বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ময়মনসিংহে ভাসমান পথ শিশুদের মাঝে ঈদের নতুন জামা কাপড় দিলেন পুনাক সভানেত্রী কানিজ আহমার

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ২০ মে, ২০২০
||
  • প্রকাশিত সময় : মে, ২০, ২০২০, ৬:২৭ অপরাহ্ণ
এম এ আজিজ, প্রধান প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ
স্বামী পুলিশ কর্মকর্তা হলেও একজন মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা। তাই বলে স্ত্রী কেন পিছিয়ে থাকবে। মানবিক গুনাবলী থেকে তিনিও পিছিয়ে নেই। করোনাযুদ্ধকালীন সময়ে একাধিকবার রান্না করা খাবার, শীতবস্ত্র বিতরণ করে ময়মনসিংহে নিজের পরিচিয় তুলে ধরেছেন পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান পতœী ও ময়মনসিংহ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির সভানেত্রী কানিজ আহমার।
মানবিক গুনাবলী সম্পন্ন পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) ময়মনসিংহের সভানেত্রী কানিজ আহমার আবারো পুলিশের অভ্যান্তরে এবং জেলাবাসির কাছে নিজেকে তুলে ধরেছেন। ভাসমান পথ শিশুদের মাঝে পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে নতুন জামা কাপড় বিতরণ করে আলোচনায় আসেন। বুধবার ময়মনসিংহ নগরীর মিন্টু কলেজ সংলগ্ন বস্তি, রেলওয়ে বস্তিসহ বিভিন্নস্থানে ঘুরে ঘুরে এই সব শিশু কিশোরদের নতুন জামা কাপড় পড়িয়ে দেন পুলিশ সদস্যরা। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি শাহ কামাল আকন্দের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশ এ নতুন জামা কাপড় বিতরণ করেছেন। এই সব পথ শিশুরা ঈদের আগে নতুন, ভাল এবং উন্নতমানের জামা কাপড় পেয়ে খুশিতে আর মহানন্দে আত্বহারা।
করোনার মহামারি চলছে সারাবিশ্বে। বাংলাদেশ কোনভাবেই পিছিয়ে নেই। এই মহামারিতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। নতুন করে বেকার হয়েছে অসংখ্য মানুষ। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দোকানপাঠ, শিল্প প্রতিষ্ঠান, যানবাহনসহ সকল কিছু বন্ধ থাকায় কর্মহীনদের সংখ্যা বেড়েই চলছে। টানা দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে এই পরিস্থিতি চলতে থাকায় মানুষজন অজানা আতংকের পাশাপাশি দিন দিন ক্রমেই হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ছে।
নিম্ন শ্রেণীর মানুষজন, অসহায়, অস্বচ্ছলরা আরো পিছিয়ে পড়ছে। পিছিয়ে পড়া কর্মহীনদের রায় এবং তাদের পেটের আহার যোগাড় করতে সরকারী ও বেসরকারীভাবে পর্যাপ্ত ত্রাণ দেয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষনা দিয়েছেন, আপনারা ঘরে অবস্থান করুন। নিজে, পরিবার, সমাজ ও দেশকে বাচান। খাবারের জন্য একজন মানুষও মারা যাবেনা। অর্ধাহারে অনাহারে থাকা প্রতিটি মানুষের ঘরে খাবার পৌছে যাবে। জনপ্রতিটি, রাজনৈতিককর্মী, ও প্রশাসন ঘরে ঘরে খাবার পৌছে দিবে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় ময়মনসিংহে রাজনৈতিক, সামাজিক, জনপ্রতিনিধিদের সাথে অসহায়দের পাশে দাড়িয়েছে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন।
প্রায় দুই মাস ধরে পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামানের নির্দেশে জেলা পুলিশ খুজে বেড়াচ্ছে সমাজের নিম্নবিত্ত, শ্রমজীবি কর্মহীন, বেকার হয়ে পড়া, দিন এনে দিন খাওয়া মানুষদের। তাদেরকে পর্যায়ক্রমে সহায়তা করে আসছেন। জেলা পুলিশ নিজেদের অর্থায়নে সমাজের নিম্নবিত্ত, শ্রমজীবি কর্মহীন, বেকার হয়ে পড়া, দিন এনে দিন খাওয়া মানুষদের সহায়তা করে আসছেন।
পুলিশ সুপার বস্তিবাসী, অসহায়, অস্বচ্ছল, দিন এনে দিন খাওয়া, কর্মহীন, শ্রমিক, বেদে পরিবার, নাপিত, নৌকা মাঝি, খুঁজে খুঁজে তালিকা করে তাদের ঘরে ঘরে খাদ্য সহায়তা করে একজন মানবিক পুলিশ সুপার হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছেন। এছাড়াও লকডাউনে বিভাগীয় নগরীতে না খেয়ে ফুটপাতে পড়ে থাকা ভাসমানদের আহার যুগিয়েছেন এই পুলিশ সুপার। রান্না করা খাবারের প্যাকেট নিয়ে শহরে ঘুরে ঘুরে ভাসমান না খাওয়া মানুষের পেটে নিয়মিত আহার তুলে দিয়েছেন।
এসপি আহমার উজ্জামানের মানবাধিকতার খবর জেলার সকলস্তরে ব্যাপকভাবে চাউর হলে এসপির ফেইসবুকে আবেদন করে পঙ্গু, স্বামীহারা পরিবার। তাৎণিক ওসি ডিবি শাহ কামাল আকন্দের মাধ্যমে অসহায় পরিবারদের খুঁজে খুঁজে খাবার পৌছে দেন। একই সাথে এতিমদের বাড়ি বাড়ি খাদ্য পৌঁছে দিয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন মানবিক এসপি।
ময়মনসিংহের পুলিশ বাহিনী জনগণকে নিরাপত্তা দেয়ার সাথে সাথে মানবিক দায়িত্বটাও পালন করছে নিজেদের অনুসন্ধানী চোখ রেখে। যা ইতিমধ্যেই ময়মনসিংহবাসীকে উপলব্ধি করিয়েছে মানুষ মানুষের জন্য কতটা করতে পারে।