এম এ আজিজ, স্টাফ রিপোর্টার,ময়মনসিংহ
করোনা পরিস্থিতিতে আতংক না হয়ে ধৈর্য এবং সাহসের সাথে মোকাবেলা করার আহ্বান জানিয়েছেন, ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান। তিনি বলেন, পুলিশকে আরো মানবিক আচরণের মাধ্যমে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। জেলার সকল থানার ওসিদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কোনও অবস্থাতেই অসহায় মানুষকে কষ্ট দেওয়া যাবে না। জনগণকে বোঝাতে হবে। সরকারের উদ্দেশ্য মানুষকে ঘরে রাখা। প্রয়োজন ছাড়া কেউ যেনো ঘর থেকে বের না হন। করোনা ভাইরাস যাতে না ছড়ায় বা সংক্রমণ করতে না পারে তার দিকে যেমন খেয়াল রাখতে হবে, তেমনই কেউ যাতে সমস্যায় না পড়ে তার দিকেও মানবিকতার সাথে পুলিশকে খেয়াল রাখেতে হবে। মঙ্গলবার বিকালে ময়মনসিংহ নগরীর নদের তীরে বসবাসরত অহসায় বেদে পল্লীর ৮০জন বেদে পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা বিতরণকালে পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান এ সব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, বিদেশ থেকে যারা দেশে এসেছেন তাঁদেরকে অবশ্যই নিজের, পরিবারের এবং দেশের মানুষের স্বার্থে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
তিনি আরো বলেন, একটা সময় সাধারণ মানুষ থানায় বা পুলিশের কাছে যেতে ভয় পেতো। এখন সেই পরিবেশ নেই। সেবার মানসিকতা ও মানবিক পুলিশ তৈরিতে কাজ করছি আমরা। করোনা পরিস্থিতিতে খেটে খাওয়া দরিদ্র দিন এনে দিন খাওয়া মানুষদের পাশে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন তিনি। এর আগে ডিবি পুলিশ ওসি শাহ কামাল আকন্দের নেতৃত্বে ডিবির সেকেন্ড অফিসার আনোয়ার হোসেন নগরীর পাটগুদাম ব্রীজ সংলগ্ন কালিবাড়ির চরে নদের তীরে বসবাসরত ৮০জন বেদে পরিবারের তালিকা তৈরী করে তাদের হাতে সহায়তা স্লিপ পৌছে দেন। পরে ঐ সহায়তা স্লিফ অনুসারে খাদ্য সহায়তা প্রদান করেন পুলিশ সুপার। পরে পুলিশ সুপার করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে নগরীর সার্বিক পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখার চরপাড়া, ভাটিকাশর, ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড, সিকেঘোষ রোড, রাম বাবু রোড, নতুন বাজারসহ বিভিন্ন ঘুরে বেড়ান। এ সময় করোনা ভাইরাসের সংক্রমন প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। জরুরী প্রয়োজনে বাজারে আগত লোকজনদের ৩ ফুট দূরত্বে থেকে জিনিসপত্র ক্রয়-বিক্রয় করা এবং বাধ্যতামূলকভাবে মুখে মাস্ক পরিধানের বিষয়ে উৎসাহিত করেন। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাজার/রাস্তাঘাটে ঘোরাফেরা না করে এলাকাবাসীকে নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। এছাড়া করোনা ভাইরাস সংক্রমণে সরকারী ছুটির কারণে সৃষ্ট ভুতরে পরিস্থিতির সুযোগে কেউ যাতে কারো উপর অন্যায়, অত্যাচার, চাঁদাবাজি করতে না পারে তার দিকে কঠোরভারে খেয়াল রাখতে এলাকাবাসির প্রতি বিশেষভাবে আহবান জানিয়ে পুলিশ সুপার আরো বলেন, মনে রাখতে হবে এক শ্রেণীর দুষ্টচক্র বিশেষ পরিস্থিতি বা যে কোন দুর্যোগকালীন সময়কে পুজি করে অসহায় মানুষকে আরো কঠিনতর অবস্থায় ফেলে দিতে লুটতরাজ করতে পারে।
এ জন্য সকলকে সজাগ থাকতে হবে। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির, জয়িতা শিল্পী, মোঃ শাহজাহান, আল আমিন, কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মাহমুদুল ইসলাম, ডিবির ওসি শাহ কামাল আকন্দ, পুলিশ পরিদর্শক ফারুক আহম্মেদ সহ কোতোয়ালী ও ডিবি পুলিশের বিভিন্নস্তরের কর্মকর্তাগণ সাথে ছিলেন। বেদে পরিবারদের মাঝে জেলা পুলিশের খাদ্য সহায়তা সম্পর্কে ডিবির ওসি বলেন, করোনা সংক্রমণরোধে টানা ১০দিনের সরকারী ছুটি থাকায় বেদে পরিবার কোথাও যেতে পারছেনা। অপরদিকে তাদের কোন নিদ্ধিষ্ট ঠিকানা ও নির্ধারিত কোন এলাকার বাসিন্দা না হওয়ায় তারা যে কোন ত্রাণ থেকেই বঞ্চিত হচ্ছে। তাই এ সব অহসায় বেদেদেরকে জেলা পুলিশ খাদ্য সহায়তা দেন। এ সব খাদ্য সামগ্রীর মাঝে ছিল ৫ কেজি চাল, দুই কেজি আলু, এক কেজি ডাল ও তেল লবণ এক কেজি।