শুক্রবার, ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ২৪শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

মুফতি ওয়াক্কাসের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ৩১ মার্চ, ২০২১
||
  • প্রকাশিত সময় : মার্চ, ৩১, ২০২১, ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ

বাহাদুর ডেস্ক :

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী ছিলেন মুফতি ওয়াক্কাস। কয়েক দশক ধরে তিনি ধর্মীয় আন্দোলন করে আসছেন।  মাদ্রাসাশিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নানা দাবিদাওয়ার বিষয়ে তিনি ছিলেন সোচ্চার। বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও সামনের সারিতে দেখা গেছে বর্ষীয়ান এ নেতাকে।

শায়খুল হাদিস মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস বুধবার ভোর পৌনে ৫টার দিকে ইন্তেকাল করেন (ইন্না … রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।

আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী মুফতি ওয়াক্কাস একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি জাতীয় সংসদের হুইপের দায়িত্ব পালন করেছেন।  ছিলেন এরশাদ সরকারের ধর্ম প্রতিমন্ত্রী। তিনি ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপির নেতৃত্বে গঠিত চারদলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা ছিলেন।

বরেণ্য এই আলেম হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের উপদেষ্টাসহ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি, কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আল-হাইয়াতুল উলইয়া লিল-জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের কো-চেয়ারম্যান ও বেফাকের সহসভাপতি ছিলেন।

মুফতি ওয়াক্কাস যশোর-৫ (মনিরামপুর) আসন থেকে ১৯৮৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী (মোটরগাড়ি প্রতীক) হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন। পরে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে ১৯৮৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে পুনরায় নির্বাচিত হন। রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তাকে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন। এর পর তিনি এরশাদ সরকারের শেষ দিন পর্যন্ত জাতীয় সংসদের হুইপের দায়িত্ব পালন করেন।

পরবর্তী সময় মুফতি ওয়াক্কাস জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম নামে ধর্মভিত্তিক সংগঠনে জড়িত হন।  একাধারে ২৪ বছর জমিয়তের মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন।

২০০১ সালে বিএনপি জোটের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০৮ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে পরাজিত হন তিনি।
মুফতি ওয়াক্কাস ২০২০ সালের শেষ দিকেও হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির ও ঢাকা মহানগরের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। তবে প্রয়াত হেফাজত আমির শাহ আহমদ শফীর অবর্তমানে অভ্যন্তরীণ নানা কারণে তিনি নিজেই হেফাজত ছেড়েদেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে নিজের নির্বাচনী এলাকায় বেশ সুনাম অর্জন করেন তিনি।

জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার সহসভাপতি, কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ শিক্ষাবোর্ড আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কাওমিয়ার কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।  তার প্রতিষ্ঠিত দক্ষিণবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়া এমদাদিয়া মাদানীনগরের অধ্যক্ষ ছিলেন তিনি।

তিনি তিন ছেলে ও দুই মেয়ের জনক।

জমিয়তের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ আরমান জানান, জানাজা শেষে আজ বাদ মাগরিব মুফতি ওয়াক্কাসের গ্রামের বাড়ি যশোর মনিরামপুরে জানাজার পর সেখানেই তাকে সমাহিত করা হবে।
মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ আরমান জানান, যশোরের মনিরামপুরে মুফতি ওয়াক্কাসের প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তার জানাজা হবে।

টি.কে ওয়েভ-ইন