প্রস্তুত হচ্ছে ক্লাস রুম, মাঠের আগাছাও পরিস্কার করা হচ্ছে। শিক্ষকদের পাশাপাশি স্বঃস্ফূর্তভাবে এ কাজে এগিয়ে আসছে বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরাও। ময়মনসিংহের গৌরীপুরে স্কুল খোলার খবরে এলাকায় বইছে আনন্দের বন্যা।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মনিকা পারভীন জানান, উপজেলার ১৭৭টি সরকারি, ৭২টি কিন্ডারগার্টেন, ৬টি বেসরকারি ও ৮টি এনজিও পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন পর শিক্ষার্থীদের বরণে ও সরকারি নির্দেশনা মেনে পাঠ্য কার্যক্রম পরিচালনা করার প্রস্তুতি নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাইফুল আলম জানান, এখন পর্যন্ত কোনো অফিস আদেশ পাওয়া যায়নি। তারপরেও সংবাদমাধ্যমের খবরে উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৪টি, স্কুল এন্ড কলেজ ২টি, কলেজ ৩টি, ও ১৬টি মাদরাসায় মাদরাসায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস নেয়ার জন্য শ্রেণিকক্ষ প্রস্তুত করা হচ্ছে।
এদিকে স্কুল খোলার খবরে উপজেলার ভাংনামারী ইউনিয়নের ভাটিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ধুয়েমুছে ক্লাস রুম সপ্রণোদিতভাবে পরিস্কার করছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফয়জুন নাহার জানান, শিক্ষার্থীদের নিয়মিত হাত ধোয়ার জন্য ভ্যাসিন, সাবান ও মাস্ক ব্যবহারের জন্য পয়েন্ট তৈরি করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি রক্ষার জন্য প্রত্যেকটি ক্লাসরুমের সামনে করোনা ইউনিট করা হবে। ৩য় শ্রেণির আফরোজা খাতুন জানায়, স্কুল খোলা হবে শোনে খুব আনন্দ লাগছে। বোকাইনগর ইউনিয়নের গোবিন্দনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. কামাল হোসেন জানান, নিয়মিত হাতধোয়ার জন্য হ্যান্ডস্যানিটাইজার, জ¦র মাপার যন্ত্রসহ প্রাথমিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী মজুদ করা হয়েছে। প্রত্যেকটি শ্রেণিকক্ষ ও বিদ্যালয়ের বেঞ্চ-টেবিল পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আফজাল হোসেন জানান, আমরা খুব খুশি। তাই স্কুল দেখতে আসছি।
অপরদিকে গৌরীপুর পৌরসভার গোলকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি শ্রেণিকক্ষ শনিবার পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। নতুনভাবে সুসজ্জিত করার হয়েছে বঙ্গবন্ধু কর্ণারও। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জেবুন নেছা জানান, দীর্ঘদিন পর শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষের বরণ করার জন্য আমরা শতভাগ প্রস্তুত। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুমনা সফিনাজ লাবণী জানান, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেরও করোনাকালীন সময়ে পাঠকার্যক্রমে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতন করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু কর্ণার, প্রাক-প্রাথমিক কক্ষ ও শিক্ষার্থীদের কক্ষ সুসজ্জিত করা হয়েছে সতিষা, শেখলেবু স্মৃতি, গোলকপুর, সুরযবালা, জাগরণী ও গৌরীপুর পৌর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও। আব্দুল ওয়াহেদ মেমোরিয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. ফারুকুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষ শুধু নয়, বিদ্যালয়ের মাঠ ও ভবনের চারপাশও পরিস্কার করা হয়েছে। অভিভাবক মো. মফিজ উদ্দিন জানান, আমাদের ছেলেমেয়েদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। স্কুল খুলবে শোনে ভালো লাগছে, ওরা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ। দ্রুত পাঠদান কার্যক্রম চালু করা উচিত।
এদিকে রামগোপালপুর ইউনিয়নের নওয়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান জানান, বিদ্যালয়ের রঙ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বরণ করার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য করণীয় তালিকাও প্রস্তুত করা হয়েছে। গৌরীপুর ইসলামাবাদ সিনিয়র মাদরাসার উপাধ্যক্ষ মো. এমদাদুল হক জানান, আমরা সরকারি নির্দেশনা পাওয়ার অপেক্ষায় আছি। শ্রেণিকক্ষ প্রস্তুত করা হচ্ছে।