আজ শনিবার ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম:
গৌরীপুরে কৃষকের এসআরআই শস্য কর্তন উৎসবে উৎফুল্ল কৃষাণ-কৃষাণীরা! একুশে পদকপ্রাপ্ত সাহিত্যিক আসকার ইবনে শাইখের আজ ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী তারাকান্দায় একমাত্র রেলস্টেশন বন্ধ ‌, যাত্রী দুর্ভোগ, ক্ষতি হচ্ছে রেলওয়ে সম্পদ তারাকান্দায়এলজিইডি’র একাধিক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে পাল্টে যাচ্ছে দৃশ্যপট মোফাজ্জলকে বিজয়ী করতে এলাকাবাসীর অঙ্গিকার রোগীর সেবায় থাকে খোদার সন্তুষ্টি গৌরীপুরে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জহিরুল হুদা লিটনের ব্যাপক গণসংযোগ গৌরীপুর পৌর আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম আর নেই! মেহেদির রং মুছতে না মুছতেই লা*শ হলো নববধূ সাদিয়া গৌরীপুরে এসডিএফের উদ্যোগে স্টেক হোল্ডারদের কর্মশালা
তাসাদদুল করিম || ওয়েব ইনচার্জ, দৈনিক বাহাদুর
  • প্রকাশিত সময় : জানুয়ারি, ১৮, ২০২৩, ৮:৪২ অপরাহ্ণ




গৌরীপুরে চারণ সাংবাদিক মোনাজাত উদ্দিনের ৭৮তম জন্মবার্ষিকী উদযাপিত

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে যুগান্তর স্বজন সমাবেশের উদ্যোগে বুধবার (১৮ জানুয়ারি/২০২৩) একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক মোনাজাত উদ্দিনের ৭৮তম জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষে শোভাযাত্রা, কেককাটা, ‘চারণ সাংবাদিকতা ও আজকের সংবাপত্রে মোনাজাত উদ্দিন’ শীর্ষক আলোচনা, সংবাদ লেখা প্রতিযোগিতা, পুরস্কার বিতরণ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা স্বজনের সভাপতি মো. এমদাদুল হক। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সেলিম আল রাজ। বক্তব্য রাখেন উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক ফুটবলার মোয়াজ্জেম হোসেন, চাঁদের হাট অগ্রদূত শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল মোমেনীন, দৈনিক আজকালের খবরের গৌরীপুর প্রতিনিধি মোস্তাফিজুর রহমান বুরহান, গৌরীপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর শিউলী চৌধুরী, রামগোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মালা বেগম, স্বজন সমাবেশের সহসভাপতি নাদিরা জামান পান্না, শামীমা খানম মীনা, রমজান আলী মুক্তি, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা শামছুন্নাহার মুক্তা, কবি অনামিকা সরকার, লুৎফা রূপা, স্বজন আব্দুস সালাম, তাসাদদুল করিম, শেখ নিরব মিয়া, শামীম আনোয়ার, রমজানুর আহমেদ নাজিম, মো. জিহাদ, সায়েফ আহমেদ, আমিনুল ইসলাম খান তৈমুর, ইয়াছিন আরাফাত, মো. নেয়ামত উল্লাহ, মো. এহসানুল হক জারিফ প্রমুখ।

১৯৪৫ সালের ১৮ জানুয়ারি রংপুর শহরে তার জন্ম। মোনাজাত উদ্দিন-এর সাংবাদিকতা শুরু ১৯৬৬ সালে তিনি দৈনিক আজাদ পত্রিকা দিয়ে। এরপর ১৯৭২ সালের মার্চে স্বাধীন চিন্তা, বিশ্বাস আর আদর্শের ভিত্তিতে প্রকাশ করেন ‘দৈনিক রংপুর’। মূলত তিনি দৈনিক সংবাদে পথ থেকে পথে ধারাবাহিক রিপোর্টের জন্য খ্যাতি লাভ করেন। ১৯৭৬ সালে দৈনিক সংবাদে যোগ দেয়ার পর থেকে তিনি মিলে মিশে একাকার হয়ে গিয়েছিলেন পত্রিকাটির সাথে। বিশ বছর একটানা ‘সংবাদ’ এ কাজ করার পরে ১৯৯৫ সালের ২৪ এপ্রিল দৈনিক জনকণ্ঠে সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে যোগদান করেন । ১৯৮৪ সালে ‘সাংবাদিক জহুর হোসেন চৌধুরী স্মৃতি পদক’, দৈনিক সংবাদে প্রকাশিত ‘মানুষ ও সমাজ’ প্রতিবেদনের জন্য সালে ফিলিপস্ পুরস্কার, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স পুরস্কার, ১৯৯৫ সালে অশোকা ফেলোশিপ লাভ করেন। ১৯৯৭ সালে তিনি রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পদক একুশে পদক (মরনোত্তর) লাভ করেন।

পথে প্রান্তরের অনুসন্ধানে গিয়ে জীবনেরও যবনিকা ঘটে চারণ সাংবাদিকের। ১৯৯৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর ফুলছড়ি থানাধীন যমুনা নদীতে কালাসোনার ড্রেজিং পয়েন্টে দুটি নৌকাডুবির তথ্যানুসন্ধান করতে অসুস্থ শরীর নিয়ে যাত্রা শুরু করেন গাইবান্ধায়। যাওয়ার পথে ‘শেরেবাংলা’ নামক ফেরিতে তিনি দুর্ঘটনায় পড়েন। ফেরির ছাদ থেকে হঠাৎ করেই পানিতে পড়ে যান তিনি। স্থানীয় নৌকার মাঝিরা তাকে তাৎক্ষনিকভাবে উদ্ধার করতে পারলেও তাকে বাঁচানো যায়নি। তবু তিনি তার কর্মের মাধ্যমেই অমর হয়ে আছেন।
মোনাজাত উদ্দিন চারণ সাংবাদিক হিসেবে যিনি পরিচিতি পেয়েছিলেন। গ্রামে-গঞ্জে, পথে পথে ঘুরে খবরের পেছনে থাকা খবর সংগ্রহ করে লিখতেন যিনি। এটাই যার নেশায় রূপ নিয়েছিল। যা ছিল দেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে এক নতুন মাত্রা।
সাংবাদিকতার নেশায় তিনি চষে বেড়িয়েছেন উত্তরবঙ্গের মাঠের পর মাঠ, গ্রাম থেকে গ্রামান্তর। কথা বলেছেন, একেবারে শেকড় থেকে তিনি সৃষ্টি করেছেন সংবাদ ভাষ্য, প্রতিবেদন, ফিচার। তার প্রতিটি প্রতিবেদনই ছিল গ্রাম বাংলার অকৃত্রিম চিত্র আর মানুষ ও সমাজের বাস্তব মুখচ্ছবি। জীবদ্দশায় তিনি নিজেকে ‘তৃণমূল মানুষের সংবাদকর্মী’ হিসাবে দাবি করতেন।
‘মোনাজাত উদ্দিনের সংবাদ সংগ্রহের স্টাইল ও নিষ্ঠা জড়িয়ে গিয়েছিল; কোথাও ভঙ্গী দিয়ে চোখ ভোলানোর আয়োজন ছিল না। অনুসন্ধানী প্রতিবেদন, ফলোআপ প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি অনন্যতার স্বাক্ষর রেখেছেন। গ্রাম বাংলার জনজীবনের একটা নিখুঁত তথ্য নির্ভর এবং একই সঙ্গে সংবেদনশীল দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা ও চিত্ররূপময় বর্ণনা এবং চিত্র তিনি দেশবাসীকে উপহার দিয়েছেন খবরের মাধ্যমে।’ তার সম্পর্কে এই মন্তব্য প্রখ্যাত সাংবাদিক ও কলামিস্ট সন্তোষ গুপ্ত’র।

সাংবাদিকতার পাশাপাশি সমাজসেবামূলক কাজেও অংশগ্রহণ ছিল তার। গ্রামীণ এলাকায় মানুষের কুসংস্কার, অন্ধতা দূর করতে তিনি তরুণদের নিয়ে সংগঠন করেছেন। কখনো তাদের নিয়ে নাটক করিয়েছেন, উৎসাহ দিয়েছেন সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলতে। তিনি নিজেও ছিলেন একজন গীতিকার ও নাট্যকার। রংপুর বেতারে নিয়মিত কাজ করতেন। তার একাধিক নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে। যদিও চারুশিল্পে তার তেমন কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল না কিন্তু নিজের অধ্যাবসায়ের ফলে তিনি অনেক বই ও ছোট কাগজের প্রচ্ছদ করেছেন। ছিলেন দক্ষ ফটোগ্রাফারও।
রিপোর্টিং ছাড়াও গল্প, কবিতা, ছড়া ও নাটক রচনায় তার দক্ষতা ছিল। মৃত্যুর আগে ৯টি ও পরে ২টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে তার। পাশাপাশি লিখেছেন জীবনের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ নানা ঘটনা। তার বইগুলোর মধ্যে রয়েছে-‘পথ থেকে পথে’, ‘সংবাদ নেপথ্য’, ‘কানসোনার মুখ’, ‘পায়রাবন্দের শেকড় সংবাদ’, ‘নিজস্ব রিপোর্ট’, ‘ছোট ছোট গল্প’, ‘অনুসন্ধানী রিপোর্ট’: গ্রামীণ পর্যায়’, ‘চিলমারীর এক যুগ’, ‘শাহ আলম ও মজিবরের কাহিনী’, ‘লক্ষীটারী’, ‘কাগজের মানুষেরা’। এ ছাড়াও, মাসিক মোহাম্মদি, দৈনিক আজাদ, সওগাত ও অন্যান্য পত্র-পত্রিকায় তাঁর বেশ কয়েকটি গল্প প্রকাশিত হয়। নাটকের একমাত্র প্রকাশিত বই ‘রাজা কাহিনী’। তিনি প্রচুর ছড়াও লিখেছেন।




Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও খবর




অনলাইন জরিপ

জাতিসংঘের বিশেষ দূত এলিস ক্রুজ বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল সব মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। আপনিও কি তা-ই মনে করেন?

View Results

Loading ... Loading ...

পুরনো সংখ্যার নিউজ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১