বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল -|- ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

প্রতারণার নতুন ফাঁদ ॥ ইউএনও’র কথা বলে ব্যবসায়ীদের ফোন ধরিয়ে দেন আতাউর

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ৯ মার্চ, ২০২২
প্রধান প্রতিবেদক || দৈনিক বাহাদুর
  • প্রকাশিত সময় : মার্চ, ৯, ২০২২, ৮:৪৪ অপরাহ্ণ

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পরিচয়ে প্রতারণার মাধ্যমে মিষ্টি ব্যবসায়ী ও বেকারী মালিকদের হুমকি দিয়ে টাকা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে। এরমধ্যে হুমকি পেয়ে দুই ব্যবসায়ী কথিত ইউএনও’র নম্বরে ২৮ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন।

সোমবার বিকালে পৌর শহরে এই প্রতারণার ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে মিষ্টি ব্যবসায়ীরা ইউএনও হাসান মারুফের সাথে যোগাযোগ করলে প্রতারণার বিষয়টি প্রকাশ পায়।  এর আগে ২০২১সনের ১০ এপ্রিল ও ২১ সেপ্টেম্বর ইউএনও হাসান মারুফের সরকারি নাম্বার ক্লোন করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্র। ওই দু’টি ঘটনায় পৃথক থানায় সাধারণ ডায়েরি হলেও প্রতারক চক্র ধরা পড়েনি এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।
ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে সোমবার বিকালে পৌরসভার লাইসেন্স পরিদর্শক আতাউর রহমান পৌর শহরের কয়েকটি মিষ্টির দোকানে যান। প্রত্যেক দোকানে গিয়ে আতাউর নিজের ফোন বের করে মিষ্টি দোকানিদের বলেন ইউএনও স্যার আপনাদের সাথে মোবাইলে কথা বলবেন। পরে ইউএনও পরিচয়ধারী দোকানিদের সাথে কথা বলে প্রত্যেকের মোবাইল নম্বর নেন। পরে আতাউর চলে গেলে ভিন্ন নম্বর থেকে ইউএনও পরিচয়ে ফোন করে ব্যবসায়ীদের হুমকি ও ভ্রাম্যমাণ আদালতে দ-ের ভয় দেখিয়ে টাকা চাওয়া হয়।
পৌর শহরের মিষ্টিমুখ দোকানের মালিক মো. সোহেল আহাম্মেদ সোমবার বিকালে পৌরসভার আতাউর ভাই দোকানে এসে নিজের মোবাইলে দিয়ে বলেন ইউএনও স্যার তোমার সাথে কথা বলবে। আমি কথা বলার পর ইউএনও পরিচয়ধারী দোকানের নাম ও মোবাইল নম্বর নিয়ে বলে ভিন্ন নম্বর থেকে আপনাকে ফোন দিচ্ছি। পরে ফোন দিয়ে বলে আপনার দোকানে জরিমানা করা হবে তালিকা করা হয়েছে। নাম কাটাতে চাইলে ৫০ হাজার টাকা বিকাশে দিতে হবে। আমি সরাসরি এসে টাকা নিয়ে যেতে বললে সংযোগ কেটে দেয়।
অপরদিকে ওইদিন আতাউর কাছে গিয়ে নিজের মোবাইল দিয়ে সুইটি মিষ্টি ঘরের মালিক আব্দুল হাইকেও ইউএনও’র সাথে কথা বলতে বলেন। পরে একই পন্থায় ওই দোকানির কাছ থেকে বিকাশ একাউন্টের (একাউন্ট নং ০১৯২৩-৮৯১৬১) মাধ্যমে ১৩হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্রটি। মধ্যবাজারের জয়দুর্গা মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক উজ্জল চন্দ্র দে এর নিকট থেকে বিকাশ একাউন্টের (একাউন্ট নং ০১৯৩৩-২১২১২০) মাধ্যমে ১৫হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
এদিকে ০১৯৩৩-২১২১২০ এবং ০১৯২৩-৮৫১৭০২ নাম্বার থেকে ইউএনও হাসান মারুফ পরিচয় দিয়ে একই দিনে মধ্যবাজারের সৌরভ মিষ্টান্ন ভান্ডারের ভজন চন্দ্র দাসকে, মা মিষ্টান্ন ভান্ডারের মনোরঞ্জন ঘোষকে, জিম বেকারীর মো. সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, ভাই ভাই বেকারীর মো. ফারুক মিয়াকে অনুরূপ হুমকি দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গৌরীপুর পৌরসভার সহকারী লাইসেন্স পরিদর্শক মো. আতাউর রহমান বলেন, আমাকে গৌরীপুর পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার মদন মোহন দাস স্যার বলেছেন ইউএনও স্যার কথা বললেন। তার নিকট থেকেই আমার মোবাইল নাম্বার নিয়েছেন। তাৎক্ষনিক সময়েই ইউএনও স্যার পরিচয়ে ০১৯২৩-৮৫১৭০২ থেকে আমাকে কল করেন এবং ইউএনও হাসান মারুফ হিসেবে পরিচয় দেন। উনার কথামতোই আমি দোকানদারদের সঙ্গে মুঠোফোনে পরিচয় করে দিয়েছি। তবে কাউকে টাকা-পয়সা দিতে কোনো কিছু বলি নাই। এখন জানতে পেরেছি এটা ভুয়া ইউএনও’র নাম্বার ও পরিচয়।
এ প্রসঙ্গে গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী জানান, ইতোমধ্যে দু’টি জিডির বিষয়ে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে অপরাধীদের সনাক্তকরণ ও গ্রেফতারের চেস্টা অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনা শোনেছি, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিবো।