শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ১৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ঈশ্বরগঞ্জ ইউপি নির্বাচন : দলীয় বিদ্রোহী জাপা’র চাপে আ’লীগ

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
মো. সেলিম || ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত সময় : ফেব্রুয়ারি, ৫, ২০২২, ৮:০৪ অপরাহ্ণ

৭ফেব্রুয়ারি ৭ম ধাপের ইউপি নির্বাচনে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে জাপা ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের চাপে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। প্রতিটি ইউনিয়নেই আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, আগামী কাল ৭ ফেব্রুয়ারি উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ২লাখ ৬৯ হাজার ৬৮১, পুরুষ ভোটার ১লাখ ৩৯হাজর ৬০ এবং মহিলা ভোটার ১লাখ ৩০হাজার ৬২০জন। ৭৪৮টি ভোট কক্ষের মাধ্যমে ১২৩টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি সম্পুন্ন করা হয়েছে।
ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীক নিয়ে ১১জন, জাতীয় পাটির মনোনিত ৮জন ও ইসলামী আন্দেলন বাংলাদেশ মনোনিত ৯জনসহ মোট ৭৫জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
দলীয় সুত্রে জানা যায়, ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকার ১১ চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিপরিতে মাঠে রয়েছেন ৩৮বিদ্রোহী প্রার্থী। ইতোমধ্যে কয়েকটি ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন দলীয় প্রার্থীরা। তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিদ্রোহীদের দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাসহ নৌকার প্রার্থীরা বলেন, স্থানীয় রাজনীতিতে মতবিরোধের কারণে ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের কারণে তাঁরা কোণঠাসা। অন্যদিকে মহাজোটের শরিক দল জাতীয় পার্টি ৮টি ইউনিয়নে প্রার্থী দিয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী রুপে বিএনপির ৪জন মাঠে রয়েছেন। ফলে নৌকার প্রার্থীরা আছেন ত্রিমুখী চাপে।
গত ইউপি নির্বাচনে ৭টিতে নৌকার প্রার্থীরা ৩টিতে বিদ্রোহী ও ১টিতে জাপা’র প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবার ১১টি ইউপিতেই আওয়ামী লীগ প্রার্থী দিয়েছেন। তবে নির্বাচনে তাঁদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি শরিক দল জাতীয় পাটি ও দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থীরা।
ঈশ্বরগঞ্জ ইউনিয়নে নৌকা পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আবু হানিফা। তাঁর বিরুদ্ধে মাঠে বিদ্রোহী প্রার্থী ৩জন। জাপা’র প্রার্থী হিসেবে আছেন আবুল বাশার। সোহাগী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান। এখানে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ৫ জন বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। সরিষা ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান ভূঁইয়া দ্বিতীয়বারের মতো নৌকা পেলেও তার জয়ে বড় বাধা উপজেলা আ’লীগ সদস্য সাবেক চেয়ারম্যান মো. একরাম হোসেন ভূঁইয়া।’ আঠারবাড়িতে বর্তমান চেয়ারম্যান হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো নৌকা নিয়ে নির্বাচন করছেন জুবের আলম কবীর রূপক। তাঁর বিরুদ্ধে মাঠে রয়েছেন যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন সরকার। জাটিয়া ইউনিয়নে আ’লীগ দলীয় মনোনয়ন নিয়ে প্রথমবার নির্বাচন করছেন মো. মাহবুবুল হক। বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন যুবলীগ নেতা বর্তমান চেয়ারম্যান শামছুল হক ঝন্টু সহ আরও ২জন। মাইজবাগ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মো. ফরিদ মিয়া। তাঁর বিরুদ্ধেও আছেন শরিক দল জাপা’র প্রার্থী ও বিদ্রোহী। এ ইউনিয়নে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত প্রার্থী রয়েছেন আরও ৩জন। মগটুলা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী নতুন মুখ মোশাররফ হোসেন আকন্দ রুবেল। তাঁর বিরুদ্ধেও ৪জন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। আছেন শরিক দল জাপা’র প্রার্থী ৪বারের চেয়ারম্যান উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাদী। রাজীবপুরে নির্বাচনী মাঠে আরও এক নতুন মুখ আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন। তাঁর বিরুদ্ধে ৪জন বিদ্রোহী প্রার্থী ও শরিক দল জাপা’র প্রার্থীও মাঠে রয়েছেন। উচাখিলা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের প্রধান বাধা শরিক দল জাপা’র প্রার্থী উপজেলা সহ-সভাপতি আনোয়ারুল হাসান খান সেলিম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ফেরদৌস কোরাইশি টিটু, আছেন বিদ্রোহী প্রার্থীও। তারুন্দিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হয়েছেন নতুন মুখ হাসান মাহমুদ রানা। তাঁর বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছেন ৮জন বিদ্রোহী প্রার্থী। বড়হিত ইউনিয়ন ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ জালাল। ওই ইউনিয়নে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী ৩জন, আছে স্বতন্ত্রও।
উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম বুলবুল জানান, বিদ্রোহী প্রার্থী ও মদদ দাতা হিসেবে দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৪১জনকে বহিস্কার করা হয়েছে।