বৃহস্পতিবার, ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

কুড়িগ্রামে ৪০ হাজারের বেশি ব্যাটারিচালিত যান, ঘটছে দুর্ঘটনা

প্রকাশিত হয়েছে- মঙ্গলবার, ৯ আগস্ট, ২০২২
রনবীর রায় রাজ || জেলা প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম৷
  • প্রকাশিত সময় : আগস্ট, ৯, ২০২২, ৫:৫০ অপরাহ্ণ

কুড়িগ্রাম জেলাজুড়ে ট্রাফিক আইনের কোনো নিয়ম-কানুন না মেনে চলাচলকারী ৪০ হাজারের বেশি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, মিশুক, অটোরিকশা ও ভ্যান শহর ও সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এর ফলে সড়কে বাড়ছে তীব্র যানজট।

রেজিস্ট্রেশন বা চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন এসব যানবাহন শহর ও গ্রাম থেকে শুরু করে মহাসড়কে বেপরোয়াভাবে দ্রুতগতিতে চলাচল করেছে। কিন্তু চালকরা কোনো নিয়ম-শৃঙ্খলা না মানায় প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট ও বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

ব্যাটারিচালিত যানবাহনগুলোর চালকদের ট্রাফিক আইন সম্পর্কে ন্যূনতম কোনো জ্ঞান বা প্রশিক্ষণ না থাকায় সড়কের ওপর যত্রতত্র পার্কিং ও ওভারটেকিংয়ের প্রতিযোগিতার কারণে দুর্বিষহ হয়ে উঠছে জনজীবন।

কুড়িগ্রাম পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, শুধুমাত্র কুড়িগ্রাম পৌরসভা এলাকায় প্রায় চার হাজার ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও দুই হাজার রিকশা চলাচল করে।

রিকশার রেজিস্ট্রেশন পৌরসভা থেকে দেওয়া হলেও ইজিবাইকের কোনো রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয় না। তবে পৌর এলাকায় ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণে রাস্তা ইজারা দেওয়ার মাধ্যমে প্রতিদিন ইজিবাইক প্রতি ১০ টাকা হারে টোল আদায় করা হয়।

কুড়িগ্রাম জেলা ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, রিকশা-মিশুক ও ভ্যান সমিতির সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক আবদার হোসেন বুলু বলেন, ব্যাটারিচালিত যানবাহগুলো সহজলভ্য হওয়ায় যে কেউ বাধাহীনভাবে এসব বাহনের মালিক ও চালক হচ্ছে। তারা মানছেন না নিয়ম-শৃঙ্খলা। জেলায় ব্যাটারিচালিত এসব বাহনের সংখ্যা ৪০ হাজার ৫শটি। প্রতিদিন ১৩টি শোরুমে গড়ে ১১০টি নতুন গাড়ি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া জেলার বাইরের শোরুম থেকেও কেনা আনা হচ্ছে প্রতিদিন।

তিনি আরও বলেন, এসব যানবাহনের পর্যাপ্ত রাস্তা বা রুট না থাকলেও প্রতিদিন বাড়ছে এর সংখ্যা। জরুরিভিত্তিতে এসব বাহনের আমদানি বন্ধ করে রাস্তায় যানজট নিয়ন্ত্রণ ও বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা সংগ্রাম পরিষদের মাধ্যমে সরকারের কাছে আবেদন করেছি। চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে। সারাদেশে প্রায় ৫০ লাখ শ্রমিক এই পেশায় থেকে তাদের পরিবারের প্রায় দুই কোটি মানুষের দুই বেলা দু’মুঠো অন্নের সংস্থান করছে। কাজেই এসব নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি তাদের বাঁচাতে সরকারকে পরিকল্পিত টেকসই উদ্যোগ নিতে হবে।

কুড়িগ্রাম জেলা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর জাহিদ সারওয়ার বলেন, ইজিবাইক ও রিকশা যেহেতেু ভিকেল অ্যাক্টের আওতায় পরে না। তাই আমাদের কাছে এর কোনো পরিসংখ্যান নেই। ভাড়া কম হওয়ায় সাধারণ যাত্রীদের পছন্দের বাহন এটি। তবে এসব বাহন যানজট এবং দুর্ঘটনার জন্য বহুলাংশে দায়ী। প্রশিক্ষণবিহীন এসব যান চালকের কোনো প্রশিক্ষণ না থকলেও ৬/৮ যাত্রী নিয়ে বিপদ সংকুল অবস্থায় অভ্যন্তরীণ ও মহাসড়কে যাতায়াত করছে। চালকদের প্রশিক্ষণের আওতায় এবং বাহনগুলো রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনা সম্ভব না হলে ভবিষ্যতে শৃঙ্খলা ফেরানো কঠিন হয়ে পড়বে।