শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

বাংলাদেশ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ায় রাকিবের গ্রামের বাড়িতে আনন্দ

প্রকাশিত হয়েছে- মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০
||
  • প্রকাশিত সময় : ফেব্রুয়ারি, ১১, ২০২০, ৩:৪৩ অপরাহ্ণ

নাজিম উদ্দিন, স্টাফ রির্পোটার, ফুলপুর।

অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের সদস্য রাকিবুল হাসানের গ্রামের বাড়ি ফুলপুরে মিষ্টি বিতরণসহ বিভিন্ন স্থানে আনন্দ মিছিল হয়েছে। তাকে নিয়ে সর্বত্রই আলোচনার ঝড় বইছে।

ফুলপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে রূপসী ইউনিয়নের বাশাটি গ্রামের ছেলে রাকিবুল হাসান। তবে জন্মের পর থেকে রাকিবুল হাসান কখনও গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস করেনি।

রাকিবুলের বাবা শহীদুল ইসলাম ঢাকায় থাকেন। তিনি পেশায় একজন গাড়িচালক। রাবিকুল পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় বসবাস করেন। তবে বছরে কয়েকবার গ্রামে বেড়াতে যান রাকিবুল হাসান। ওই সময় গ্রামের কিশোরদের সঙ্গে ঘুরে বেড়ান। রূপসী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ক্রিকেটও খেলেন।

রোববার রাকিবুল হাসানের গ্রামে গিয়ে দেখা যায়। টিনের ছোট্ট পুরনো বাড়ি রাকিবুল ইসলামের। আজও বিদ্যুতের আলো জ্বলেনি। বাড়িতে কেউ না থাকায় রাকিবুলের ফুফা কামাল হোসেন তার পরিবার নিয়ে বসবাস করেন।

ফুফু রোখসানা খাতুন জানান, রাকিবুল ইসলাম বেশি পড়তে চাইত না। সুযোগ পেলেই ক্রিকেট খেলায় লেগে যেত। এ জন্য আমরা বিরক্ত থাকলেও আজ সে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে। এখন আমরা খুবই আনন্দিত।

গ্রামের বিভিন্ন বয়সী মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাকিবুল বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলছেন এ খবর টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই জানে গ্রামবাসী। বিশেষ করে গ্রামের কিশোরেরা বেশি খবর রাখে। বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার পর থেকেই গ্রামের মানুষ রূপসী বাজারে গিয়ে রাকিবুলের খেলা দেখেছে।

গ্রামে ঢুকতে দেখা যায়, মিজান, এবাদুল, শাহরিয়ার ও মামুন মিয়ার সঙ্গে। তারা চারজনই রূপসী উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। গ্রামের ছেলের এমন কৃতিত্বে তারাও বেশ আপ্লুত।

তারা জানায়, রাতে বাড়ির বাইরে যাওয়া নিষেধ হলেও খেলা দেখার জন্য পরিবারের অনুমতি নিয়ে গত রোববার রাতে রূপসী বাজারে বসেই খেলা দেখেছেন। টানা উত্তেজনার অবসান ঘটিয়ে বিশ্বজয়ের শেষ রানটা আসে রাকিবুলের ব্যাট থেকে। এ আনন্দের ঘোর কাটছেই না তাদের।

রাতেই গ্রামের মানুষ রাকিবুলের দলের জয়ে আনন্দ মিছিল করেছে। এ চার কিশোরই রাকিবুলকে চেনে। এক বছর আগে রূপসী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে তারা রাকিবুলের খেলা দেখেছে।

বাশাটি গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা আবদুল হামিদ বলেন, গ্রামে এখন বোরো ধান রোপণের ভরা মৌসুম চলছে। মানুষের দম ফেলার সময় নেই। এমন দিনে রাকিবুলের সাফল্যের খবরে সোমবার সকাল থেকেই বিভিন্ন মাধ্যমের সাংবাদিকরা এসেছেন। এটি তাদের জন্য বড় আনন্দের বিষয়।

আবদুল হামিদ বলেন, খেলা এত বুঝি না। তবে গ্রামে সাংবাদিক আসায় এতটুকু বুঝেছি যে, আমাদের গ্রামের ছেলে বড় কিছুই করেছে।

গ্রামের মানুষের এ আনন্দকে আরও বাড়িয়ে দিতে চান রাকিবুল হাসানের বাবা শহীদুল ইসলাম। সোমবার দুপুরে বাশাটি গ্রামে থেকেই মুঠোফোনে কথা হয় শহীদুল ইসলামের সঙ্গে।

গ্রামের মানুষের বাঁধভাঙা আনন্দের খবর শুনে তিনি বলেন, ছেলে (রাকিবুল) দেশে আসলেই তাকে নিয়ে গ্রামে আসব। গ্রামের মানুষদের সঙ্গে এ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিব। তবে দেশের আসার পর কয়েকদিন হয়তো আনুষ্ঠানিকতাতেই কেটে যাবে। এরপরই গ্রামে আসব।