শনিবার, ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ২৫শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

স্বাধীনতাপদক প্রাপ্ত দস্যু বনহুরের লেখক রোমেনা আফাজের আজ ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ১২ জুন, ২০২১
||
  • প্রকাশিত সময় : জুন, ১২, ২০২১, ১২:৫০ অপরাহ্ণ

স্টাফ রির্পোটার:
প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক দস্যু বনহুরসহ অসংখ্য গ্রন্থের রচয়িতা স্বাধীনতাপদক প্রাপ্ত লেখক রোমেনা আফাজের আজ শনিবার (১২ জুন/২০২১) ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি ২০০৩সনের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন। কাগজের নৌকা, মোমের আলো, মায়ার সংসার, মধুমিতা, মাটির মানুষ, দস্যু বনহুর তার উল্লেখযোগ্য বই। তিনি ১৯২৬সালের ২৭ ডিসেম্বর বগুড়া জেলার শেরপুর শহরে জন্মগ্রহণ করেন।
তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ময়মনসিংহের গৌরীপুর যুগান্তর স্বজন সমাবেশ ও ৯৭ব্যাচের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে স্মরণসভা ও বাংলা সাহিত্যে রোমেনা আফাজ শীর্ষক আলোচনার আয়োজন করেছে। অপরদিকে বগুড়ার শেরপুরে পরিবারের পক্ষ থেকে স্মরণসভা, কুরআনখানি ও রোমেনা আফাজ স্মৃতি পরিষদও অনুরূপ কর্মসূচীর বিষয়টি নিশ্চিত করেন তার নাতী উম্মে ফাতিমা লিসা।
মাত্র ৯বছর বয়সে লেখিকা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন রোমানা আফাজ। তার প্রথম কবিতা ‘বাংলার চাষী’ প্রকাশিত হয় কলকাতার মাসিক মোহাম্মদী পত্রিকায়। এরপরে আর পিছনে ফিরে তাকাননি এই মহিয়সী নারী লেখক। ছোটগল্প, কবিতা, কিশোর উপন্যাস, সামাজিক উপন্যাস, গোয়েন্দা সিরিজ ও রহস্য সিরিজসহ অসংখ্য লেখার মধ্যদিয়ে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেন তিনি। তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ২৫০টি। তার লেখা উপন্যাস অবলম্বনে জনপ্রিয় বাংলা চলচ্চিত্র কাগজের নৌকা, মোমের আলো, মায়ার সংসার, মধুমিতা, মাটির মানুষ ও দস্যু বনহুর নির্মিত হয়। তার সৃষ্ট দস্যু বনহুর চরিত্রের জন্যেই মূলত তিনি বিখ্যাত হয়ে উঠেন।
তার বাড়ি বগুড়া জেলার জলেশ্বরীতলায়। তার সেই বসতবাড়িটি বর্তমানে ‘রোমেনা আফাজ স্মৃতিঘর’। তিনি কাজেম উদ্দীন আহম্মদ এবং বেগম আছিয়া খাতুনের কন্যা। বগুড়া জেলার সদর থানার ফুলকোট গ্রামের ডাক্তার মোঃ আফাজ উল্লাহ সরকারের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। রোমেনা আফাজ শুধু একজন প্রতিভাময়ী লেখকই ছিলেন না, ছিলেন একজন সক্রিয় সমাজসেবক। তিনি ছিলেন তৎকালীন সময়ের স্থানীয় নারীমুক্তি আন্দোলন, ক্রীড়াঙ্গনের বিস্তার ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের অগ্রদূত। এসব কর্মকাণ্ডকে এগিয়ে নেয়ার জন্য ৩৭টি সংগঠনের প্রাণশক্তিতে পরিণত হন তিনি। তিনি বগুড়ার জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান, ঠেংগামারা মহিলা সবুজ সংঘের আজীবন উপদেষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা পৃষ্ঠপোষক, বাংলাদেশ মহিলা জাতীয় ক্রীড়া সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর ভাইস চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ রেডক্রস সমিতির সদস্য, শিশু একাডেমির উপদেষ্টা, বাংলাদেশ রাইটার্স ফোরামের উপদেষ্টা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
বাংলা সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১০সনে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন। বগুড়ার নারী বিকাশ সংস্থার বেগম রোকেয়া স্বর্ণপদক-২০০০, ২০০৩সনে বাংলাদেশ রাইটার্স ফোরামের একুশে পদক (সাহিত্য), ২০০৬সনে গণউন্নয়ন গ্রন্থাগার (সি,ডি,এল) পদক, নারী ফোরাম থেকে নারী মুক্তি আন্দোলনের অগ্রদূত সম্মাননা পদক ও ১৯৯৯সনে নারীগ্রন্থ প্রবর্তনা গুণীজন সম্মানা পান। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন থেকে সাহিত্যে তার বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সম্মাননা ও সংবর্ধিত হন।