শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪ -|- ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০-বসন্তকাল -|- ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীদের রকেট আবিস্কারের দাবী

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
এম এ আজিজ || প্রধান প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ
  • প্রকাশিত সময় : ফেব্রুয়ারি, ৫, ২০২২, ১০:৩২ অপরাহ্ণ

মহাকাশে রকেট উড়াবে কিংবা মিসাইল বা রকেট লঞ্চার তৈরী করে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ মাথা তুলে দাঁড়াবে তা অনেকটা ছিল স্বপ্নের মত। সেই স্বপ্নকে প্রথমবারের মতো বাস্তবে রূপ দিতে যাচ্ছে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রাক্তন একদল শিক্ষার্থী। টানা চার বছর গবেষণা ও পরিশ্রমের পর ধুমকেতু-এক্সের ধুমকেতু-০.১ রকেট তৈরীর প্রজেক্টটি এখন উড্ডয়নের চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে এটি উড্ডয়নের সম্ভাবনা রয়েছে, যা এখন প্রশাসনিক অনুমতির অপেক্ষায়।
ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী রকেট আবিস্কারের দলনেতা নাহিয়ান আল রহমান অলি জানান, ছোট থেকে তার স্বপ্ন ছিল নতুন কিছু তৈরী করা। সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে ভর্তি হন ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। সেখান পড়া অবস্থায় রকেট তৈরীর চিন্তা আসে। তখন থেকেই রকেট তৈরীর বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে কাজ শুরু করেন। অর্থেও অভাবে কিছু দিনের মধ্যে থেমে যায় স্বপ্ন। ২০১৭ সালে স্নাতক শেষ করে পুনরায় দলের অন্যান্য সদস্যদের সহযোগীতায় ২০১৮ সালে আবার রকেট তৈরীর কাজে হাত দেয়। রকেটটির প্রথম ডিজাইন করা হয় তরল জ্বালানির। পরবর্তীতে জ্বালানী খরচ কমাতে ব্যবহার করা হয় সলিড ফুয়েল। পরে ডিজাইন পরিবর্তন করে ৪শ নিউটন ও ১শ ৫০ নিউটন থাস্টের ২টি ইঞ্জিনের ৬ ফুট ও ১২ ফুট উচ্চতার দুটি প্রোটোটাইপ রকেট তৈরী করে নাহিয়ানের দল। তার এ কাজে সহযোগিতা করেন আলফা সায়েন্স ল্যাবের একদল তরুন উদ্যমী প্রকৌশলী।
রকেট তৈরীর সাথে জড়িত ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থী নিয়ামুল ইসলাম বলেন, আলফা সায়েন্স ল্যাবের ২০জন উদ্যমী প্রকৌশলীর সমন্বয়ে দলটির ইচ্ছা এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আগামীতে দেশের মাটি থেকেই নিজস্ব প্রযুক্তিতে মহাকাশে ন্যানো স্যাটেলাইট ও মানুষ পাঠানো সম্ভব হবে। আলফা সায়েন্স ল্যাবের প্রেসিডেন্ট আনাছ জানান, আলফা সায়েন্স ল্যাবের অন্য সদস্যরা এমন একটি কাজে স¤পৃক্ত থাকতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছেন। ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সহকারী অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার টিটু জানান, এই কলেজের শিক্ষার্থীরা আগেও প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছে। শিক্ষার্থীদের এই আবিস্কারটি অভিজ্ঞ টেকনিক্যাল টিম দিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে উড্ডয়ন করা হবে।
ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, নতুন নতুন আবিস্কার না হলে দেশ এগিয়ে যাবে না। শিক্ষার্থীদের রকেট তৈরীতে পৃষ্ঠপোষকতা ছিলো এবং আগামীতেও থাকবে। রকেট ধুমকেতু-এক্সের তৈরীর জন্য আলফা সায়েন্স ল্যাব তৈরী করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সার্বিক সহয়োগীতার জন্য শিক্ষকদের দিয়ে কমিটি করে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, আলফা সায়েন্স ল্যাবের প্রকৌশলী শিক্ষার্থীদের এই টিম এর আগেও অনেক রোবোটিক্স প্রজেক্টে সফল হয়েছে। তারা ২০১৯ এর নভেম্বরে অনুষ্ঠিত টেকফেস্ট নির্বাচনী পর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়। সেই ধারাবাহিকতায় ভারতের বিখ্যাত আইআইটিতে অনুষ্ঠিত টেকফেস্টে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করে। সেখানে তারা শীর্ষ-৫ এ জায়গা করে নেয় এবং সেমিফাইনালিস্ট হবার গৌরব অর্জন করে। আইসিটি মন্ত্রলায়ের অধীনের ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস ২০১৮ তে রানার-আপ এবং এছাড়াও বিভিন্ন জাতীয় রোবোটিক্স ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন ও রানার-আপ হয়।