ময়মনসিংহের গৌরীপুর গেল বৃহস্পতিবার (২৯ জুন/২০২৩) ঈদের চামড়া বাজারে দামে ধস নেমেছে। খাসি চামড়া’র ক্রেতা মিলেনি। ৩৮হাজার ৬শ টাকা মূল্যের রাজল²ী নামের খাসির চামড়াও কেউ কিনে নাই। ফরিয়া ব্যবসায়ী মজিবুর রহমান কিনে এনেও চামড়া বিক্রি করতে না পারায় বাজারে ফেলে রেখে যায়। লাখ টাকার উপরের মূল্যের ষাঁড়ের দাম ৫শ টাকা হলেও অন্যান্য গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ২শ থেকে ৩শ টাকা। অনেক এলাকায় মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী না যাওয়ায় চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়েন।
এদিকে রামগোপালপুর ইউনিয়নের তেরশিরা গ্রামের নেওয়াজ হোসেন জানান, বাড়িতে কেউ চামড়া কিনতে যায়নি। ফলে তিনি ৪টি গরুর চামড়া মাদরাসায় পাঠিয়ে দিয়েছেন। ৯০হাজার টাকা মূল্যের ষাঁড়ের চামড়া বিক্রি হয়েছে ২শ টাকায়। বিশ^নাথপুরের শামীম আনোয়ার আরও জানায়, চামড়া নিয়ে অনেক বিপাকে পড়েছেন। বোকাইনগর ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার আরশেদ আলী জানান, তিনি ৮টি চামড়া কিনে এনেছিলেন। রিকশা ভাড়া ৭শ টাকা। চামড়া বিক্রি হয়েছে ৩৮শ টাকা। লোকশান হয়েছে ১১শ টাকা। আরেক কৃষক মগবুল হোসেন জানান, ৩টি চামড়া নিয়ে বাজারে আসেন। রিস্কা ভাড়া যাওয়া-আসা ৪শ টাকা। চামড়া বিক্রি করেছেন ৮শ টাকা। খাজনা (সরকারি টোল) ৫০টাকা। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ৩চামড়ায় পেলাম ৩৫০টাকা। বাড়ি যেতে এখন ভাড়া লাগবে আরও ১শ টাকা। এই হলো চামড়ার বাজারের অবস্থা। ২নং গৌরীপুর ইউনিয়নের মেসিডেঙ্গী গ্রামের মৌসুমী ব্যবসায়ী মোঃ কমল মিয়া ও বাচ্চু মিয়া জানান, ৫টি খাসির চামড়া এনেছে, কেউ কিনতে চায়নি। তাই ড্রেনে ফেলে দিয়েছি। বেকারকান্দা গ্রামের আবুল কাসেম ও লিটন মিয়া জানান, ২৯টি চামড়া কিনে এনেছিলেন। এখন আসল মিলছে না। বোকাইনগর ইউনিয়নের গড়পাড়া গ্রামের সামছুদ্দিনের পুত্র মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী আবুল মিয়া জানান, দু’জনে ১৭টি চামড়া কিনে ছিলেন। তাদের লস হয়েছে সাড়ে ৪হাজার টাকা। পৌর শহরের সতিশা গ্রামের আমজত আলী জানান, খাসির চামড়া মাগনা (মূল্যবিহীন) আর গরুর চামড়া ২শ টাকায় কিনেছি।
চামড়া বাজারের সভাপতি আজিজুল ইসলাম রাঙা জানান, বাজারে চামড়া কিনতে দুর-দুরান্ত থেকে কোন পাইকার আসেনি। মৌসুমী ব্যবসায়ীরা এ কারণে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। খাসির সরকারি ইজারা ৫টাকা, টোল ফ্রি করে দিয়েছে, তবে সেই দামেও চামড়া বিক্রি করতে পারেনি। বাজারের ইজারাদার মো. নুরুল ইসলাম,নুরু জানান, খাসির চামড়ার খাজনা নাই। বাজারে অনেক চামড়া ফেলে রেখে গেছে, কেউ নেয়না। চামড়া বাজারের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ।