প্রধান প্রতিবেদক :
৭১’র ৩০ নভেম্বর পলাশকান্দা থেকে পাকবাহিনী ধরে নিয়ে যায় আনোয়ারুল ইসলাম মঞ্জুকে। কৃষিবিশ্ববিদ্যালয়ে চর্টারসেলে নির্যাতনের পর তাকে নিয়ে আসে ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে।
সেখানে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে চোখ ও শরীর ক্ষতিবিক্ষত করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় মঞ্জুকে। কৃষি কৃষিবিশ্ববিদ্যালয়ে নিজে আরেক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদকেও নির্মমভাবে হত্যা করে পাকবাহিনী। মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারুল ইসলাম দুলাল নেত্রকোণার ধর্মপাশায় সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন আর মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিকুর রহমান ও আব্দুল হাই সম্মুখ যুদ্ধে ঈশ^রগঞ্জে শহীদ হন। এ পাঁচজনের লাশও খোঁজে পাননি তাদের পরিবার। স্বাধীনতার ৪৯বছর পর সেই পরিবারগুলো পাচ্ছেন প্রতীকী কবর! এ কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে শুক্রবার (৩০ অক্টোবর/২০২০) ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের কবর স্থাপনের লক্ষে শহীদ আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর কবর স্থাপনের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন গৌরীপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মোঃ আব্দুল রহিম, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মোঃ নাজিম উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডাঃ হেলাল উদ্দিন আহাম্মদ, শহীদ আনোয়ার হোসেন মনজুর ভাই ম.নুরুল ইসলাম, গৌরীপুর পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র আব্দুল হালিম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড গৌরীপুর পৌর শাখার সভাপতি মশিউর রহমান কাউসার, গৌরীপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন শাহীন, মোঃ রইছ উদ্দিন, ময়মনসিংহের এস আর এন্টারপ্রাইজ ঠিকাদার আবু বক্কর রানা প্রমূখ।
এছাড়াও নেত্রকোণার মদনে সম্মুখ যুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিজবাড়িতে এসে মারা যান সুরুজ আলী। তার বাড়ি উপজেলার সহনাটী ইউনিয়নের সানিয়াপাড়া গ্রামে। তার কবরও পাকাকরণ হবে বলে নিশ্চিত করেন সাবেক কমান্ডার মোঃ আব্দুর রহিম। তিনি আরও জানান, গৌরীপুর পৌর শহরের শহীদ আনোয়ারুল ইসলাম মঞ্জু করব হচ্ছে গৌরীপুর মুক্তিযোদ্ধা কবরস্থানে। আর উপজেলার গিধাউষা গ্রামে শহীদ সিদ্দিকুর রহমান, পাছার গ্রামে শহীদ আব্দুল হাই, বাঙ্গুরিহাটা গ্রামে শহীদ আনোয়ারুল ইসলাম, লক্ষীপুর গ্রামে শহীদ আব্দুল মজিদের প্রতীকী কবর করা হচ্ছে। ঈশ^রগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমা-ার ও ঈশ^রগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছাত্তার জানান, ৭১’র পহেলা রমজান ঈশ^রগঞ্জে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ আব্দুল হাই, সিদ্দিকুর রহমানের গণকবর রয়েছে।
অপরদিকে স্বাধীনতার ৪৯বছর পর শহীদ পরিবারের নিকট লাশ না হলেও ‘ একটি কবর’ দেয়ার প্রতিটি পরিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। শহীদ মঞ্জু’র ভাই ম. নূরুল ইসলাম বলেন, আমার পরিবার ও নতুন প্রজন্ম অন্ততপক্ষে এ কবরের পাশে দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধের ৭১’কে স্মরণ করবে, দু’হাত তোলে তাদের জন্য মোনাজাত করতে পারবে। তিনি এ সিদ্ধান্তের জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
টি.কে ওয়েভ-ইন