শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ১১ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ময়মনসিংহে সাত মাসের শিশু ফারিয়া জান্নাতকে উদ্ধার করল পিবিআই

প্রকাশিত হয়েছে- রবিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১
এম এ আজিজ || প্রধান প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ
  • প্রকাশিত সময় : সেপ্টেম্বর, ২৬, ২০২১, ৯:০৪ অপরাহ্ণ

সাত মাসের শিশু ফারিয়া জান্নাতকে উদ্ধার করে তার পিতার হাতে তুলে দিলেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশণ (পিবিআই) ময়মনসিংহ। শত অভাবের মধ্যেও রবিবার এই শিশুকে হাতে পেয়ে পিতা আব্দুল আলী আনন্দে উল্লাসিত হয়ে উঠেন। নগরীর কাঠগোলা এলাকা থেকে আদালত কর্তৃক মামলা প্রাপ্তির মাত্র সাত দিনের মধ্যে পিবিআই এই শিশুকে উদ্ধার করে।
পিবিআই ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস জানান, গৌরীপুরের ছিলিমপুরের আব্দুল আলী পার্শ্ববর্তী বীর আহাম্মদপুরের কুলছুমাকে বিয়ে করে। তাদের সংসারে তিন সন্তান থাকার পর ৪র্থ সন্তান জন্মের আগে আব্দুল আলী তার স্ত্রীকে সন্তান জন্মের আগে শ্বশুরালয়ে পাঠায়। ঐ বাড়িয়ে গত ১মার্চ শিশু ফারিয়া জান্নাতের জন্ম হয়। আব্দুল আলী গত এক আগষ্ট সকালে তার মেয়ে ফারিয়া জান্নাত ও স্ত্রী কুলসুমাকে তার শ^শুর বাড়ী থেকে নিজ বাড়ীতে আনতে যান। সেখানে গিয়ে তার মেয়েকে না পেয়ে স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানায়, তাদের মেয়ে ফারিয়া জান্নাত অসুস্থ। চিকিৎসার জন্য তাকে অন্যত্র পাঠিয়ে দিয়েছি। দীর্ঘ দিন সন্তান ফারিয়া জান্নাতকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে আব্দুল আলী ময়মনসিংহের বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (ট্রাইব্যুনাল) আদালতে মোকদ্দমা নং-১৫৯/২০২১, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সং/০৩) এর ৬(১)(২)/৭/৩০ দায়ের করেন। আদালত শিশুটিকে উদ্ধারে পিবিআইকে নির্দেশ দেয়।

পিবিআইয়ের ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদারের নির্দেশনায় ও পরামর্শ মতে পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ^াসের সহযোগিতায় মামলাটি তদন্ত শুরু করেন পুলিশ পরিদর্শক দেলোয়ার হোসাইন। তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শিশুটির অবস্থান সনাক্ত পূর্বক রবিবার সকালে নগরীর কাঠগোলা থেকে উদ্ধার করে।
এসপি গৌতম কুমার বিশ^াস আরো বলেন, গত ১৯ সেপ্টেম্বর আদালতের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার পিবিআই পেয়ে শিশু’কে উদ্ধারে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শিশুটি’কে নগরীর কাঠগোলা মোঃ স্বপন মিয়ার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়।
আব্দুল আলীর মতে, ২০০৯ সালে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক তিনি কুলসুমা বেগমকে বিবাহ করেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে চার সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। বিয়ের পর দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত পরিবারটির মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে তারা আলাদাভাবে বসবাস করতে শুরু করে। এছাড়াও তাদের ৪র্থ সন্তান ফারিয়া জান্নাত জন্মগ্রহণ করার পর তাদের ৩য় পুত্র তায়িব খেলার ছলে বিভিন্ন সময় শিশু ফারিয়া জান্নাতকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরাসহ মাঝে মধ্যে মুখ ও গলায় চেপে ধরত। আর্থিক অনটনে স্ত্রী কুলসুমা বেগম বিভিন্ন বাসা বাড়ীতে কাজ নেয়। কুলছুমা অধিকাংশ সময় বাড়ীতে না থাকায় তার মধ্যে ফারিয়া জান্নাতের নিরাপত্তা নিয়ে এক ধরণের অজানা আশংকা কাজ করত। সন্তানের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তার সন্তানকে তারই পরিচিত জনৈক মোঃ স্বপন মিয়াকে দিয়ে দেয় বলে কুলছুমা দাবি করেন। কুলছুমা এঘটনা তার স্বামীকে অবগত না করায় তিনি তার স্ত্রীসহ তার শ^শুর ও শ্যালকের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন।