বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

বিশ্ব ইজতেমা : চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২০
||
  • প্রকাশিত সময় : জানুয়ারি, ৮, ২০২০, ১১:১৩ পূর্বাহ্ণ

বাহাদুর ডেস্ক :

তাবলিগ জামাতের বৃহত্তম জমায়েত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হচ্ছে আগামী ১০ জানুয়ারি। আলমী শূরার তত্ত্বাবধানে ২০২০ সালের ১০ জানুয়ারি শুরু হয়ে ১২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। পরের সপ্তাহে মাওলানা সাদের অনুসারীরা দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা পালন করবেন। তবে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা পালনে মতপার্থক্য রয়েছে। তবে আদর্শিক কারণেই এ মতোপার্থক্য বলে দাবি আলমী শূরার মুরব্বিদের।

এদিকে ইজতেমার প্রস্তুতিকাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। ইজতেমাকে সামনে রেখে প্রতিদিন টঙ্গী, গাজীপুর, উত্তরা, তুরাগ ও মিরপুরসহ এলাকার বিভিন্ন মাদরাসার হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবী ছাত্র-শিক্ষক ময়দানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। স্বেচ্ছাসেবী ছাত্ররা ময়দানে নামাজের জন্য দাগ কাটা, ছামিয়ানার পাটের চট টানানো, আগাছা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ করে যাচ্ছেন।

মঙ্গলবার ইজতেমা ময়দান সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ইজতেমাকে সামনে রেখে এগিয়ে চলছে সব ধরনের প্রস্তুতির কাজ। হাজার হাজার মাদরাসা ছাত্র-শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে ময়দানে কাজ করছেন। নাইলনের রশি ও পাটের চট দিয়ে প্যান্ডেল তৈরির কাজ, ছাতা মাইক টানানো, টয়লেট পরিষ্কার-পরিচ্ছন, মুক্কাবির মঞ্চ তৈরি, খুঁটি নম্বর ও খিত্তা নম্বর বসানো, বালি ফেলে উচুঁ নিচু জায়গা সমান করাসহ ময়দান পরিষ্কারের কাজ করছেন। ইতিমধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে ইজতেমা আয়োজক কমিটির পক্ষে বলা হয়েছে।

ময়দানজুড়ে শব্দ প্রতিরোধক বিশেষ ছাতা মাইক ও ইউনিসেফ মাইক : ইজতেমা ময়দানের মাইক জামাতের দায়িত্বে নিয়োজিত সেনাবাহিনীর সাবেক ওয়ারেন্ট অফিসার মো. আলমগীর ভূঁইয়া বলেন, ইজতেমায় আগত লাখো মুসল্লি যাতে নিরবচ্ছিন্নভাবে মুরুব্বিদের বয়ান শুনতে পারেন সেজন্য পুরো ময়দানে প্রায় ২শ ৪০টি ছাতা মাইক স্থাপনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। এছাড়া বিদেশি মেহমানদের কামরায় প্রায় ৫০টি ইউনিসেফ মাইক (ধ্বনি প্রতিরোধক) স্থাপন করা হচ্ছে।

তুরাগ নদে পন্টুন সেতু নির্মাণ : বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে আগত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে তুরাগ নদের উপর ৭টি ভাসমান পন্টুন সেতু নির্মাণ করেছেন সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা। এ ব্যাপারে পন্টুন সেতু নির্মাণ কাজে নিয়োজিত করপোরাল আব্দুল কাইয়ূম জানান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তুরাগ নদের উপর ৭টি ভাসমান পন্টুন সেতু নির্মাণ করা হয়েছে ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের যাতায়াতের জন্য।

সিসি ক্যামেরা : বিশ্ব ইজতেমায় নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে ময়দান ও তার আশপাশের এলাকায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে ১৬০টি,র‌্যাবের পক্ষ থেকে ৯০টি,এসবি ঢাকার পক্ষ থেকে ৫০টি সিসি ক্যামারা লাগানো হয়েছে।

ওয়াচ টাওয়ার : গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে ১৫টি ও র‌্যাবের পক্ষ থেকে ১০টি ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া প্রায় ৮ হাজার পুলিশ সদস্য মোট পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নিয়োজিত থাকবে বলে জানিয়েছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো.আনোয়ার হোসেন।

চিকিৎসা সেবা :  ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে গাজীপুর সিভিল সার্জন ও টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাষ্টার জেনারেল হাসপাতালে বিশেষ চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া সামাজিক ও সেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে ওষুধ ও চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা : ইজতেমা ময়দান ও তার আশপাশের এলাকায় ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বিশেষ অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। ৩টি পানিবাহি গাড়ি, ৩টি এ্যাম্বুলেন্স,১টি টু হুইলার টহল গাড়ি,২টি ডুবুরী দল,৯০টি খিত্তায় ২জন করে ফায়ার ম্যান,২টি ফায়ার এক্সিট্রিম হুইসার, ১টি ফায়ার বিটা, তুরাগ নদে একটি ফায়ার বোর্ডের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের জোন-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক মো.মানিকুজ্জামান।

সুপেয় পানি ও বর্জ্য : ইতোমধ্যে ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের জন্য ৩ কেটি ৫৪ লক্ষ গেলন সুপেয় পানি এবং গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ময়দানের বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।

হকার উচ্ছেদ : ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের যাতায়তের সুবিধার্থে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের আব্দুল্লাহপুর থেকে চৌরাস্তা পর্যন্ত হকার উচ্ছেদ করা হয়েছে।  এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের শীর্ষ মুরুব্বি ও ময়দানের জিম্মাদার প্রকৌশলী মাহফুজ হান্নান প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, ইজতেমা ময়দানের প্রস্তুতিকাজ পুরোদমে চলছে। আগামী ১০ জানুয়ারির মধ্যে সকল প্রস্তুতি শেষ হবে

টি.কে ওয়েভ-ইন