আজ বুধবার ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

স্টাফ রিপোর্টার || দৈনিক বাহাদুর
  • প্রকাশিত সময় : জুন, ১৮, ২০২২, ১১:১৩ অপরাহ্ণ




বন্যায় নেত্রকোনার সাত উপজেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অব্যাহত ভারী বৃষ্টিপাতে নেত্রকোনার ১০টি উপজেলার মধ্যে ৭টিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে কলমাকান্দা উপজেলায় গত বৃহস্পতিবার রাত আটটার পর থেকে সম্পূর্ণভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

অন্য উপজেলাগুলোতে কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সচল থাকলেও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। বিদ্যুৎ না থাকায় এসব এলাকায় মুঠোফোন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। খাওয়ার পানির তীব্র সংকট দেখা দিচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা, উপজেলা প্রশাসন ও নেত্রকোনা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, মদন, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরি, বারহাট্টাসহ সাতটি উপজেলায় বন্যার পানি দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে। অল্প সময়ের মধ্যেই দুর্গাপুর ও কলমাকান্দায় পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। কলমাকান্দায় প্রায় ৯২ শতাংশ, খালিয়াজুরিতে ৯৫ শতাংশ ও দুর্গাপুরে ৮০ শতাংশ এলাকা পানির নিচে রয়েছে। সাতটি উপজেলায় পানিবন্দী হয়ে পড়ছে প্রায় আট লাখ মানুষ। উপজেলার সঙ্গে ইউনিয়ন ও জেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ৬টি উপজেলায় ২০৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১৮ হাজার মানুষ ঠাঁই নিয়েছে।

বন্যার কারণে কলমাকান্দা উপজেলায় তিন দিন ধরে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া গতকাল শুক্রবার থেকে দুর্গাপুর, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরি, মদন, বারহাট্টা ও আটপাড়া উপজেলায় বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এলাকাগুলোতে রাতের বেলায় এখন মোমবাতির আলোই ভরসা। কিন্তু পানি ঢোকায় অধিকাংশ দোকান বন্ধ থাকছে। ফলে মোমবাতি ও দেশলাই কিনতে না পারায় এর সংকট দেখা দিচ্ছে।

আজ শনিবার বিকেলে কলমাকান্দার কৈলাটি ইউনিয়নের পাগলা বাজারে মোমবাতি, গ্যাসলাইট ও দেশলাই কিনতে এসেছিলেন ঘনিচা গ্রামের চান মিয়া তালুকদার, বড়পারুয়া গ্রামের কাশেম মিয়াসহ বেশ কয়েকজন। বাজারে জীবন দেবনাথ স্টোর নামের একটি দোকান খোলা দেখে সেখানে তাঁরা মোমবাতি ও দেশলাই কিনতে গিয়ে না পেয়ে ফিরে যান। তাঁরা জানান, দুই দিন ধরে খুবই দুর্বিষহ জীবন কাটাতে হচ্ছে। বাজারে একটি দোকানে কেরোসিন পাওয়া গেলেও এখন কুপি বাতি না থাকায় অন্ধকারে থাকতে হচ্ছে।

কলমাকান্দার উপজেলা শহরের বাসাউড়া এলাকার ব্যবসায়ী বিভাস সাহা বলেন, বাজারে এখন মোমবাতি ও দেশলাইয়ের চাহিদা বেড়ে গেছে। আজ সকাল থেকে সারা বাজারে মোমবাতি হাতে গোনা কয়েকটি দোকানে পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান তিনি। তবে যেসব দোকানে পাওয়া যাচ্ছে, তা আগের দামেই রাখা হচ্ছে।

কলমাকান্দা সরকারি ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক রোপণ সাহা বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে ভয়ংকর পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হচ্ছে কলমাকান্দাবাসীকে। বন্যার কারণে বিদ্যুৎ বন্ধ থাকায় খাওয়ার পানির সংকট দেখা দিচ্ছে। মুঠোফোন বন্ধ হয়ে গেছে। গ্যাসের সিলিন্ডারসহ মোমবাতিও সহজে মিলছে না।

কলমাকান্দা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির উপমহাব্যবস্থাপক মো. আনিসুল হক বলেন, কলমাকান্দা উপজেলার গুতুরা ও নাজিরপুর এলাকায় ১৩২/৩৩ গ্রিড উপকেন্দ্রে পানি আসায় গত বৃহস্পতিবার থেকে সারা উপজেলায় বিদ্যুৎ–সংযোগ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। উপকেন্দ্রের কন্ট্রোল রুম পর্যন্ত পানি ঢুকে পড়েছে।

নেত্রকোনা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক মো. জাকির হোসেন বলেন, কলমাকান্দা ছাড়াও দুর্গাপুর, বারহাট্টা, খালিয়াজুরিসহ সাতটি উপজেলায় বন্যার কারণে কিছু সাবস্টেশন বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। জেলায় পল্লীবিদ্যুতের ৫ লাখ ৯২ হাজার গ্রাহকের মধ্যে প্রায় ২ লাখ ৩৪ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ–লাইন বন্ধ রয়েছে। পানি কমে গেলেই আবার বিদ্যুৎ–লাইন চালু করা হবে।




Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও খবর




অনলাইন জরিপ

জাতিসংঘের বিশেষ দূত এলিস ক্রুজ বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল সব মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। আপনিও কি তা-ই মনে করেন?

View Results

Loading ... Loading ...

পুরনো সংখ্যার নিউজ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০