শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মালেক সরকারের বিরুদ্ধে দুই ভাইস চেয়ারম্যানসহ ১৩ ইউপি চেয়ারম্যানের অনাস্থা

প্রকাশিত হয়েছে- রবিবার, ১ মার্চ, ২০২০
||
  • প্রকাশিত সময় : মার্চ, ১, ২০২০, ১০:০৭ অপরাহ্ণ

এম এ আজিজ, স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ ॥

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক সরকারের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, অসদাচরণ, মতার অপব্যবহার, স্বৈরাচারী মনোভাব ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে পরিষদের দুই ভাইস চেয়ারম্যানসহ ১৩ ইউপি চেয়ারম্যান সুনিদ্ধিষ্ট ১৩ অভিযোগ তুলে এই অনাস্থা প্রস্তাব দাখিল করেছেন। রবিবার বিকালে সকল চেয়ারম্যানগণ ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের কাছে এই অনাস্থা প্রস্তাব দাখিল করেন।
প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, সরকার দলীয় এই উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক সরকার পেশিশক্তি, দাম্ভিকতা, স্বেচ্ছাচারি মনোভাব দেখিয়ে সকল নিয়ম উপাে করে চলছেন। ফলে পরিষদের কাজের পরিবেশ মারাত্বকভাবে বিনষ্ট হচ্ছে। পরিষদ চেয়ারম্যান সরকারী বাসভবন কাম-অফিস এবং পরিষদে চেয়ারম্যানের ব্যবহার উপযোগী অফিস থাকার পর কোন ধরণের অনুমোদন ছাড়াই ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে নিজের অফিস বর্ধিত করেন। এ সময় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দাপ্তরিক কাজের অফিস ভেঙ্গে একিভুত করেন। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস পরিচালনায় মারাত্বক অসুবিধা হচ্ছে। এ মতাধর উপজেলা চেয়ারম্যান সরকারের বিনা অনুমতিতে ২০২০ সালের ফেব্র“য়ারীতে বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদের সংরতি আসনের ইউপি সদস্যদের মধ্য থেকে নির্বাচনের মাধ্যমে পরিষদের তিনজন মহিলা সদস্য নিয়োগের বিধান থাকায় তাগিদ দেওয়া সত্বেও তিনি কোন উদ্যোগ নিচ্ছেন না। পরিষদের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার প্রণয়নের নিয়ম থাকলেও তিনি তা না করে স্ববিরোধী কাজ করছেন। চলতি বছরের ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও তিনি পরিষদের উন্মুক্ত বাজেট প্রণয়ন না করে বিধি পরিপন্থি কাজ করছেন। এছাড়া পরিষদের বিভিন্ন স্থায়ী কমিটি গঠনের বাধ্য বাধকতা রয়েছে। কিন্তু তাকে বার বার তাগাদা সত্বেও তিনি কোন স্থায়ী কমিটি গঠন আইনকে অবজ্ঞা করে চলছেন। এদিকে টিআর, কাবিখা ও এডিপি বরাদ্ধ সময়মত বণ্টন না করায় উপজেলার সর্বত্র উন্নয়ন থমকে গেছে। এছাড়া চলতি বছরে এডিপির এক কোটি ৮ লাখ টাকা উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ থেকে আয়তন, জনসংখ্যা ও অনগ্রসরতার ভিত্তিতে সকল ইউনিয়নে বিভাজন করে বন্টন করতে দুই মাস আগে চিঠি দিলেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি। এই মতাধর উপজেলা চেয়ারম্যান গত বছরের এডিপির বরাদ্ধকৃত ২৫ লাখ টাকা স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে টেন্ডারবিহীন নামে বেনামে প্রকল্প দেখিয়ে উত্তোলন করে আত্বসাত করেছেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি সব সময় আগ্নেয়াস্ত্র সাথে রাখেন। যা দ্ধারা তিনি সব সময় মানুষকে ভয়ভীতি দেখান। ফলে কেউ তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পর্যন্ত দেখাতে পারেন না। অভিযোগে আরো জানা গেছে, ১নং নাওগাও ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে এডিপির ১ লাখ টাকার একটি বিল আনতে গেলে তিনি ৩০ হাজার টাকা অন্যায়ভাবে দাবী করেন। যা না পেলে তিনি ঐ বিল দিবেন না। ঐ চেয়ারম্যান প্রতিবাদ করায় তাকে অকথ্য গালমন্দ করেন। এই মতাধর চেয়ারম্যান পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যানের সাথে অসভ্য, অশ্লীল আচরণ এবং কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। যা মানহানীকর।
অভিযোগ আনয়নকারী চেয়ারম্যানরা আরো জানান, উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্বহীনতার কারণে পুরো উপজেলায় উন্নয়ন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। তারা এই উপজেলা চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবীতে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্সেপ কামনা করেছেন।