বুধবার, ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ২২শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

বিষয়:বোরো ধানে অতিরিক্ত চিটা

প্রকাশিত হয়েছে- মঙ্গলবার, ৬ এপ্রিল, ২০২১
||
  • প্রকাশিত সময় : এপ্রিল, ৬, ২০২১, ৬:২৪ অপরাহ্ণ
প্রকৃতির সাথে কৃষির খুবই সুনিবিড় সম্পর্ক অাছে। ফসল উৎপাদনে আবহাওয়ার প্রভাব ওতপ্রোতভাবে জড়িত।আধুনিক কৃষি ব্যবস্থাপনা যতই সমৃদ্ধ হোক না কেন প্রকৃতির কাছে এখনও আমরা দারুণ অসহায়। অবশ্য প্রকৃতির সাথে সেতুবন্ধনেই আমাদের কৃষি এগিয়ে যাচ্ছে। ধান ফসলও আবহাওয়ার প্রভাবে দারুণ প্রভাবিত হয়।কয়েকদিন যাবৎ কৃষক ভাইদের প্রধান অালোচ্য বিষয় হচ্ছে বোরো ধান চিটা হয়ে যাওয়া।এ বিষয়ে সংক্ষিপ্ত কিছু ধারনা তুলে ধরা হলো:
ধানে চিটা হওয়ার মূল কারণ: স্বাভাবিকভাবে ধানে শতকরা ১৫ থেকে ২০ ভাগ চিটা হয়। চিটার পরিমান এর চেয়ে বেশি হলে ধরে নিতে হবে থোড় থেকে ফুল ফোটা এবং ধান পাকার আগ পর্যন্ত ফসল কোনো না কোনো প্রতিকূলতার শিকার হয়েছে, যেমন অসহনীয় ঠান্ডা বা গরম, খরা বা অতিবৃষ্টি, ঝড়, পোকা ও রোগবালাই।
ঠাণ্ডাজনিত কারণের ধানে চিটা হওয়ার কারণ: রাতের তাপমাত্রা ১২-১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং দিনের তাপমাত্রা ২৮-২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস (কাইচ থোড় থেকে থোড় অবস্থা অবধি) ধান চিটা হওয়ার জন্য মোটামুটি সংকট তাপমাত্রা। তবে এই অবস্থা পাঁচ/ছয় দিন শৈত্য প্রবাহ চলতে থাকলেই কেবল অতিরিক্ত চিটা হওয়ার আশংকা থাকে। রাতের তাপমাত্রা সংকট মাত্রায় নেমে আসলেও যদি দিনের তাপমাত্রা ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর বেশি থাকে তবে চিটা হওয়ার আশংকা কমে যায়।
গরম: ধানের জন্য অসহনীয় তাপমাত্রা হলো ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি। ফুল ফোটার সময় ১-২ ঘন্টা উক্ত তাপমাত্রা বিরাজ করলে মাত্রাতিরিক্ত চিটা হয়ে যায়।ঝড়ো বাতাসঃ ঝড়ো বাতাসের কারণে গাছ থেকে পানি প্রস্বেদন প্রক্রিয়ায় বেরিয়ে যায়। এতে ফুলের অঙ্গগুলো গঠন বাধাগ্রস্ত হয়।
আবার ঝড়ো বাতাস পরাগায়ন, গর্ভধারণ ও ধানের মধ্যে চালের বৃদ্ধি ব্যাহত করে। এতে ধানের সবুজ খোসা খয়েরি বা কালো রং ধারণ করে। ফলে ধান চিটা হয়ে যেতে পারে।
খরা: খরার কারণে শিষের শাখা বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং বিকৃত ও বন্ধ্যা ধানের জন্ম দেয়ায় চিটা হয়ে যায়।
শৈত্যপ্রবাহ বা ঠান্ডাজনিত কারণের লক্ষণসমূহ
চারা অবস্থায় শৈত্য প্রবাহ থাকলে চারা মারা যায়। কুশি অবস্থায় বাড় বাড়তি কমে যায়, গাছ হলুদ হয়ে যায়, থোড় অবস্থায় শিষ পুরোপুরি বের হতে পারে না, শিষের অগ্রভাগের ধান মরে যায় বা সম্পূর্ণ চিটা হয়ে যায়।
প্রতিরোধের উপায়
-ফসল চক্রে নেমে আসা প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিহত করা কঠিন। কিন্তু বোরো ধান অগ্রহায়নের শুরুতে বীজ বপন করলে ধানের থোড় এবং ফুল ফোটা অসহনীয় নিম্ন বা উচ্চ তাপমাত্রায় পড়ে না, ফলে ঠান্ডা ও গরম এমনকি ঝড়ো বাতাসজনিত ক্ষতি থেকেও রেহাই পাওয়া সম্ভব।
-জমিতে পানি রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
-বোরো ধানের জমিতে প্রতি ১০লিটার পানিতে ৬০গ্রাম পটাশ ও ৬০গ্রাম থিয়োভিট মিশিয়ে ৫শতাংশ হারে স্প্রে করতে হবে।
-নিকটস্ত উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ গ্রহণ।
তথ্য সূত্র: অাধুনিক ধানের চাষ-ব্রি
ইন্টারনেট,ফেইসবুক ও ব্যাক্তিগত কিছু ধারনা।
লেখক : কৃষিবিদ হুমায়ুন কবীর