শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সব হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা সম্ভব?

প্রকাশিত হয়েছে- মঙ্গলবার, ১৭ মার্চ, ২০২০
||
  • প্রকাশিত সময় : মার্চ, ১৭, ২০২০, ৮:০৯ অপরাহ্ণ

বাহাদুর ডেস্ক :

বিশ্বায়নের এই যুগে এক দেশ আরেক দেশ থেকে খুব একটা দূরে নয়। মুক্তবাজার অর্থনীতি অনুসরণে এগিয়ে না গেলে উন্নতি সম্ভব নয়।

এক সময় পাট ছিল আমাদের মূল বৈদেশিক অর্থের মূল, এরপর আসলো গার্মেন্টস সেক্টর। সেটি অতিক্রম করছে আমাদের বিদেশে অবস্থানরত ভাইদের পাঠানো অর্থ। তারা আমাদের রেমিটেন্স যোদ্ধা।

২০১৯ সালের শেষ দিকে আমরা দেখলাম, বিশ্ব অর্থনীতির পরাশক্তি বৃহৎ চীনে অজানা এক ভাইরাসের দ্বারা অসংখ্য মানুষ আক্রান্ত হতে থাকে।

RNA virus হিসাবে চিহ্নিত করা সম্ভব হয় যা করোনা প্রজাতির অংশ। এই পরিবারের ভাইরাস পূর্বেও পৃথিবীর কয়েক দেশ মহামারী ঘটিয়েছিল যার একটি ছিল MRAS এবং SARS. ২০২০ সালের প্রথম দিকে নতুন সৃষ্ট ভাইরাসে নাম দেওয়া হয় COVID-2019.

রোগের নাম দাঁড়ায় SARS-CoV 19

শ্বাসনালীতে প্রদাহ সৃষ্টির মাধ্যমে মানব দেহে উপসর্গের তৈরি করে বলে এমন নামকরণ।

সাধারণত ভাইরাস আমাদের শরীরে প্রবেশ করলে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে যায় যাকে বলে এন্টিবডি।

এই এন্টিবডি দিয়েই পরবর্তীতে একে প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। তবে বর্তমান করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এখনও কোনও এন্টিবডি তৈরি হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি তাই একবার আক্রান্ত হলে যে পুনরায় হবেনা তার কোনও নিশ্চয়তা নেই।

প্রথম দিকে সারস বা মারসের মত মৃত্যুর শঙ্কা তৈরি না করলেও দিন যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা পরিবর্তিত হতে থাকে। মৃত্যুর মিছিল লম্বা হতে থাকে। বিশেষ করে যখন এটি নতুন কোনও দেশে সংক্রামিত হয় তখন। এর কারণ এর লক্ষণ অন্য ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বরের মতই।

সবার ক্ষেত্রে যে এটি মৃত্যুর শঙ্কা তৈরি করে তা নয় তার কারণ একশর মধ্যে ৯৪ জনই সুস্থ হচ্ছেন। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর নির্ভর করছে আসলে কার ক্ষেত্রে এটি কিরূপ প্রভাব ফেলবে।

একে প্রতিরোধ করার জন্য চীনে যা করেছিল তা হল পৃথকীকরণ, সামাজিক দূরত্ব এবং সংক্রামিত জনগোষ্ঠীর বিচ্ছিন্নতা তৈরি। এমনটা করে ২০০২-০৩ সালে সিঙ্গাপুর এবং হংকং সারসের প্রাদুর্ভাবের সময় সফল হয়েছিল।

প্রশ্ন আসতে পারে কেন এই পৃথকীকরণ? আসলে কোভিড-২০১৯ এ আক্রান্ত রোগী কখন রোগ ছড়ানো শুরু করে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

আক্রান্ত সময়ের পুরো অংশ জুড়েই হয়ত রোগ ছড়াতে পারে তাই ১৪ দিন ধরে চলে এই পৃথকীকরণ।

পৃথকীকরণ করার জন্য হাসপাতালের প্রয়োজন নেই। এই রোগে আক্রান্ত ৮০% একেবারেই স্বাভাবিক সুস্থতা অর্জন করেন, ১৪% মানুষের কিছু জটিলতা তৈরি হয় আর ৬% মানুষ বেশি খারাপ হয়ে যায়।

তাই সর্দি, কাশি হলেই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ঝুঁকিমুক্ত থাকার চিন্তা করার প্রয়োজন নেই।

গতবার ডেঙ্গু মৌসুমে দেখা গিয়েছিল আশঙ্কা থেকে অনেকেই বাসা-বাড়িতে যেতে চাননি পরিপূর্ণ সুস্থতা আসা পর্যন্ত। এর দ্বারা দেখা যায় জটিল রোগীর ব্যবস্থপনায় ত্রুটি থেকে যায়।

স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে কোথায় কোথায় এই রোগের চিকিৎসা চলে।

দেশজুড়ে চালানো আসলেই সম্ভব নয় নানা কারণে। অন্যতম কারণগুলো হলো-

১. সংক্রমণ প্রতিহত করার জন্য যেসব উপকরণ রয়েছে তার অপর্যাপ্ততা রয়েছে সমগ্র পৃথিবী জুড়ে।

২. এই রোগ নির্ণয় অন্য যেকোনো ভাইরাসের মত নয়। RT-PCR এর মাধ্যমে এটি নির্ণয় করা লাগে। এবং ল্যাব থাকা প্রয়োজন লেবেল-৩ পর্যায়ের ন্যূনতম। যেটি IEDCR এই রয়েছে।

৩. আমরা সবাই জানি ইবোলা রোগের প্রাদুর্ভাবের সময় একে নিয়ন্ত্রণ করা দুরূহ হয়ে গিয়েছিল স্বাস্থ্য কর্মীদের মৃত্যুর কারণে। ইতিমধ্যে কোভিড-২০১৯ এও বেশ কয়েকজন চিকিৎসক মৃত্যুবরণ করেছেন পৃথিবীর নানা প্রান্তরে। তাই স্বাস্থ্যকর্মীদের দিকেও লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন।

টি.কে ওয়েভ-ইন