শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

নানা আয়োজনে গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে হুমায়ুন আহমেদের জম্মদিন পালন

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২১
আরিফ প্রধান || শ্রীপুর (গাজীপুর)
  • প্রকাশিত সময় : নভেম্বর, ১৩, ২০২১, ৯:৩৩ অপরাহ্ণ

নানা আয়োজনে গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের ৭৩ তম জন্মদিন পালন করা হয়েছে। রাত ১২টা ১ মিনিটে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে জন্মদিনের আয়োজন শুরু হয়। শনিবার সকালে হুমায়ুন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন তার দুই ছেলে নিশাত ও নিনিদসহ ভক্ত ও স্টাফদের নিয়ে লেখকের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কবর জিয়ারত ও মাগফেরাত কামনায় দোয়ার পরে সবাইকে নিয়ে কেক কাটেন।

নুহাশপল্লীর ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বুলবুল জানান, শুক্রবার রাতে প্রয়াত লেখক হুমায়ুন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন ও তার দুই ছেলে নুহাশপল্লীতে আসেন। রাত ১২টা ১ মিনিটে ১০০১টি মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে স্টাফরা জন্মদিনের কার্যক্রম শুরু করে। সকাল থেকেই নানা শ্রেনীপেশার মানুষ ও লেখকের ভক্তরা ছুটে আসছেন এবং তার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে লেখকের প্রিয় নুহাশ পল্লী ঘুরেফিরে দেখছেন।

নুহাশ পল্লীর ভাস্কর আসাদুজ্জামান খান হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে নুহাশপল্লীর বৃষ্টি বিলাশ কটেজে ৭৩টি ভাস্কর্যের এক প্রদর্শনীর আয়োজন করেন। যা ছিল সবই গাছের শিকড় দিয়ে তৈরি। মেহের আফরোজ শাওন জানান, হুমায়ুন আহমেদ বাংলাদেশের সম্পদ, যারা তাকে ভালোবাসেন, তারা অনেকেই তাকে নিয়ে কাজ করতে চান। তবে একটা অনুরোধ, তাকে নিয়ে যা ইচ্ছে তা কেউ করবেন না। হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে অনেকে ভালোভাবে গবেষণা করছেন, পিএইচডিও করছেন। বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে পিএইচডি হচ্ছে, অনেকেই তাকে নিয়ে চর্চা করছেন। সেই চর্চাটা বাড়ুক, ছাত্ররা হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে জানুক।তারাই পরবর্তী প্রজন্মের কাছে হুমায়ূন আহমেদকে তুলে ধরবেন, হুমায়ূন আহমেদের লেখা, সৃষ্টিকর্ম তুলে দেবেন। তাকে নিয়ে ভুল কোনও চর্চা না হোক এটা আমার ও পরিবারের প্রত্যাশা।

উল্লেখ্য হুমায়ুন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন আহমেদ। তার প্রথম নাম ছিল শামসুর রহমান পরে তার নাম পরিবর্তন করে হুমায়ুন আহমেদ রাখা হয়। তার ডাক নাম ছিল কাজল। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই তিনি আমেরিকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করার পর তাকে গাজীপুরের নুহাশ পল্লীর লিচুগাছ তলায় দাফন করা হয়। হুমাযুন আহমেদ ছিলেন ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় বাঙালি কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম।

তাঁকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক বলে গণ্য করা হয়। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপ প্রধান নতুন শৈলীর জনক। অন্য দিকে তিনি আধুনিক বাংলা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবেও তিনি সমাদৃত। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় তিন শতাধিক। তার বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে, বেশ কিছু গ্রন্থ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত। পড়ালেখা শেষে তিনি ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ণ বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। নব্বই দশকের মাঝামাঝি তিনি চাকুরি থেকে অবসর নিয়ে লেখালেখিতে পুরোপুরি মনোনিবেশ করেন।