শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

গৌরীপুরে ৬০ মন্ডপে দুর্গোৎসবকে রাঙাতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা

প্রকাশিত হয়েছে- শুক্রবার, ৮ অক্টোবর, ২০২১
শ্যামল ঘোষ || উপজেলা প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত সময় : অক্টোবর, ৮, ২০২১, ৫:৫২ অপরাহ্ণ

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় এবার বেড়েছে পূজামন্ডপ। এ বছর ৪টি বেড়ে ৬০টি স্থায়ী ও অস্থায়ী মন্দিরে শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মন্ডপে মন্ডপে প্রতিমার সাজসজ্জায় ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা। কেনাকাটায় ব্যস্ত হিন্দু সম্প্রদায়। আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে নিমন্ত্রণ আর উপঢৌকনও পৌঁছে গেছে। চলছে মন্ডপ এলাকার আলোকসজ্জা, বাহারী তোরণ নির্মাণ। দর্শকদের বিনোদনের জন্য এবারও নাগরদোলা, চরকিসহ থাকছে নানা আয়োজন।
মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর/২০২১) পৌর শহরের কালিখলা পুজামন্ডপে দেখা মৃৎশিল্পী সুকেশ পাল মন্ডপে রঙতুলির শেষ আঁচড় দেয়ায় ব্যস্ত। সরকারপাড়া, মাস্টারবাড়ি ও মধ্যবাজার মন্ডপেও চলছে রঙ কাজ। এছাড়াও শহরের বাগানবাড়ি, দূর্গাবাড়ি, পূর্বদাপুনিয়া মন্ডপে দেখা যায় চলছে সাজসজ্জার কাজ।
গৌরীপুর পৌর এলাকার ২৪টি পূজামন্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সিংহভাগ মন্ডপে পুজা উদযাপন কমিটির আয়োজনে স্থান করা হচ্ছে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা। কালিখলা পুজা মন্ডপের সাধারণ সম্পাদক শংকর ঘোষ পিলু জানান জানান, মন্ডপ এলাকায় যেন কোনরূপ বিশৃঙ্খলা, নারীদের যৌন হয়রানি, উঠতি বয়সের কিশোর ও যুবদের বেপরোয়া চলাচলে নজরদারি করতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মন্ডপে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে।
অপরদিকে গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান মারুফ, গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে মনিটরিং টিম, প্রত্যেকটি মন্ডপে পুলিশ, গ্রাম পুলিশ, ও আনসার-ভিডিপির সার্বক্ষনিক পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অফিসার ইনচার্জ খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী জানান, প্রত্যকটি মন্ডপ এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্যামল চন্দ্র কর জানান, এবার আরো উৎসবমুখর পরিবেশে সার্বজনিন দুর্গোৎসব পালন করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা, ভয়ভীতির সংবাদ পাওয়া যায়নি।
এদিকে পুকুরে ঝরণা আতশবাজি, মৎস্যকন্যার নৃত্য, বৃষ্টিভেজা শাপলা আর মনোমুগ্ধকর আলোকসজ্জায় এবারও মাস্টারপাড়া পূজামন্ডপ সজ্জিত করা হয়েছে বলে জানান মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক অজিদ চৌহান। কালিখলা মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক অজিত কুমার মোদক জানান, মূলসড়কসহ মন্দির আঙ্গিনায় এবার থাকছে আলোর ঝলকানি। প্রতিবছর মতোও এবারও শারদীয় দুর্গোৎসবে সুসজ্জিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু চত্বর জানান দুর্গাবাড়ি মন্দির কমিটির সভাপতি পলাশ কান্তি বিশ^াস। অপরদিকে ডৌহাখলা ইউনিয়নে প্রত্যেকটি মন্দির নতুনত্ব নিয়ে ‘মা’ বরণে প্রস্তুত বলে জানান বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশন ময়মনসিংহ জেলা শাখার সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রতন সরকার। গৌরীপুরে এবারও সর্বোচ্চ প্রতিমা তৈরি করেছেন মৃৎশিল্পী সুকেশ পাল। তিনি জানান, এবার শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রতিমায় আরো নতুনত্ব ও সাজে তৈরি করা হয়েছে। শেষ মুর্হূতে চলছে রঙ তুলি আঁচড় আর সুসজ্জিতকরণের কাজ। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন খান জানান, উপজেলা পরিষদের উদ্যোগেও প্রত্যেকটি মন্দির ও মন্দির এলাকায় সার্বক্ষনিক মনিটরিং এর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ইউএনও হাসান মারুফ ও পৌর মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে দুর্গোৎসব উদযাপন নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সর্বোচ্চ মন্ডপ রয়েছে গৌরীপুর পৌরসভায় ১৭টি, দ্বিতীয় অবস্থানে ডৌহাখলা ইউনিয়নে হচ্ছে ১০টি। এছাড়াও মইলাকান্দা ইউনিয়নে ৭টি, পূজামন্ডপ রয়েছে অচিন্তপুর ও রামগোপালপুর ইউনিয়নে ৫টি করে, মাওহা ও বোকাইনগর ইউনিয়ন ৪টি করে, গৌরীপুর সদর ইউনয়নে ৩টি, সিধলা ইউনিয়ন ও সহনাটী ইউনিয়নে ২টি করে ও ভাংনামারী ইউনিয়নে ১টি পূজামন্ডপ রয়েছে।