বৃহস্পতিবার, ৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ১লা জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

ঈশ্বরগঞ্জ ও গৌরীপুরে আটকে আছে ৯৪ নমুনার ফল

প্রকাশিত হয়েছে- মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২০
||
  • প্রকাশিত সময় : এপ্রিল, ২৮, ২০২০, ৯:৫৬ অপরাহ্ণ

ঈশ্বরগঞ্জ প্রতিনিধি :

প্রতিদিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি সেবা ও হটলাইন নম্বরে অনেকে উৎকণ্ঠা নিয়ে ফোন দিচ্ছেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্তের জন্য নমুনা দেওয়ার পর ফলাফল পেতে তাদের অপেক্ষা। ফলাফল না পাওয়ায় শনাক্তবিহীন অবস্থায় ভাইরাসটির আরো বিস্তার হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সর্বশেষ ৭ দিনে কোনো নমুনার ফলাফল জানাতে পারেনি স্বাস্থ্য বিভাগ। এমন অবস্থা ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ ও গৌরীপুরের।

ঈশ্বরগঞ্জের আঠারবাড়ি ইউনিয়নে গত ১২ এপ্রিল সর্বপ্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সনাক্ত হয়। নারায়নগঞ্জ ফেরত ২২ বছর বয়সী পোশাক শ্রমিক এক তরুণীর শরীরে শনাক্ত হয় করোনাভাইরাস। ওই অবস্থায় তাকে ময়মনসিংহ এসকে হাসাপতালের আইসোলেশনে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে তার পরিবার ও প্রতিবেশীদের মধ্যে ১০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তাদের মধ্যে পোশাক শ্রমিকের মা, দুই বোন এবং এক প্রতিবেশীর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর গত ১৮ এপ্রিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের  স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তার গাড়ি চালকের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। তার বাড়ি বড়হিত ইউনিয়নের একটি গ্রামে। গত ১৯ এপ্রিল নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাধ্যমে পরীক্ষা হওয়া এক নার্সের করোনা শনাক্ত হয়। তিনি  ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের বাসিন্দা।

এ উপজেলাটিতে করোনা ভাইরাসে ৭ জন রোগী শনাক্ত হওয়ার পর স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ঈশ্বরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা ইউনিট সোমবার পর্যন্ত ১২০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে পাঠিয়েছে। এরমধ্যে ৬৪টি নমুনার ফলাফলে ৬ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রয়েছে বলে শনাক্ত হয়। কিন্তু গত ৭ দিনে পাঠানো ৫৬ জনের নমুনার ফলাফল ঈশ্বরগঞ্জ স্বাস্থ্য বিভাগ পায়নি বলে জানায়। ওই অবস্থায় শনাক্ত বিহীন অবস্থায় ভাইরাসটির আরো বিস্তার হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. নূরুল হুদা খান বলেন, মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি নমুনা সংগ্রহ হওয়ায় জট তৈরি হয়েছে। ২১ তারিখ থেকে তারা কোনো নমুনার ফলাফল পাননি। ওই অবস্থায় প্রতিদিন মানুষ তাদের ফোন দিয়ে ফলাফল জানতে চাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, শনাক্তবিহীন অবস্থায় রোগী থাকায় সংক্রমণ ছড়ানোর শঙ্কা রয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের সাথে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করছেন।

গৌরীপুর উপজেলায় সোমবার পর্যন্ত ৫২ জনের নমুনা সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা ইউনিট। নমুনাগুলো ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে পাঠানো হয়। এর মধ্যে ১৪ টি নমুনার ফলাফলে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি। গত ২০ এপ্রিল ১৯টি নমুনা, ২১ এপ্রিল ১০টি নমুনা, ২৫ এপ্রিল ৬ টি নমুনা ও সোমবার ৩টি নমুনা পাঠানো হয়। এই ৩৮টি নমুনার ফলাফল পাওয়া যায়নি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম বলেন, ফলাফল না পাওয়ায় অনেকে উদ্বিগ্ন। স্থানীয় সংসদ সদস্যও ফোন করে ফলাফলের খোঁজ নিচ্ছেন।