গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি ঃ
কালচে বিবর্ণ শহিদ মিনার। উপরে চলছে সরকারি বহুতল মার্টেকের জন্য স্ল্যাব নির্মাণ। শহিদ মিনারে উপরে নিয়মিত চলে সুরকি-পাথর আর সিমেন্ট মিশ্রণের ঢালাই কাজ। আরেক পাশে অঘোষিত ডাস্টবিন। মাতৃভাষা শহিদদের সম্মানে ও মর্মবাণী পৌঁছে দেয়ার বদলে অসম্মান আষ্টেপৃষ্টে ধরেছে। ৬বছরেও ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় মিনারটির কাজ শেষ হয়নি! এ শহিদ মিনারটি আর্তনাদ করছে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সহনাটী ইউনিয়নের পাছার বাজারে।
এ শহিদ মিনারকে ঘিরে অনুষ্টিত হয় রাজনৈতিক নানা কর্মসূচীও। মহান শহিদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে রাজনৈতিক দল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন এখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শুধু তাই নয়, মহান বিজয় দিবস ও মহান স্বাধীনতা দিবসেও স্কুল-কলেজ, ক্লাব সংগঠন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন ছুটে আসে এখানে। সেই শ্রদ্ধার স্থানটি সারা বছর যেমন অরক্ষিত-তেমন অপরিচ্ছন্ন ও অবহেলায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পাছার বাজারের আজিজুল ইসলাম জানান, শনিবার ও মঙ্গলবার হাটের দিনে পুরো বাজারে আবর্জনাও ফেলা হয় এখানে। নির্মাণ প্রসঙ্গে সহনাটী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দুলাল আহাম্মেদ জানান, তিনি ব্যক্তিগত অর্থে শহিদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তিনি সমাপ্ত করে আসতে পারেননি। তবে এবার নির্বাচিত হলে দৃষ্টিনন্দন শহিদ মিনার তৈরি করা হবে।
তবে সহনাটী ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল মান্নান জানান, তিনি নির্বাচিত হওয়ার পরে ২০১৬সালের দিকে শহিদ মিনার নির্মাণ কাজ শুরু করেন। সরকারের কোন ফাণ্ড থেকে করা হয়েছিলো এই মুর্হূতে তিনি তা বলতে পারছেন না। অচিরেই কাজটি সমাপ্ত করা হবে। আবর্জনা ও স্ল্যাব নির্মাণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাজারের জন্য সরকারিভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজের ঠিকাদার উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা স্ল্যাব তৈরি করেছে। আবর্জনা ও স্ল্যাব আজকেই সরিয়ে নেয়া হবে। এ প্রসঙ্গে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা জানান, বিষয়টি দুঃখজনক ও দৃষ্টিকটু। আমার জানা ছিলো না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান মারুফ জানান, যদি এ ধরনের কিছু থাকে দ্রুত অপসারণসহ শহিদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষায় সর্বোচ্চ উদ্যোগ নেয়া হবে। অসমাপ্ত কাজটিও সম্পন্ন করা হবে।