীতি-অনিয়ম ও ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহারের দাবিতে শুক্রবার (১২ মার্চ/২১) উপজেলার ২নং গৌরীপুর ইউনিয়নের কোনাপাড়া কদমতলী বাজারে গ্রাহকরা বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
সাবেক চেয়ারম্যান মো. হযরত আলী জানান, হেলালের সাড়ে ৭শতাংশের বাড়িভিটে আর কদমতলী বাজারের ৩টি দোকান বিক্রি করে দিলেও এ বিল দেয়ার সামর্থ্য নেই।
অভাবের কারণে হেলালের একছেলের লেখাপড়া বন্ধ, রাজমেস্ত্রীর সহযোগী হিসাবে কাজ করছেন। স্বর্ণা আক্তার স্থানীয় ইসলামাবাদ সিনিয়র মাদরাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ও আরেক ছেলে রিফাত মিয়া কোনাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়ছে। অতিরিক্ত এ বিদ্যুৎ বিলের জন্য অফিসে দৌড়ঝাপ করতে গিয়ে ৩ বেলার খাবারও জুটছে না। হেলালের স্ত্রী নারগিস আক্তার জানান, বিদ্যুৎ বিলের চিন্তায় তার স্বামী রাতে ঘুমাতেও পারছেন না। দুঃচিন্তায় শারীরিক সমস্যাও দেখা দিয়েছে। এ বিল প্রসঙ্গে আবাসিক প্রকৌশলী বিদ্যুৎ নিরঞ্জন কুন্ড বলেন, গ্রাহকের আবেদনের প্রেক্ষিতে মিটার পরীক্ষা করা হয়েছে। মিটার সঠিক থাকায় বিল করে দেয়া হয়েছে।
এমন আরেক অভিযোগ পাওয়া যায় পৌর শহরের গোলকপুর গ্রামে। এ গ্রামের মুদি দোকানী শিরিনা আক্তার। তাকেও দেয়া হয়েছে একমাসের বিদ্যুৎ বিল ৭৫হাজার টাকা। তিনি জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের এ অত্যাচার থেকে বাঁচতে বিভিন্ন স্থানে বিচার প্রার্থী হয়েছি, ঘুরেছি, কেউ সহযোগিতা করেনি। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেছি।