শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

গৌরীপুরে মেয়র প্রার্থী শুভ্র হত্যা মামলার বাদী ছোট ভাই আবিদুর রহমান প্রান্তর ওপরে হামলা

প্রকাশিত হয়েছে- বৃহস্পতিবার, ৬ মে, ২০২১
||
  • প্রকাশিত সময় : মে, ৬, ২০২১, ১১:২৭ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক :

ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান শুভ্র আলোচিত হত্যাকাণ্ডের মামলায় বুধবার (৫ মে/২০২১) বিজ্ঞ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন (চার্জশিট) দাখিল করেছেন মামলার তদন্তকারী অফিসার ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. শাহ কামাল আকন্দ।

চার্জশীট দাখিলের একদিন পরে বৃহস্পতিবার (৬মে/২০২১) মামলার বাদী আবিদুর রহমান প্রান্তর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে ৪/৫জনকে আটক করা হয়েছে।  তবে নিরভরযোগ্য কোন সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেনি। গৌরীপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, শুভ্র হত্যা মামলার বাদীর ওপর হামলার ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ও তার নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে পুলিশ। ঘটনা তদন্ত ও জড়িতদের সনাক্ত কাজ চলছে।

সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেনি। (বিস্তারিত আসছে।)

পূর্বের ঘটনা পর্ব :

তদন্তে মইলাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির (একাংশের) যুগ্ম আহ্বায়ক রিয়াদুজ্জামান রিয়াদ, গৌরীপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলামসহ ১৯জনকে অভিযুক্ত করে এ প্রতিবেদন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪নং আমলী আদালতে জমা দেয়া হয়েছে।
নিহতের পরিবার সূত্র জানায়, আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়টি তারা শুনেছেন। প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবেন।
গত ১৭ অক্টোবর শুভ্রকে পৌর শহরের মধ্যবাজার বাজার পান মহালে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার ছোট ভাই আবিদুর রহমান প্রান্ত বাদী হয়ে রিয়াদুজ্জামান রিয়াদকে প্রধান আসামী করে গৌরীপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে শহরে টানা ২১দিন প্রতিবাদ সমাবেশ, বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
হত্যাকাণ্ডের ৬মাস ১৭দিন পর এ প্রতিবেদন দাখিল করা হলো। প্রতিবেদনে চার্জশীটভুক্ত ১৪জন ছাড়াও মামলার তদন্তকারী অফিসার ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. শাহ কামাল আকন্দ অনুসন্ধানে আরো ৫জনের সম্পৃক্ত পাওয়ায় ১৯জনকে অভিযুক্ত করে এ প্রতিবেদন দেয়া হয়। তারা হলেন গৌরীপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও মইলাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াদুজ্জামান রিয়াদ (২৯), তার ভাই মাসুদ পারভেজ কার্জন (২৭), উত্তরবাজার পশ্চিম লাইনের জুলমান রেজা অলির পুত্র সাকিব আহম্মেদ রেজা (২৮), পশ্চিম লামাপাড়ার আব্দুল হেলিমের পুত্র মোজাম্মেল হক (৩০), পশ্চিম কাউরাটের মৃত লাল মিয়ার পুত্র খাইরুল ইসলাম (৩০), পশ্চিম ভালুকার মৃত মাহবুর রহমান মাস্টার কাদেরের পুত্র রিফাত (২৫), পশ্চিম কাউরাটের মো. মোস্তফার পুত্র মো. হানিফ ওরফে আবু হানিফা (৩০), ইউনুছ আলীর পুত্র জাহাঙ্গীর আলম (২৮), মৃত আব্দুল খালেকের পুত্র মজিবুর রহমান (৩০), আইনুল হকের পুত্র শরীয়তউল্লাহ সমুন (৩৩), গৌরীপুর পৌরসভার ৩বারের নির্বাচিত মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম, তার ভাই সৈয়দ তৌফিকুল ইসলাম (৪৮), অপর ভাই সৈয়দ মাজহারুল ইসলাম জুয়েল (৩৮), পশ্চিম কাউরাটের চান মিয়ার পুত্র রাসেল মিয়া (৩২), কাউরাট মধ্যপাড়ার মৃত ঈমান আলীর পুত্র কামাল মিয়া (৩৫), আব্দুল হেলিমের পুত্র মো. মাঈন উদ্দিন (২০), পশ্চিম লামাপাড়ার মৃত নজরুল ইসলামের পুত্র শরীফুল ইসলাম নাঈম (২২), পশ্চিমকাউরাটের মৃত আব্দুল জব্বারের পুত্র রুহুল আমিন (২৮) ও পৌর শহরের রিস্কাপট্টি কচিকাচার মৃত আছির উদ্দিনের পুত্র শাহজাহান মিয়া (২৫)। প্রতিবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার তদন্তকারী অফিসার ময়মনসিংহ গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহ কামাল আকন্দ। তিনি জানান, এ মামলায় প্রধান আসামীসহ ৯জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জানা যায়, পৌরসভা নির্বাচনের জন্য পুরো প্রস্তুতি নিয়ে ছিলেন মাসুদুর রহমানা শুভ্র। ৯টি ওয়ার্ডে নিজস্ব কর্মী-সমর্থক ও দলীয় নেতাকর্মীদের একাংশের সমন্বয়ে গড়ে তোলেন নিজস্ব বলয়। তার কাঙ্খিত স্বপ্নকে ভেঙে দেয় সন্ত্রাসীরা। প্রকাশ্যে ১৭ অক্টোবর মধ্যবাজার পান মহালে কুপিয়ে হত্যা করে। স্বামীর স্বপ্ন পূরণের জন্য ও স্বামীর হত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত করতে শুভ্র’র স্ত্রী তাহরিমা আক্তার চুমকী মেয়র পদে প্রার্থী হন। ‘জগ’ প্রতীক ছেড়ে দিয়ে অবশেষে নৌকা বিজয়ী করতে মাঠে নামেন। তবে তৃতীয় ধাপে ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত পৌরসভার নির্বাচনে গৌরীপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হন।