শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ময়মনসিংহে বিট পুলিশিংয়ের পরামর্শে সাজাপ্রাপ্ত ৫ আসামীর আত্নসমর্পন

প্রকাশিত হয়েছে- শুক্রবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১
নিজস্ব প্রতিবেদক || প্রধান প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ
  • প্রকাশিত সময় : সেপ্টেম্বর, ৩, ২০২১, ১১:৫৭ অপরাহ্ণ

শুধু মানবিকতাই নয়, সংশোধনের মাধ্যমে মানুষকে আলোর পথে এবং সুস্থ্য জীবনে ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ। তারই উজ্জল দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন ময়মনসিংহের কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ। মাত্র তিন মাসের জেল জরিমাণা মাথায় নিয়ে ১০ মাসেরও বেশি সময় পালিয়ে বেড়ানো ৫ সাজাপ্রাপ্তকে বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে আদালতে সারেন্ডার করিয়ে স্বাভানিক জীবন যাপনে সহযোগীতা করে কোতোয়ালী পুলিশ। গত পহেলা সেপ্টেম্বর এই ৫ পলাতক আসামী সাজা মাথায় নিয়ে পুলিশের পরামর্শে আদালতে আত্নসমর্পন করেন।

ময়মনসিংহ পুলিশের দক্ষ, কৌশলী ও মানবিক পুলিশ পরিদর্শক জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সাবেক ওসি শাহ কামাল আকন্দ। যিনি সাহসিকতা ও উত্তম কাজের জন্য পিপিএম পুরস্কারে বার পুরস্কৃত।এই পুলিশ কর্মকর্তা সদ্য ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানায় যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই বিট পুলিশিং কার্যক্রমকে চাঙ্গা করতে বিভিন্ন বিটে সমাবেশ শুরু করেন। কোতোয়ালী থানা এলাকায় নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে স্থানীয় লোকজন নিয়ে সভা করে পুলিশী সহজসেবা সহজিকরণ ও আইন প্রয়োগে কঠুরতার কথা জানিয়ে দেন। এ সময় মাদক, চোর ছিনতাইকারীদের তথ্য চেয়ে জনগণের কাছে প্রকাশ্য আবেদন করেন। পাশাপাশি মামলায় সামান্য জেল জরিমাণা মাথায় নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে পলাতক থেকে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামীদের ফেরারী কষ্টের জীবন থেকে নিজেদেরকে উদ্ধার এবং এই ফেরারী পলাতককালীন সময়ে তাদের পরিবারকে দুর্ভোগের হাত থেকে রক্ষা করতে নানা বক্তব্য দেন। এছাড়া ফেরারীদের পরিবারের সদস্যদের ব্যক্তিগতভাবে ডেকে এনে আদালতে আত্নসমর্পন করার জন্য অনুপ্রাণিত করেন। কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ জেলা সদরের চর নীলক্ষিয়া গ্রামের ফেরারী ৫ আসামীর পরিবারকে ডেকে এনে পরামর্শ দেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা হলো চর নিলক্ষিয়া গ্রামের সবুজ মিয়া ওরফে ছবু, পিতা- নুরুল মিয়া, রুহুল মিয়া, পিতা-নুরুল মিয়া, নুরুল মিয়া, পিতা মৃত-হাতিম উদ্দিন, সুরুজ মিয়া, পিতা মৃত-মফিজ উদ্দিন, ও সোহেল ওরফে রাসেল, পিতা- সুরুজ মিয়া। কোতোয়ালী থানার একটি মামলায় আদালতের রায়ে গত বছরের নভেম্বর/২০২০ তিন মাসের জেল ও ৫ শত টাকা করে জরিমাণা হয়। রায়ের দিন থেকে ঐ ৫ আসামী পলাতক। মাত্র তিন মাসের জেল মাথায় নিয়ে ৫ আসামী ১০ মাসেরও বেশি সময় ধরে পলাতক জীবন যাপন করছে। পরিবারের পুরুষ সদস্যদের অনুপস্থিতিতে ঐ ৫ পরিবারের সংসারে চলে নানা টানাপোড়ান। বিট পুলিশিং কার্যক্রম জোরদারকালে কোতোয়ালী পুলিশের ওসি শাহ কামাল আকন্দের কানে আসে ঐ ৫ পলাতক সাজাপ্রাপ্ত আসামীর পরিবারের খবর। দায়িত্বশীল পুলিশ পরিদর্শক ওসি শাহ কামাল বিট পুলিশিংয়ের পাশাপাশি ঐ ৫ পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে রেঞ্জ ডিআইজি ও পুলিশ সুপারের পরামর্শক্রমে স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের সাথে যোগাযোগ বাড়িয়ে দেন। পলাতক থাকাটা জেল হাজতে থাকার চেয়ে বেশী কস্ট। পলাতক সাজাপ্রাপ্তদের পরিবারের সদস্যদের বুঝাতে সক্ষম হন ওসি শাহ কামাল আকন্দ। মাত্র তিন মাসের জেল জরিমাণা মাথায় নিয়ে পরিবারের পুরুষ সদস্যরা দীর্ঘ সময় ধরে পলাতক এবং পুরুষ সদস্যদের অনুপস্থিতিতে নিজেদের পরিবারের দুর্ভোগের বিষয় বুঝতে পেরে পরিবারগুলো। পুলিশের কথায় আশ্বস্থ হয়ে গত পহেলা সেপ্টেম্বর ঐ ৫ আসামী নিজেরা আদালতে আত্নসমর্পন করেন।
এ ব্যাপারে ওসি শাহ্ কামাল আকন্দ জানান, প্রতিনিয়ত বিট পুলিশিংয়ের কার্যক্রমের অংশ হিসাবে উঠান বৈঠক করায় জনগনের সাথে পুলিশের নিবিড় সম্পর্ক তৈরী হচ্ছে। জনগনের মধ্যে অপরাধ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় থানা এলাকায় অপরাধ প্রবনতা কমে যাচ্ছে। পরিবারের সদস্য ও জনসাধারনের চাপের মুখে গ্রেফতারী পরোয়ানাভুক্ত অপরাধীরা বিজ্ঞ আদালতে আত্মসমর্পন করছে। বিট পুলিশিং কার্যক্রমের ফলে আইনশৃংঙ্খলার নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সাথে জনসাধারনের একাত্বতা ঘোষনা করায় অপরাধ প্রবনতা এক সময় শূন্যের কোটায় হৃাস পাবে বলে সুশীল সমাজ মনে করেন।