রবিবার, ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ২৬শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

করোনার নতুন হটস্পট ভারত?

প্রকাশিত হয়েছে- বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই, ২০২০
||
  • প্রকাশিত সময় : জুলাই, ৯, ২০২০, ২:৩১ অপরাহ্ণ

বাহাদুর ডেস্ক :

ভারতে প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। দেশটিতে সংক্রমণের শুরুটা ছিল ধীরগতির। প্রথম আক্রান্ত শনাক্তের ছয় মাস না পেরুলেও দেশটি এখন সংক্রমণের দিক থেকে রাশিয়াকে অতিক্রম করে বিশ্বে তিন নম্বরে চলে এসেছে। জুনের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত একেক দিন পেরিয়ে চলেছে আগের দিনের আক্রান্তের রেকর্ড। সর্বশেষ তথ্যমতে, ভারতে করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৭ লাখ ৬৭ হাজার ২৯৬ জন। তবে কি প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের নতুন হটস্পট বিশ্বের দ্বিতীয় জনসংখ্যার এই দেশ! বিশ্লেষকরা বলছেন, বিপুল এ জনসংখ্যার তুলনায় করোনা পরীক্ষাও হচ্ছে কম, যে কারণে শনাক্তের যে সংখ্যা পাওয়া যাচ্ছে, সেটা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। খবর বিবিসির।

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪ হাজার ৮৭৯ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। আগের দিন আক্রান্ত হয়েছেন ২২ হাজার ৭৫২ জন, তার আগের দিন ২৪ হাজার ২৪৮ জন। এভাবে চলতি জুলাই মাসে প্রতিদিনই ২০-২৫ হাজার আক্রান্ত শনাক্ত হচ্ছে। আগের জুন মাসে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৮-২০ হাজার।

দেশটিতে মোট আক্রান্তের ৬০ ভাগই তিন রাজ্য, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু ও দিল্লিতে। নতুন করে আক্রান্ত বাড়ছে কর্নাটক, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশে।

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান মতে, ৩০ জানুয়ারি কেরালায় দেশের প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর গত সাড়ে পাঁচ মাসে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়েছে এই ভাইরাস। এরমধ্যে আক্রান্ত এক থেকে এক লাখে পৌঁছতে লেগেছিল ১১০ দিন। এরপরই যেন লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে সংক্রমণ। সংক্রমণ এক লাখ থেকে দু’লাখে পৌঁছতে সময় লেগেছিল ১৫ দিন। দুই থেকে তিন লাখে পৌঁছতে ১০ দিন লেগেছে। চতুর্থ লাখ ৯ দিনে, পঞ্চম লাখ ৬ দিনে সংক্রিমত হয়। এরপর পাঁচ লাখ থেকে ছয় লাখে পৌঁছতে লেগেছিল ৫ দিন। আর ৬ লাখ থেকে ৭ লাখে পৌঁছতে লাগে মাত্র চারদিন।

এ বিষয়ে দেশটির অন্যতম ভাইরোলজিস্ট ড. শাহিদ জামিল বলেন, মে মাসে সরকার র‌্যান্ডমলি ২৬ হাজার জনের নমুনা পরীক্ষা করে। এতে আক্রান্ত শনাক্ত হয় শুন্য দশমিক সাত তিন ভাগ। এ হিসেবেই যদি আমরা সারাদেশের জনসংখ্যার পরীক্ষা করি, তাহলে তো আক্রান্ত দাঁড়ায় এক কোটি। বর্তমান পরিসংখ্যান মতে, দেশটিতে প্রতি বিশ দিনে মোট সংক্রমণের সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে। এ হিসেবেইে আক্রান্ত তিন থেকে চার কোটি হবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান মতে, গত ১৩ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত ১ কোটির বেশি টেস্ট করে ফেলেছে ভারত। কিন্তু এই ১ কোটির মধ্যে অর্ধেকই ১ জুনের পর পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রতি লাখে ৬৫০ জনকে পরীক্ষা করেছে ভারত।

এদিকে আক্রান্তের হিড়িক লাগলে ভারতে মৃত্যুহার অন্যান্য দেশের তুলনায় কিছুটা কম। এ পর্যন্ত মারা গেছেন মারা গেছেন ২১ হাজার ১২৯ জন। সুস্থ হয়ে গেছেন ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৩৭৮ জন।

চীনে উহান থেকে করোনা ছড়িয়ে পড়ার পর ইউরোপের বিভিন্ন দেশ প্রথমে আক্রান্তের হটস্পট হয়ে উঠে। এরপর হটস্পট হয়ে উঠে যুক্তরাষ্ট্রসহ ল্যাতিন আমেরিকা। আক্রান্তের বর্তমান হিড়িকে ভারত কি তবে করোনার নতুন হটস্পট! এমনই আশংকা বিশ্লেষকদের।

টি.কে ওয়েভ-ইন