আজ শুক্রবার ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০, ২৯শে মার্চ ২০২৪

শিরোনাম:
কামারিয়া ইউনিয়নকে আধুনিক ও স্মার্ট ইউনিয়ন গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে ইউপি চেয়ারম্যান আজহার খুলনার মাকসিদুলের বিভীষিকাময় ২৪ ঘণ্টা : গৌরীপুরেটর্চারসেল থেকে আবারও যুবক উদ্ধার \ গ্রেফতার-১ মুক্তিযুদ্ধা মেজবা উদ্দিনের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন গৌরীপুরে বিএমএসএফের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত গৌরীপুর মহিলা কলেজের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন ময়মনসিংহে মেধা ও যোগ্যতায় পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকুরী পেলেন ১২৮ জন পুলিশের উর্দ্বতন কর্মকর্তা পরিচয়ে ফেইসবুকে প্রতারণা।  ডিবির হাতে গ্রেফতার মসিকের উদ্যোগে ৫৫০ টাকা কেজি গরুর মাংস বিক্রি শুরু শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হলেন ময়মনসিংহের রাকিবুল হাসান মিলন মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস :গৌরীপুরে পতাকা মিছিল ও সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন
||
  • প্রকাশিত সময় : ডিসেম্বর, ৬, ২০২০, ১০:৪৮ পূর্বাহ্ণ




ভুটানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি আজ

বাহাদুর ডেস্ক :

বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দানকারী দেশ ভুটানের সঙ্গে স্বাধীনতার স্বীকৃতির ৫০তম বছরে সই হচ্ছে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি বা পিটিএ। এই চুক্তির ফলে দুই দেশ পরস্পরের কাছে শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা পাবে। আজ রবিবার বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে ঐতিহাসিক চুক্তিটি সই হবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই চুক্তি সই অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং ভুটানের ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স মিনিস্টার চুক্তিতে সই করবেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ ১০০ পণ্য এবং ভুটান ৩৪টি পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় রপ্তানির সুযোগ পাবে। আলোচনার মাধ্যমে পণ্য সংখ্যা বাড়াতে পারবে দুই দেশ। আর রপ্তানি সম্প্রসারণে পিটিএকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

বাংলাদেশকে ভুটানের স্বীকৃতি প্রদানের ৫০ বছর পূর্তি আজ। ঐতিহাসিক দিনটিকে উদযাপন করতেও নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ভুটানের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাশফি বিনতে শামস, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ওবায়দুল আজম, শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল ভুটান। সে কারণে দুই দেশের মধ্যে পিটিএ চুক্তির জন্য এই স্মরণীয় দিনটিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া একই দিন বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি হতে যাচ্ছে। চুক্তি স্বাক্ষরের পর কেক কেটে সৌহার্দ্যরে ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করা হবে। চুক্তি স্বাক্ষর শেষে ৫০ বছরের বন্ধুত্বপূর্ণ সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নের লোগো উন্মোচন করা হবে বলে জানান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে উভয় দেশের মধ্যে ১২ দশমিক ৭৭ মিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ছিল। সেটি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৬৫ মিলিয়ন ডলারে। এ চুক্তির ফলে বাংলাদেশ ভুটানের বাজারে সামগ্রিকভাবে ১০০টি পণ্য এবং ভুটান বাংলাদেশের বাজারে ৩৪ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। পরবর্তী সময়ে এটি আরো বাড়বে। দ্বিপক্ষীয় এই বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের একটি প্রস্তাব এর আগে গত সেপ্টেম্বরে মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, পিটিএ চুক্তির ফলে কর ছাড় দিতে হবে এবং কর অবকাশ সুবিধা পাওয়া যাবে। সাময়িকভাবে রাজস্ব আয় কমলেও দীর্ঘমেয়াদে রপ্তানি ও বাণিজ্য উভয়ই বাড়বে বলে জানান তিনি।

জানা যায়, দুদেশের সম্পর্ক সুদৃঢ়করণের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও ঐকান্তিক ইচ্ছায় গত ১৪ সেপ্টেম্বরের মন্ত্রিসভা বৈঠকে ওই চুক্তির খসড়া অনুমোদন করা হয়। খসড়া চুক্তির কপি ভুটানে বাংলাদেশ দূতাবাসে পাঠানো হয়। এছাড়া করোনাকালে চলাচল সীমিত হওয়ায় চুক্তি স্বাক্ষরের পদ্ধতি নিয়ে ভুটানের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অবহিত করার জন্য বাণিজ্য সচিব নির্দেশনা দেন। এছাড়া বাণিজ্য সচিবের সঙ্গে ১ অক্টোবর ঢাকায় ভুটানের রাষ্ট্রদূতের কল-অন সভায় স্বাক্ষরের বিষয়টি আলোচনা হয়। আজ দুই দেশের মধ্যে পিটিএ সই হবে। বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী এবং ভুটানের ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স, রিজিওনাল ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি মন্ত্রী নিজ নিজ দেশের পক্ষে একই সময়ে ভার্চুয়ালি সই করতে পারেন। পরে কূটনৈতিক চ্যানেলে পাঠানোর মাধ্যমে উভয়মন্ত্রীর স্বাক্ষর সংরক্ষণ করা হবে কপিতে।

২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অগ্রাধিকারমূলক ও মুক্তবাণিজ্য চুক্তি করা প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছিলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পরও স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে প্রযোজ্য সুবিধাগুলো একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অব্যাহত রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) ও অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) স্বাক্ষরের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ পর্যন্ত ১১টি দেশের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষরের সম্ভাব্যতা যাচাই সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া নেপাল, ইন্দোনেশিয়া ও ভুটানের সঙ্গে পিটিএ স্বাক্ষরে অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। শিগগিরই চুক্তি স্বাক্ষর সম্ভব বলে আশা করেন তিনি।

জানা গেছে, পিটিএ এবং এফটিএ চুক্তি করার সম্ভাব্য সব ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রথম পর্যায়ে ১১ দেশের সঙ্গে এফটিএর সম্ভাব্যতা যাচাই হয়েছে এবং ইতিবাচক সাড়াও পাওয়া গেছে। নেপালের সঙ্গেও পিটিএর আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে। এছাড়া ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে এফটিএর বিষয়টিও অনেক দূর এগিয়ে গেছে। অন্যান্য দেশের সঙ্গেও চুক্তি করা হবে।

জানা যায়, আগামী দুই বছরের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় উঠে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ফলে ২০২৪ সালের পর বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কাছ থেকে আমদানি-রফতানিতে যেসব শুল্ক সুবিধা পাওয়া যেত, তা আর বহাল থাকছে না। এ কারণে এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আগে থেকেই বিভিন্ন দেশের সঙ্গে এফটিএ ও পিটিএ করা হচ্ছে। যাতে নিজেদের অর্থনৈতিক অবস্থানকে আরো শক্তিশালী করা যায়। আর এ কারণে ভুটানের সঙ্গে প্রথম পিটিএ করা হচ্ছে। এছাড়া ৪৩ দেশের সঙ্গে এরই মধ্যে সম্পাদিত বাণিজ্য চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। পরে এসব দেশের সঙ্গেও পিটিএর সম্ভাব্য যাচাই করা হবে।

এ প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ ড. জায়েদ বখত প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘ভুটান আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু রাষ্ট্র। ভুটানের সঙ্গে পিটিএ হলে নিঃসন্দেহে দেশটিতে আমাদের রপ্তানি বাড়বে। এখন এলডিসি হিসেবে বাংলাদেশ যে শূন্য শুল্ক সুবিধা পায় বিভিন্ন দেশের কাছে, ওই সুবিধা অব্যাহত রাখতে চাইলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি করতে হবে। আর এ ধরনের চুক্তির জন্য এখনই জোড়ালো প্রস্তুতি নেওয়া দরকার।’

সূত্র জানায়, ৬ ডিসেম্বর প্রথম স্বীকৃতি প্রদানের তারিখেই বন্ধু রাষ্ট্র ভুটানের সঙ্গে চুক্তি সই করার যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিংয়ের ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে ঐতিহাসিক ‘পিটিএ’ সই করা হবে। পিটিএ হলে ভুটানে পাট ও পাটজাতীয় পণ্য, চামড়া পণ্য ও জুতা, ফ্যান, ড্রাই সেল ব্যাটারি, ঘড়ি, আলু, কনডেন্সড মিল্ক, সিমেন্ট, টুথব্রাশসহ অন্যান্য পণ্যের রফতানি বাড়বে। অন্যদিকে ভুটানের কমলা, আপেল, আদা, ফলের জুস, পাথর, কাঠ, চুনাপাথরসহ অন্য পণ্য আমদানি হবে বাংলাদেশে। ভুটানের পাথর বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে।

জানা যায়, ২০১২-১৩ অর্থবছরে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল আড়াই কোটি ডলারের মতো। বর্তমানে তা বেড়ে প্রায় ছয় কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। পিটিএ হলে অর্থনীতিতে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

টি.কে ওয়েভ-ইন




Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও খবর




অনলাইন জরিপ

জাতিসংঘের বিশেষ দূত এলিস ক্রুজ বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল সব মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। আপনিও কি তা-ই মনে করেন?

View Results

Loading ... Loading ...

পুরনো সংখ্যার নিউজ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১