শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪ -|- ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০-বসন্তকাল -|- ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

মধ্যবিত্তদের মাঝে রাতের আধারে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রেখেছে ময়মনসিংহ পুলিশ

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ১৩ মে, ২০২০
||
  • প্রকাশিত সময় : মে, ১৩, ২০২০, ১১:৫৯ অপরাহ্ণ
এম.এ আজিজ, প্রধান প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ :
থেমে নেই ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের ত্রাণ ও খাদ্য সহায়তা বিতরণ। মানবিক পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামানের নেতৃত্বে জেলা পুলিশ অসহায়দের মাঝে রাতের আধারে অতি গোপনে মধ্যবিত্তদের ঘরে খাদ্য সহায়তা পৌছে দিচ্ছে। মঙ্গলবার রাতে বিভাগীয় নগরীর খাগডহরের তালতলা ও ঢোলাদিয়ায় এই খাদ্য সহায়তা পৌছে দেয়া হয়।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় টানা সরকারী ছুটিতে মানুষজনকে ঘরে অবস্থান নিশ্চিত, সকল হাট-বাজার নতুন করে ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখা, জরুরি বা বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হলে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং লকডাউন কঠিনভাবে মান্য করতে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ দতা পাশাপাশি মানবিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করে।
এছাড়া নিয়মিত হাত ধোয়া, মাস্ক ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ এেেত্র স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারও পরামর্শ দিয়ে জনগণের পুলিশ হিসাবে পরিচয় করে তুলে।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে টানা সরকারি ছুটি ও লকডাউনে, দিনমজুর, শ্রমিক, কৃষক, খেটে খাওয়া দরিদ্র জনগোষ্ঠি বেকার হয়ে পড়ে। এই সব নতুন বেকার ও কর্মহীন মানুষদের সরকারিভাবে পর্যাপ্ত ত্রাণ ও খাদ্য সহায়তা দিলেও ব্যক্তি পর্যায়ে এবং দলগতভাবে এগিয়ে আসে জেলা পুলিশ। পুলিশ সুপারের নির্দেশে নিজস্ব অর্থায়নে সমাজের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী কৃষি শ্রমিক, দিনমজুর, রিক্সা/ভ্যান চালক, কুলি, নাপিত, বেদে পরিবার, পরিবহন শ্রমিক, ভিুক, প্রতিবন্ধী, পথশিশু, স্বামী পরিত্যক্তা/বিধবা নারী এবং হিজড়া সম্প্রদায়কে খুজে খুজে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করে আসছে। এভাবে প্রায় তিন হাজার পরিবারকে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করে জেলা পুলিশ। অনেকেেত্র রেঞ্জ ডিআইজি ব্যারিস্ট্রার হারুন অর রশিদ, অতিরিক্ত ডিআইজি ডঃ আক্কাস উদ্দিন ভুইয়া, পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারগণ এই ত্রাণ ও খাদ্য সহায়তা বিতরণ কাজ উদ্বোধন করেন। ১২ মে মঙ্গলবার তালতলা ও ঢোলাদিয়ায় অর্ধশতাধিক অসহায় মধ্যবিত্তদের ঘরে পুলিশ এই খাবার পৌছে দেয়।
এছাড়াও পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়ে রান্না করা প্যাকেট খাবার রাতে নিজ হাতে হাতে পৌছে দেয় অসহায়, অভাবগ্রস্ত ছিন্নমুলদের ঘরে ঘরে। পলিশ কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত আর্থিক সহযোগিতায় ডিবি ওসি শাহ্ কামাল আকন্দের সরাসরি উপস্থিতি ও তত্বাবধায়নে ঘুরে ঘুরে এই খাবার প্যাকেট বিতরণ করা হয়। রাতের বেলায় যে সকল ছিন্নমুল, বয়স্ক, অসহায়, রিস্কা চালক অটো চালক সামান্য এক বেলা খাবার না পেয়ে অনাহারে পার করে দিচ্ছে তাদের হাতে হাতে খাবার পৌছে দিতেই এই উদ্যোগ।
ডিবি ওসি শাহ্ কামাল আকন্দ বলেন, জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে রাত্রিকালে নগরীতে টানা দশ দিনে প্রায় হাজারো ভাসমান ছিন্নমুল, হতদরিদ্র অসহায় মানুষের মাঝে রান্নাকৃত খাবার বিতরন করা হয়। নগরীতে ঘুরেঘুরে এই রান্নাকৃত খাবার বিতরন করেন ডিবির ওসি শাহ কামাল আকন্দসহ ডিবি পুলিশ। ওসি ডিবি আরো জানান, মুজিবর্ষের অঙ্গিকার পুলিশ হবে জনতার এই প্রতিপ্রাদ্য বাস্তবে রূপ দিতে ময়মনসিংহ পুলিশ কাজ করছে।
করোনা পরিস্থিতির কারণে নতুন করে অভাবগ্রস্থ ও বেকার হয়ে পড়া মধ্যবিত্ত যারা লোকলজ্জার ভয়ে মানুষের কাছে এবং মানুষের সামনে কোন ধরণের সহায়তা চাইতে পারছেনা তাদেরকে সহায়তা করতে পুলিশ সব সময় কাজ করছে। এ সব মানুষদের খাদ্য সহায়তা দিতে জেলা পুলিশ মোবাইল, ফেইনবুকেও তথ্য পেয়ে মধ্যরাতে খাদ্য পৌছে দিয়েছে। যা চলমান রয়েছে। জেলা পুলিশের কর্মরত একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এই প্রতিনিধিকে বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে অসহায়, বেকার ও কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষকে সহায়তা যেন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপারের নেশায় পরিণত হয়েছে। ঐ কর্মকর্তা বলেন, কেউ না খেয়ে আছে এমন খবর পাওয়ার সাথে সাথে তার ঘরে আগে খাবার পৌছে দিয়ে পরে অন্য কাজ বলে পুলিশ সুপারের নির্দেশনা রয়েছে।