শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

গাড়ি ভাড়ার টাকা না থাকায় মায়ের মরদেহ নিয়ে কাঁদছিল দুই বোন

প্রকাশিত হয়েছে- মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২১
||
  • প্রকাশিত সময় : এপ্রিল, ২৭, ২০২১, ৩:১০ অপরাহ্ণ

স্টাফ রিপোর্টার
হাসপাতালে মায়ের মরদেহের নিয়ে অঝরে কাঁদছে দুই বোন।গাড়ি ভাড়ার টাকা না থাকায় মায়ের মরদেহ বাড়ি নিতে পারছিল না তারা। এদিকে দালালদের একটি চক্র মরদেহ বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে টাকা দাবি করে দুই বোনের কাছে। টাকা না দিলে মরদেহ হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়ার ভয়ও দেখায়। খবর পেয়ে অসহায় দুই বোনের পাশে দাঁড়ায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হেল্প প্লাস ময়মনসিংহ টিম। পরে ওই টিমের উপদেষ্টা আলী ইউসুফ ও সদস্য অলক সরকার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে দুই বোন ও মরদেহ বাড়ি পৌঁছে দেয়।
সোমবার রাতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে। নিহত ওই নারীর নাম মিনারা বেগম (৫৫)। সে জেলার ঈশ^রগঞ্জের তারুন্দিয়া ইউনিয়নের গাবরবোয়ালি গ্রামের দরিদ্র দিনমজুর নূর ইসলামের স্ত্রী।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে মিনারা বেগম দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন। কয়েকদিন আগে মিনার বেগম অসুস্থ হলে পরিবারের লোকজন তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে মায়ের দেখভাল করতেন দুই বোন সুমি (১২) ও সুরাইয়া (১৮)। এদিকে সোমবার রাতে মিনারা বেগমের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।

এদিকে গাড়ি ভাড়ার টাকা না থাকায় মায়ের মরদেহ বাড়িতে নিতে না পেরে অঝরে কান্নকাটি শুরু করে দুই বোন। অপরদিকে দালালদের চক্র মরদেহ বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে দুই বোনের কাছে টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে মরদেহ হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ভয় দেখায়। এমন অবস্থায় বিষয়টি জানতে পেরে দুই বোনের পাশে দাঁড়ায় হেল্প প্লাস ময়মনসিংহ টিম।

নিহতের দেবর শফিকুল ইসলাম বলেন ভাবীর মৃত্যু সংবাদ পেয়ে আমি হাসপাতালে আসার প্রস্ততি নেই। এমন সময় দুই ভাতিজী মোবাইলে জানায় কিছু তার মায়ের লাশ বাড়ি পৌঁছে দেয়ার কথা বলে চার হাজার টাকা চাইছে। পরে আমি মোবাইলে ওই লোকের সাথে কথা বললে তারা আমাকে হুমকি দেয় টাকা না দিলে লাশ শ্মশানে নিয়ে যাবে। এমন পরিস্থিতিতে হেল্প প্লাস ময়মনসিংহ টিম নিজ খরছে অ্যাম্বুলেন্সে করে ভাবীর লাশ ও দুই ভাতিজিকে বাড়ি নিয়ে আসে।
হেল্প প্লাস ময়মনসিংহ টিমের সদস্য অলক সরকার বলেন গাড়ি ভাড়ার টাকা না থাকায় দুই বোন তাদের মায়ের লাশ বাড়ি নিতে পারছেনা জানতে পর হাসপাতালে যাই। পরে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে লাশ সহ দুই বোনকে রাতেই বাড়ি পৌঁছে দেই আমরা। যিনি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া দিয়েছিন তিনি একজন শিক্ষক তবে নাম প্রকাশ করতে চাননি।