আজ বৃহস্পতিবার ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০, ২৮শে মার্চ ২০২৪

শিরোনাম:
কামারিয়া ইউনিয়নকে আধুনিক ও স্মার্ট ইউনিয়ন গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে ইউপি চেয়ারম্যান আজহার খুলনার মাকসিদুলের বিভীষিকাময় ২৪ ঘণ্টা : গৌরীপুরেটর্চারসেল থেকে আবারও যুবক উদ্ধার \ গ্রেফতার-১ মুক্তিযুদ্ধা মেজবা উদ্দিনের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন গৌরীপুরে বিএমএসএফের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত গৌরীপুর মহিলা কলেজের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন ময়মনসিংহে মেধা ও যোগ্যতায় পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকুরী পেলেন ১২৮ জন পুলিশের উর্দ্বতন কর্মকর্তা পরিচয়ে ফেইসবুকে প্রতারণা।  ডিবির হাতে গ্রেফতার মসিকের উদ্যোগে ৫৫০ টাকা কেজি গরুর মাংস বিক্রি শুরু শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হলেন ময়মনসিংহের রাকিবুল হাসান মিলন মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস :গৌরীপুরে পতাকা মিছিল ও সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন
||
  • প্রকাশিত সময় : অক্টোবর, ১৫, ২০২০, ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ




বিশ্ব সাদা ছড়ি দিবস আজ ॥ ৯০দশকেও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হাফেজ কাসেম আলো ছড়াচ্ছেন

প্রধান প্রতিবেদক :

জন্ম থেকে পৃথিবীর আলো-অন্ধকারের রূপ দেখতে পারেননি হাফেজ মো. আবুল কাসেম। তবে নব্বই ছুঁইছুঁই সময়েও তিনি আলো ছড়াচ্ছেন। বিস্ময়কর এই মানুষটির বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুর। এ অঞ্চলে তিনি ‘সাদামনের মানুষ’ হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। এখনও ছুটে চলেন মানবসেবায়। শুধু, নিজের নয়; সন্তানদেরকেও আলোকিত করেছেন তিনি। তিনি নতুন প্রজন্মের কাছে আকুতি জানান, যাঁদের দৃষ্টি আছে তারা অপদৃষ্টিতে যেন অপকর্মের সৃষ্টি না করেন। আজ বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর/২০) বিশ্ব সাড়া ছড়ি দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘সাদাছড়ির উন্নতি, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অগ্রগতি’।

হাফেজ মো. আবুল কাসেম জন্ম গ্রহণ করেন ১৯৩০সালে। গৌরীপুর উপজেলার মইলাকান্দা ইউনিয়নের মইলাকান্দা গ্রামে। তার বাবার নাম কলিম উদ্দিন আহাম্মেদ। তিন ভাই আর দুই বোনের মাঝে তিনি দ্বিতীয়। মানুষের সেবায় তিনি নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। দারিদ্র্যপীড়িত শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, মসজিদ-মাদরাসার উন্নয়নেও কাজ করে যাচ্ছেন। সমাজের পরিবর্তনের জন্য তারুণ্যদের ন্যায়ের পথে আহবান জানানো তার প্রধান কাজ। ভোরের কাগজের সাংবাদিক তিলক রায় টুলু বলেন, হাফেজ মো. আবুল কাসেম এ অঞ্চলে তিনি ‘সাদামনের মানুষ’ হিসাবে সবার নিকট সমাদৃত।

হাফেজ মো. আবুল কাসেম বলেন, আমার বয়সের অন্যরা স্কুলে যাচ্ছে। তখন শ্যামগঞ্জ রেলস্টেশনে বসে থাকতাম। মনেমনে খুব কষ্ট পেতাম। এরপর বাবা আমাকে ময়মনসিংহ বাসস্টেশনের মোড়ে অবস্থিত একতলা মাদরাসার হেফজখানায় ১৯৪৯সালে ভর্তি করেন। মাদরাসার প্রধান হাফেজ মো. আব্দুল আউয়াল। তার বাসায় ৪বছর থেকে হেফজ শেষ করি। এরপর ঢাকার বড়কাটরা আশরাফুল উলুম মাদরাসা, লালবাগ শাহী মসজিদ মাদরাসায় পড়েছি। সর্বশেষ পড়েছি মাওলানা আব্দুল কাদেরের বংশাল মাদরাসায়। হাফেজ হওয়ার পর ৫৪’র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। মুসলিমলীগ ফেল করে, যুক্তফ্রন্ট পাস করলো। তখন নেজামী ইসলামীর সভাপতি মাওলানা আতাহার আলী সাহেব কিশোরগঞ্জ থেকে এমপি নির্বাচিত হন। তিনি আমাকে নিয়ে যান তার জামিয়া এমদাদিয়া মাদরাসায়। সেখানে তার ছেলেকে পড়াই। ১৯৫৮সালে তিনিই শ্যামগঞ্জ বড় মসজিদের বারান্দায় হাফেজিয়া ফুরকানিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে চলে প্রায় ১০বছর। এরপর তিনি তার বাল্য ওস্তাদ (শিক্ষাগুরু) মাওলানা মো. নাসির উদ্দিনকে নিয়ে সেই মাদরাসার নিজস্ব দ্বিতীয় ভবন নির্মাণ করেন। ৬২বছরে এ মাদরাসা থেকে প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী কুরআনে হাফেজ শিক্ষা গ্রহণ করেন। এ মাদরাসাটি বর্তমানে শিক্ষার্থী ৩৪ জন। মাদরাসা কমিটির সভাপতি আবুল মুনসুর সরকার জানান, এখনো হাফেজ আবুল কাসেম মাদরাসার তদারকি করেন। বিভিন্ন কাজে জড়িত থাকেন।

এ দিকে আফতাবের নেছার সঙ্গে হাফেজ মো. আবুল কাসেম বিয়ের পিঁড়িতে বসেন ১৯৫৬সালে। দাম্পত্য জীবনে ছয় পুত্র আর তিন কন্যার জনক, প্রত্যেক সন্তানকেই উচ্চ শিক্ষায় আলোকিত করেন। বড় মেয়ে মোমেন বেগম গৃহিনী। ডক্টর আশরাফুন নেছা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব। বড় ছেলে হারুন অর রশিদ শ্যামগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। শ্যামগঞ্জ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের সভাপতি মামুন অর রশিদ পেশায় একজন ব্যবসায়ী। জামিলুর রহমান বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত সাবইন্সপেক্টর। আব্দুল্লাহ আল নোমান মইলাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত ইউপি সদস্য। নাসরিন সুলতানা পান্না জয়িতা ফাউন্ডেশনে কর্মরত। আবু সায়েম সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার ও ছোট ছেলে মাহমুদুল হাসান রানা বেসরকারি কোম্পানীতে কর্মরত।

হাফেজ আবুল কাসেম বলেন, পাশ্ববর্তী ডা: আফতাব উদ্দিনকে দেখে আমার বাবার খুব ইচ্ছা ছিলো সন্তানকে ডাক্তার বানাবেন। কিন্তু আমার জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন হওয়ায় শুধু আফসোস করতেন। আমি তা অনুভব করেছি। তারপর আমারও ইচ্ছে ছিলো সন্তানকে ডাক্তার বানাবো। সেই ইচ্ছেও পূরণ হয়নি। আশরাফুননেছা মদিনাকে নিয়ে মুমিনুন্নেসা কলেজে গিয়ে ছিলাম বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি করতে। কলেজের অধ্যক্ষ মোছা. মুসলিমা খাতুনকে বারবার অনুরোধ তিনি বিরক্ত হয়ে তিনি বলেন ‘এটা কী ইলেস্টিক-টানলে লম্বা হবে’। মনক্ষুন্ন হয়ে বাড়ি ফিরে মেয়েকে শ্যামগঞ্জের হাফেজ জিয়াউর রহমান ডিগ্রী কলেজে মানবিক শাখায় ভর্তি করি। সেই মেয়েই বিসিএস শিক্ষায় উর্ত্তীণ হয়ে মুমিনুন্নেসা কলেজে সহযোগী অধ্যাপক হিসাবে যোগদান করেন। বর্তমানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব। ডাক্তার হতে পারে নাই, ডাক্তারদের অভিভাবক হওয়ায় আমি আল্লাহপার্কের নিকট শুকরিয়া আদায় করেছি।

বিশ্ব সাদাছড়ি দিবসটি ১৯৬৪ সালে ৬ অক্টোবর মার্কিন কংগ্রেসের একটি যৌথ রেজোলিউশন এ দিবসটি স্বাক্ষরিত হয়। সে বছর থেকেই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এই রেজুলেশনটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতিকে প্রতিবছরের ১৫ অক্টোবরকে ‘সাদাছড়ি নিরাপত্তা দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করার অনুমতি দেয়। রাষ্ট্রপতি লিন্ডন বি জনসন যৌথ রেজুলেশন পাস হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রথম সাদাছড়ি নিরাপত্তা দিবস ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন।

টি.কে ওয়েভ-ইন




Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও খবর




অনলাইন জরিপ

জাতিসংঘের বিশেষ দূত এলিস ক্রুজ বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল সব মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। আপনিও কি তা-ই মনে করেন?

View Results

Loading ... Loading ...

পুরনো সংখ্যার নিউজ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১