বৃহস্পতিবার, ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

অস্তিত্বের সংকট বনাম উত্তরণ : আল ইমরান মুক্তা

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ২ মে, ২০২০
||
  • প্রকাশিত সময় : মে, ২, ২০২০, ১০:৫২ অপরাহ্ণ

অস্তিত্বের সংকট বনাম উত্তরণ:

মানবাত্মার সংগ্রাম ইন্তেকালের পূর্বে শেষ হবার নয়। দ্বন্দ্বের অপরদিকে সংঘাতের সমাবেশ। আর সংঘাতের অন্তরালে অনৈক্যের নিরবিচ্ছিন্ন অবস্থান। জীবন বিরামহীন অভিযাত্রার নাম। গতিময় তার পথ-পরিক্রমা। তারপরও মাঝে মাঝে থামতে হয়। পৃথিবীর যা কিছু সর্বোৎকৃষ্ট তা আমাদের চাই। এমন মনোবৃত্তি জীবনকে বিষাদে পরিপুর্ণ করতে পারে। ত্যাগ করা শিখতে হয়। এজন্য পরিত্যাগ করার অনুভূতিকে সক্রিয় রাখা চাই। তুমি পরাজিত হও। কিন্তু নিঃশেষ হয়ে যেয়ো না। জীবনের অন্তিমসময়েও সততার পথ পরিহার করো না। যোগ্য ও অযোগ্যের বিচার করা খুব কঠিন ব্যপার। আর চিরদিন তা কঠিনেই রয়ে যাবে। আমরা যাদের এলিট বলি। সমাজের মাথা রূপে জ্ঞান করি, তাদের বিচারবুদ্ধি সর্বোত্তম তা ভাবার কোন কারন নেই। সমাজ পরিচালনার সূত্র তো ভিন্ন কথা বলে। অপ্রিয় হলেও সত্য, সংগঠিত কম জনগোষ্ঠী দ্বারা অসংগঠিত বেশি জনগোষ্ঠী নিয়ন্ত্রিত হয়। দূর্বৃত্তের কবলে পড়ে সমাজের শুভাগমন বিতাড়িত হয়। তখন সবলের অত্যাচার দুর্বলের আশা-আকাঙ্ক্ষার ইতি ঘটায়। যে সমাজের মানুষ অন্যজনকে অসম্মান করার জন্য ব্যস্থ, তাদের কে কেউ কখনও হৃদয় থেকে সম্মান করতে পারেনা। শুধু মাত্র লোকদেখানো সস্তা সম্মান তাদের ভাগ্যফল হিসেবে নির্ধারিত হয়। কোন রাষ্ট্রের শাসন ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ নির্মাণে কিছু প্রতিষ্টানে ভূমিকা অগ্রগণ্য। নির্বাচন কমিশন তার মধ্যে অন্যতম। প্রত্যেকটি প্রতিষ্টানের নিজস্ব সত্তা আছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের মত অতি প্রয়োজনীয় প্রতিষ্টান যখন অস্তিত্বের সংকটে পড়ে, তখন শাসনবিধি টালমাটাল হয়ে পড়ে। যার ফলে শাসনকর্তার প্রবঞ্চনা সীমা ছাড়ায়। অপারগতা আড়াল করতে রাষ্ট্রনায়ক প্রতিজ্ঞাভঙ্গ করে। যার ফলে ক্ষমতার অপপ্রয়োগ দুর্দম্য গতিময়তা লাভ করে। নির্ভরতা বিপন্ন! এতো দেখি, শুভংকরের ফাঁকির সমতুল্য। ক্ষমতায় ঠিকে থাকা যেখানে সাফল্য, সেখানে ন্যায়অন্যায় উপেক্ষিত বাস্তবতা। যখন সময়ের মানদণ্ডে অন্যায় প্রবলবেগে অবর্তিত হয়। তখন সত্তার নিমজ্জিত রূপ নির্বাক পথিকের হাতকড়ায় পরিণত হয়। তারপর ন্যাবিচার পথভ্রষ্ট হয়। বাচবিচার না করে লাগামহীন তেলতোয়াজ প্রচলন, সমাজকে কলুশিত করে। এই প্রেক্ষাপটে মানুষের মনোবল নষ্ট হয়ে যায়। মানুষ প্রতিবাদ করতে ভুলে যায়। তাই অপকর্ম ঘূর্ণিপাকে প্রবাহিত হয়। এভাবে আর কত কাল চলবে? সবক্ষেত্র সিদ্ধান্ত বদলের খেলা চলে। প্রতিটি মুহূর্তে আবহাওয়ার যেমন রুপবদলায়। ভাবনার আকাশেও প্রতিনিয়ত পরিবর্তন লক্ষ্যকরা যায়। মানুষ স্বপ্ন দেখে। স্বপ্ন মানুষকে বাচতে শক্তি যোগায়। স্বপ্ন ভেঙ্গে যাওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। এটা সহজে মেনে নেওয়ার জন্য অনেক শক্তিবল প্রয়োজন।মানুষের জীবনে জোয়ার ভাটা আসবে । তাই আমাদের থেমে গেলে চলবে না। তরুন আর তারুণ্য এক বিষয় নয়। বৃদ্ধের মধ্যেও তারুণ্য থাকতে পারে। আবার তরুণদের মাঝেও বার্ধক্য ভর করতে পারে। মনের শক্তি তো সীমাহীন। ভয়কে জয় করার জন্য পারবো কথাটি বলতে পারাটা সাফল্যের সোপান স্বরূপ কাজ করে। এটি আত্মবিশ্বাস বহুগুণ বৃদ্ধকারক । আর সততার সাথে কাজ করা আবশ্যক। তবেই জীবনযাত্রার কাক্ষিত সফলতা আসবে। আর এই সফলতা সমাজ, রাষ্ট্রের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে।

মোঃ আল ইমরান মুক্তা,

শিক্ষানবিশ আইনজীবী, জর্জকোর্ট, ময়মনসিংহ ও সদস্য, অন্যচিত্র উন্নয়ন সংস্থা৷ ইমেইল : imran@onnochitra.org