বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

যৌতুকের বলি শশুর লাশ গৌরীপুরে দাফন : মেয়ের জামাতা ব্যাংক কর্মকর্তা পলাতক

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ২৪ মে, ২০২৩
প্রধান প্রতিবেদক || দৈনিক বাহাদুর
  • প্রকাশিত সময় : মে, ২৪, ২০২৩, ৫:০৮ অপরাহ্ণ

নেত্রকোণায় যৌতুকের বলি হলেন বাট্টা মিলন উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার মাস্টার (বাবুল মাস্টার)। নিহতের লাশ ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় মঙ্গলবার (২৩ মে/২০২৩) দুপুরে সিধলা ইউনিয়নের বেড়া গ্রামে পৌঁছে। এ সময় প্রিয় শিক্ষকের হত্যাকাÐের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবি জানান তাঁর শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। পরিবারের দাবি, যৌতুকের কারণে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

হত্যাকাÐের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ^াস দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোফাজ্জল হোসেন খান। তিনি বলেন, হত্যাকাÐে যারা জড়িত তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়ার জন্য এবং নিহতদের পরিবার যেন ন্যায় বিচার পায় সে জন্য আমরা কাজ করবো।

নিহতের মেয়ে সাবিকুন্নাহার সুইটি জানান, একই উপজেলার বালিয়াপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদিরের পুত্র এটিএম নাজমুস সাকলাইন অপুর সঙ্গে তার ১২ বছর পূর্বে বিয়ে হয়। তার নেত্রকোণা সদর উপজেলার নাগড়ায় স্বামী-স্ত্রী বসবাস করে আসছিল। তার স্বামী বর্তমানে কর্মসংস্থান ব্যাংকের কর্মকর্তা হিসেবে বারহাট্টা শাখায় কর্মরত। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের টাকা এনে দেয়ার জন্য চাপ দিতো। কয়েকবার টাকা এনেও দিয়েছি। কিন্তু এখন আবার টাকা চায়। সেই টাকার জন্যই বাবা-মাকে কৌশলে বাসায় ডেকে এনে মসল্লা ভাঙার শীল (পাথর) দিয়ে পিটিয়ে আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহত বাবুল মাস্টারের স্ত্রী হামিদা খাতুনও গুরুত্বর আহত অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি বলেন, তার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছে। তিনি এটিএম নাজমুস সাকলাইন অপু’র ফাঁসি দাবী করেন।

জানা যায়, শুক্রবার (১৯ মে ২৩) আব্দুল জব্বার মাস্টার (বাবুল মাস্টার) ও তার স্ত্রী হামিদা খাতুন নেত্রকোনা সদর নাগড়ায় মেয়ে সুইটির বাসায় যায়। রাতে খাবারের পরে সবাই ঘুমিয়ে যাওয়ার পর রাত ৩টায় মেয়ের জামাই এটিএম নাজমুস সাকলাইন অপু মসলা বাটা শিল দিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় তার মাথায় সজোরে আঘাত করে। এ সময় পাশে শুয়ে থাকা বাবুল মাস্টারের স্ত্রী হামিদা খাতুন চিৎকার করে উঠলে তাকেও শিল দিয়ে মাথায় আঘাত করে। চিৎকার শুনে মেয়ে সুইটি মা-বাবার রুমে এসে দেখে তারা দুজনেই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। পরে স্ত্রী সুইটিকেও মাথায় আঘাত করে। এ সময় তাদের ডাক চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন এসে তাদেরকে উদ্ধার করে নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত ডাক্তার গুরুতর অবস্থা দেখে তাদেরকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের পরামর্শে ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। দুইদিন আইসিওতে থাকার পরে ২২ মে দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মঙ্গলবার (২৩ মে/২০২৩) নিজ গ্রামে আছরের নামাজের পর জানাযা শেষে পারিবারিক কবরাস্থানে লাশ দাফন করা হয়।

এ ঘটনায় নিহত বাবুল মাস্টারের ছোট ভাই মো. আব্দুল খালেক বাদী হয়ে নেত্রকোনা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন নেত্রকোনা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ লুৎফুল হক। তিনি জানান, আসামীকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।