শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় তাই বাংলাদেশ পুলিশ স্বাধীনতা পদক পেয়েছে- শাহ আবিদ হোসেন

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ২ মার্চ, ২০২২
এম. এ আজিজ || প্রধান প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ।
  • প্রকাশিত সময় : মার্চ, ২, ২০২২, ৮:৫৮ অপরাহ্ণ

কর্তব্য পালনকালে নিহত পুলিশ সদস্যদের স্মরণে পুলিশ মেমোরিয়াল ডে-২০২২ উপলক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি, সংবর্ধনা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ময়মনসিংহ রেঞ্জ পুলিশ কার্যালয়ের আয়োজনে মঙ্গলবার ময়মনসিংহ পুলিশ লাইন্সে এই সভা হয়।

রেঞ্জ ডিআইজি (ভারপ্রাপ্ত) অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ শাহ আবিদ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার মোঃ শফিকুর রেজা বিশ্বাস। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আহমার উজ্জামান। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফাল্গুনী নন্দীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট জহিরুল হক খোকা, মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পরিবারের সদস্য অনিমা দেবনাথ, জালাল উদ্দিন, নাজমুন নাহার রানী।

সভায় কর্তব্য পালনকালে নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারের উদ্দেশ্য বিভাগীয় কমিশনার বলেন, পরাধীনতা ও দেশের মানুষকে জুলুম, নির্যাতনের হাত থেকে মুক্ত করতে ১৯৭১ সালে অনেক পুলিশ সদস্য প্রাণ দিয়েছে। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে পুলিশ অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে জীবন দিয়েছে। কর্মক্ষম মানুষটি হারিয়ে আপনারা (নিহতদের পরিবার) অসহায়। আপনারা অসহায় নন, আপনাদের পিছনে সরকার রয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে ভারপ্রাপ্ত ডিআইজি শাহ আবিদ হোসেন বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামে পুলিশ সবার আগে বুক চিতিয়ে এগিয়ে গেছে। স্বাধীনতার ইতিহাসের সাথে রাজারবাগের ইতিহাস জড়িত। মুক্তিযুদ্ধে প্রায় ১৭শত পুলিশ সদস্য শহীদ হয়েছে। সেই পুলিশ বাহিনী অনেক পরে স্বাধীনতা পদক পেয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা যখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসেছেন ঠিক তখন বাংলাদেশ পুলিশ পদক পেয়েছে।

পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা জনগণের সেবায় নিয়োজিত রয়েছি। নিজের পরিবার ও সন্তানদের রেখে প্রতিদিন অপরের সেবার জন্য বের হই। এর চেয়ে বড় পাওনা আর কি হতে পারে। জাতির জনকের উদ্বৃতি দিয়ে তিনি আরো বলেন, তোমরা জনগণের পাশে থেকো। যাদের অর্থে আমাদের সংসার চলে, তাদের সেবা করুন। তাদের উপর কেউ যাতে অত্যাচার করতে না পারে। জাতির জনকের এই আহবান আমরা ভুলিনি। পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, আজকে আমাদের শপথ হোক, জীবন উৎসর্গ করে হলেও জাতির পিতার কাংখিত স্বপ্ন জঙ্গি, মাদক ও অপরাধমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলব। শহীদ পুলিশ সদস্যদের পরিবারের খোজ খবর নিতে পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতাল উন্নত হয়েছে। আপনাদের চিকিৎসা সেবা সহজ হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি জেলা পুলিশ হাসপাতাল থেকে পরিবারের অসুস্থ্যদের বিনামুল্যে ওষুধ সামগ্রী দেয়া হচ্ছে। জেলা পুলিশ সুপারের কাছে যাওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। এছাড়া কর্তব্যকালে নিহত পুলিশ সদস্যের পরিবার যাতে রেশন পায় তার জন্য সুপারিশ করবো। নিহত পুলিশ সদস্যে পরিবারের সন্তানদের যোগ্য করে তোলার আহবান জানিয়ে বলেন, নিজেদেরকে যোগ্য করে গড়ে তুলুন নিয়োগসহ সকল সুবিধা দেয়া হবে।
এর আগে স্বাগত বক্তব্যে পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান বলেন, স্বাধীনতা ও স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশ পুলিশের রক্তের বিনিময়ে আজকের এই বাংলাদেশ। শোক জানাতে নয়, প্রতি বছর নিহতদের সম্মানে এই আয়োজন। আমাদের কমিটমেন্ট জালাই করতে এসেছি। মন খারাপের কিছু নেই, আজ আমার এই আসনে আসার পিছনে আপনাদের নিহত সদস্যরা।

এর আগে পুলিশ লাইন্স, ময়মনসিংহে অবস্থিত চেতনা অম্লানে কর্তব্য পালনকালে নিহত পুলিশ সদস্যদের প্রতি প্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। সভার শুরুতে এক মিনিট নিরবতা পালনের মাধ্যমে কর্তব্য পালনকালে শহীদ পুলিশ সদস্যদের স্মরণ করা হয়।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রেঞ্জ অফিসের পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সৈয়দ হারুন অর রশিদ, পুলিশ সুপার (অপরাধ ব্যবস্থাপনা) মোঃ ফারুক হোসেন সহ ময়মনসিংহ রেঞ্জ ও জেলা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির নেতৃবৃন্দ ও নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারবর্গ। পরে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী ৯১জন পুলিশ সদস্যদের পরিবারবর্গকে ক্রেস্ট ও উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়।