শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪ -|- ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০-বসন্তকাল -|- ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

ভাবলেই কান্না আসে-মোঃ আল ইমরান মুক্তা

প্রকাশিত হয়েছে- রবিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২০
||
  • প্রকাশিত সময় : এপ্রিল, ২৬, ২০২০, ১২:২৬ পূর্বাহ্ণ

পৃথিবীটা জীবন-মৃত্যুর খেলাঘর। মানুষ মাত্রই মৃত্যুর পেয়ালা পান করতে হয়। এই ভুবনে কত মানুষের আসা যাওয়া চলে। যুগযুগান্তর অল্পসংখ্যক কালজয়ী মানুষের জ্ঞান ও মহিমায় বিশ্বলোক আলোকিত হয়। তাঁরা মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় চিরদিন অম্লান হয়ে বেচে থাকে। এই তো একদিন আগের কথা! আমাদের পরম শ্রেদ্ধেয় শিক্ষক, প্রিয় ব্যক্তিত্ব ক্যাপ্টেন প্রফেসর (অবঃ) কাজী এম এ মোনায়েম স্যার পরলোকগত হয়েছেন।

প্রতিবেশী হিসেবে স্যারকে ছোটবেলা থেকেই চিনতাম। ২০০৪ সালে গৌরীপুর সরকারি কলেজ বিএনসিসি প্লাটুনে ভর্তির কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে ছিল। তখন বন্ধু বিল্লালকে নিয়ে মোনায়েম স্যারের সাথে দেখা করি। স্যার আমাকে বিএনসিসিতে ভর্তির জন্য সুপারিশ করেন। স্যারের জন্যই বিএনসিসিতে ভর্তি হবার সুযোগ পাই।

একজন (বিটিএফও) অফিসার হিসাবে মোনায়েম স্যারের দক্ষতা ছিল অতুলনীয়। বিএনসিসির সুবাদে স্যারের সাথে বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করার সুযোগ হয়েছিল। বেশিরভাগ সময়ে ক্যাম্পে খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও খাবার ব্যবস্থাপনায় স্যারে ভূমিকা ছিল অপরিসীম। স্যার খুব রসিক মানুষ ছিলেন। আমাদেরকে প্রায় সময় আমোদপ্রমোদে ব্যস্ত রাখতেন। একজন বাংলা শিক্ষক হিসেবে তিনি সবার কাছে সমাদৃত ছিলেন। স্যারের কি অপরূপ কথোপকথন! প্রতিনিয়ত স্যারের সাথে দেখা হতো। স্যারের সাথে দেখা হলে, কখনও কথা না বলে যেতে পারতাম না। স্যার খুব ভ্রমণ প্রিয় ছিলেন। অনেক সময় বলতেন, চলো মিয়া ক্যাডেটদের নিয়ে কোথাও বনভোজ করে আসি।

এছাড়া স্যারের সাথে গৌরীপুর যুগান্তর স্বজন সমাবেশ, অন্যচিত্র উন্নয়ন সংস্থা, এনটিটি শিক্ষা পরিবার নামক সুপরিচিত কয়কটি প্রতিষ্টানে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। স্যার অত্যন্ত অতিথি পরায়ণ ছিলেন। এই তো গতবছর, স্যারের নিমন্ত্রণে এনটিটি শিক্ষা পরিবারের পরিচালকদের সাথে স্যারের কলাবাগানস্থ বাস ভবনে একসাথে ইফতার করেছিলাম। তাছাড়া গতবছর এনটিটি শিক্ষাপরিবার কর্তৃক অভিভাবক সমাবেশে স্যার প্রধান অতিথি ছিলেন। স্যার একজন কর্মবীর, স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন। আমাদের সবসময় স্বপ্ন দেখাতেন। স্যার বলতেন, তোমরা গৌরীপুরে শিক্ষা ক্ষেত্রে কিছু করো। এনটিটি রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল শুরু করার জন্য বারবার তাগিদ দিতেন। আরও কত শত স্মৃতি! ভাবলেই কান্না আসে।

স্যার, মাফ করবেন। আপনার জন্য আমরা কিছুই করতে পারিনি। ভেবেছিলাম বিএনসিসি থেকে গার্ড অব অনার দিবো। কিন্তু নিয়তির পরিহাস! সময় অসময়ে জড়িয়ে আছে। তাই ব্যর্থতার গ্লানি মুখবোজে সইতে হয়েছে। প্রিয় স্যার, পরপারে ভালো থাকবেন। মহান আল্লাহ্ আপনাকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসীব করুক। আমীন।

মোঃ আল ইমরান মুক্তা
প্রধান শিক্ষক, এনটিটি রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল ও
সদস্য, অন্যচিত্র উন্নয়ন সংস্থা
১৩/ক, গুলকিবাড়ি, ময়মনসিংহ।
ইমেইল : Imran@onnochitra.org