আজ সোমবার ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম:
গৌরীপুরে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক-শিক্ষার্থী হলেন যাঁরা তারাকান্দায় মোটরসাইকেল দূর্ঘটনা বাড়ছে ময়মনসিংহ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে আশরাফ তুঙ্গে ওমরা হজ্জে নেয়ার প্রলোভনে,প্রতারনা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেপ্তার ২ তারাকান্দায় দু’মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত-১ মে দিবসে গৌরীপুরে ডেকোরেটর কারিগর শ্রমিক ইউনিয়নের বর্ণিল শোভাযাত্রা মহান মে দিবসে রাজ ওস্তাগার নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে গৌরীপুরে বর্ণিল শোভাযাত্রা বিশ্ব শ্রমিক দিবসে ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে গৌরীপুরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা মহান মে দিবসে গৌরীপুরে জাতীয় শ্রমিক লীগের বর্ণিল শোভাযাত্রা অতি বাম আর অতি ডান মিলে সরকার উৎখাতে কাজ করছে: শেখ হাসিনা
প্রধান প্রতিবেদক || দৈনিক বাহাদুর
  • প্রকাশিত সময় : অক্টোবর, ৮, ২০২৩, ৮:১১ অপরাহ্ণ




গৌরীপুরে বন্যার পানিতে ৪হাজার ২৫৯জন মৎস্যচাষীর ভেসে গেছে প্রায় ২শত ৭৪ কোটি টাকা মাছ!

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে টানাবর্ষণে সৃষ্ট বন্যায় ভেসে গেছে ৪হাজার ২৫৯জন মৎস্যচাষীর ৭হাজার ৫০২টি পুকুরের ও ৪১জন হ্যাচারী মালিকের ২শত ৭৪ কোটি টাকার মাছ। এ ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে জানান সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার মো. হারুন অর রশিদ। তিনি জানান, আমরা প্রাথমিকভাবে ৭০শতাংশ মৎস্যচাষী ও ৮০শতাংশ পুকুরের মাছ সম্পূর্ণভাবে (ক্ষতিগ্রস্থ) ভেসে গেছে। এছাড়াও কিছু পুকুরে নেট (জাল) ব্যবহার করে মাছ রক্ষার চেষ্টা করা হয়েছে। তা পরবর্তীতে বুঝা যাবে; কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। ইতোমধ্যে ক্ষতির পরিমাণ শতকোটি টাকা ছাড়িয়েছে, এ ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রণয়ন ও ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় এবং দুর্যোল মোকাবিলায় করণীয় বিষয়ে শনিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফৌজিয়া নাজনীন এর সভাপতিত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোফাজ্জল হোসেন খান, ১০টি ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা এবং সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, ১০টি ইউনিয়ন ও গৌরীপুর পৌরসভায় ৯হাজার ৩৭৮টি পুকুর রয়েছে। এছাড়াও সরকারি পুকুর রয়েছে ২৫টি। এ উপজেলা মৎস্যচাষীর সংখ্যা ৬হাজার ৮৫জন। মৎস্যহ্যাচারী রয়েছে সরকারি ১টি ও বেসরকারি ৫৭টি। মৎস্য নার্সারীর সংখ্যা ৭৩টি। এ উপজেলায় ২০২১সনের জনশুমারী অনুযায়ী ৩লাখ ৫৭হাজার ২৫০জনের জন্য মৎস্য চাহিদা ৭হাজার ৮২৬.০৩ টন। এ উপজেলায় উৎপাদন হয় ১৪হাজার ৪৪৩.৬৫টন। চাহিদা পূরণ করে উব্দৃত্ত থাকে ৬হাজার ৬১৭.৮২টন। অতিবৃষ্টির পানিতে সৃষ্ট বন্যায় ইতোমধ্যে ভেসে গেছে ৭হাজার ৫০২টি পুকুরের মাছ। ৪১টি হ্যাচারীর মা মাছসহ রেনুপোনা ও মৎস্য নার্সারীর কয়েক কোটি পোনা মাছ।

এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রীয় পদকপ্রাপ্ত ঝিনুক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্রের ভোলানাথ চৌহান জানান, তার খামারের মা মাছ ভেসে গেছে। প্রত্যেকটি রুই মাছের ওজন ৬ থেকে ১০ কেজি। কাতলা মাছের ওজন ৫ থেকে ৮ কেজি। বিভিন্ন প্রজাতির ১০ থেকে ১২লাখ টাকার মা-মাছ অতিরিক্ত পানিতে ভেসে গেছে। এছাড়াও ৯টি পুকুর থেকে প্রায় ৭০লাখ টাকার বড় মাছ ও পোনা মাছ বেড়িয়ে গেছে। এসব হ্যাচারীর জন্য সোনালী ব্যাংকসহ আরও একটি ব্যাংকের ঋণ রয়েছে। আমিতো এখন নিঃস্ব হয়ে গেলাম। রাষ্ট্রীয় স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত আরেক হ্যাচারী ঝলক মৎস্য কেন্দ্রের মালিক অজিদ চৌহান জানান, প্রত্যেকটি পুকুরের ওপরে ৩ থেকে ৪ফুট পানি। ক্ষতি পরিমাণ নির্ধারণ করা এখন দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। সহনাটী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহিদাস আচার্য্য জানান, ৩টি পুকুর থেকে প্রায় ১০লাখ টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে। ডৌহাখলা ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা রতন সরকারের ৬টি পুকুরের প্রায় ২৩লাখ টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে। একই এলাকার চয়ন সরকারের ৩টি পুকুরের ৮লাখ টাকার মাছ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

এদিকে বোকাইনগর ইউনিয়নের বেতান্দর গ্রামের ফুটবলার মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, তার ৩টি পুকুরের প্রায় ৫লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। রামগোপালপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের মৃত উসমান খানের পুত্র মো. জাহাঙ্গীর আলম খান জানান, তার ৪টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে, এতে তিনি প্রায় ৬লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এ ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের পুত্র শামীম আনোয়ার জানান, তার ৭টি পুকুরের প্রায় ১০লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। পৌর শহরের সতিষা গ্রামের আবুহেনা মোস্তফা কামাল রিপন জানান, ২টি পুকুরের সব মাছ ভেসে গেছে। সহনাটী ইউনিয়নের ভালুকাপুর গ্রামের আনিছুর রহমান খান জানান, ১৬টি পুকুরের প্রায় ১২লাখ টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে। ২নং গৌরীপুর ইউনিয়নের শালিহর পূর্বপাড়ার মুন্সির চক এলাকার মো. সেলিমের পুকুরের প্রায় এক লাখ টাকার মাছ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

অপরদিকে এবছর রাষ্ট্রীয় পদকপ্রাপ্ত বর্মণ মৎস্য হ্যাচারীর মালিক যতীন্দ্র চন্দ্র বর্মণ জানান, হ্যাচারীর মা-মাছ ও ১৫টি পুকুরের প্রায় ৭০লাখ টাকার পোনামাছ পানিতে ভেসে গেছে। রামগোপালপুর ইউনিয়নের বলুহা গ্রামের ভাই ভাই মৎস্য হ্যাচারি এন্ড ফিস ফিডের মালিক মো. শিবুল মিয়া জানান, ৪টি পুকুরের প্রায় ১৩লাখ টাকার মাছ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ডৌহাখলা ইউনিয়নের কলতাপাড়ার সৌখিন মৎস্য হ্যাচারীর মো. আব্দুল হালিম জানান, ৭টি পুকুরের প্রায় ৪লাখ টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে। বোকাইনগর ইউনিয়নের ফুলহর গ্রামের আব্দুল গণি মৎস্য হ্যাচারি ও এন্ড নার্সারীর মালিকা মো. আজিজুল হকের ১৭টি পুকুরের প্রায় ২৫লাখ টাকার মাছ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

এদিকে বোকাইনগরের হক মৎস্য হ্যাচারির মো. নুরুল হক জানান, ৭টি পুকুরের প্রায় ১২লাখ টাকার মাছ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ডৌহাখলা ইউনিয়নের মরিচালী গ্রামের মৃত কাজিমুদ্দিনের পুত্র মো. ফজলুল হকের ১৩০ শতাংশের ৩ টি পুকুরে শিং মাছ ২২লাখ টাকার, গুলসা মাছ ৭লাখ টাকা, দেশিয় পোনা ১৫লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। রামগোপালপুর ইউনিয়নের মায়ের আর্শিবাদ হ্যাচারি সুনীল চন্দ্র বর্মণের ২২টি পুকুরের প্রায় ৪০লাখ টাকার মাছ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ভাই ভাই মৎস্য হ্যাচারীর মো. মাসুদ মিয়া জানান, তার পুকুরের ৪/৫লাখ টাকার মাছ বেড়িয়ে গেছে। বলুহা গ্রামের মাছচাষী মিজবাহ উদ্দিন, পার্থপ্রতিম কর, দিধারুল ইসলাম, মো. সাইফুল ইসলাম, মো. খোকন মিয়া মিয়ার ১৯টি পুকুরের প্রায় অর্ধকোটি টাকার মাছ বেড়িয়ে গেছে।
এ প্রসঙ্গে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার মো. হারুন অর রশিদ জানান, ইতোমধ্যে মৎস্যচাষীরা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও তাদেরকে কোনো প্রণোদনা দেয়া হয়নি। এবছরও আমরা ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রণয়ন করে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো কাজ চলছে। কিছু কিছু মৎস্যচাষী আজ একেভারে নিঃস্ব হয়ে গেছেন।




Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও খবর




অনলাইন জরিপ

জাতিসংঘের বিশেষ দূত এলিস ক্রুজ বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল সব মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। আপনিও কি তা-ই মনে করেন?

View Results

Loading ... Loading ...

পুরনো সংখ্যার নিউজ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১