সোমবার, ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ২৭শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

আজ ৯ ডিসেম্বর পূর্বধলা ও শ্যামগঞ্জ মুক্ত দিবস

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২০
||
  • প্রকাশিত সময় : ডিসেম্বর, ৯, ২০২০, ১১:৫৭ পূর্বাহ্ণ

প্রধান প্রতিবেদক :
আজ ৯ ডিসেম্বর পূর্বধলা ও শ্যামগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলা ও শ্যামগঞ্জ এলাকা শত্রু মুক্ত হয়। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী জনতার যৌথ প্রতিরোধের মূখে পাকহানাদার বাহিনী ৮ ডিসেম্বর পূর্বধলা থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

পর দিন ৯ ডিসেম্বর সকালে আবারো হানাদার বাহিনী জারিয়া-ময়মনসিংহ রেলপথে ট্রেন যোগে গৌরীপুর থেকে পূর্বধলা প্রবেশ করতে চাইলে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিপাগল জনতার তীব্র আক্রমন ও প্রতিরোধের মূখে পিছু হটতে বাধ্য হয়। এসময় পিছুহটা পাকসেনারা পূর্বধলা উপজেলার পাবই রেল সেতুটি মাইন বিস্ফোরনে ধ্বংস করে যায়।

এদিকে বিজয়ের ঠিক আগ মুহুর্তে ৮ ডিসেম্বর একদল পাকিস্তানি সৈন্যের ব্রাশফায়ারে শ্যামগঞ্জে নির্মমভাবে শহীদ হন তৎকালীন ইপিআর হাবিলদার সুধীর বড়ুয়া। ইপিআর এর সুধীর বড়ুয়া তার দলবল নিয়ে শ্যামগঞ্জ ডাকবাংলায় রাত কাটানোর জন্য চলে আসতে থাকেন এবং সন্ধ্যায় শ্যামগঞ্জ বাজারের পূর্বপাশে অবস্থানকারী এবং রেকি করে এগিয়ে আসা পাক সেনাদের সঙ্গে শ্যামগঞ্জ পশ্চিম বাজারের পল্লী চিকিৎসালয়ের সামনে মুখোমুখি হয়ে পড়েন এ সময় পাক সেনাদের সঙ্গে থাকা কয়েকজন রাজাকার জয় বাংলা শ্লোগান দিলে তাদেরকে বন্ধু মনে করে সুধীর বড়ুয়াও জয় বাংলা শ্লোগান দেন। একই সময় পাকসেনাদের মেশিনগানের ব্রাশফায়ারে সূধীর বড়ুয়ার দেহটি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এ সময় তার দু’জন সাথীও আহত হন।

পরদিন ৯ ডিসেম্বর সকালে ভারতীয় বাহিনীর মেজর প্রিথ সিং, ক্যাপ্টেন মূরারী, ক্যাপ্টেন বালজিত সিং, ক্যাপ্টেন চোপড়া সহ ভারতীয় সেনা সদস্যদের উপস্থিতিতে শ্যামগঞ্জ রেলওয়ে মাঠের উত্তর পাশে সম্পূর্ন্ন সামরিক কায়দায় শহীদ সূধীর বড়ুয়াকে সমাহিত করা হয়। পরে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায় তার স্মৃতিতে একটি স্মৃতি সৌধ নির্মান করা হয়। প্রতিবছর ২১ ফেব্রয়ারী, ২৬শে মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বর স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা তার স্মৃতি সৌধে ফুল দিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

বর্তমানে সঠিক রক্ষনা বেক্ষনের অভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধা সুধীর বড়ুয়ার সমাধির চারপাশে গড়ে উঠেছে দোকান পাট এবং ময়লা আবরজনার স্তুপ। পূর্বধলার ওই যুদ্ধই ছিল একাত্তরের রণাঙ্গনের নেত্রকোনা জেলার শেষ যুদ্ধ। পূর্বধলা উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নিজাম উদ্দিন জানান, দিবসটি উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে পতাকা উত্তোলন, পুস্পস্তবক অর্পন বিজয় র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। তবে এবার শ্যামগঞ্জে কোন কর্মসূচী নেই।

টি.কে ওয়েভ-ইন