আজ বৃহস্পতিবার ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০, ২৮শে মার্চ ২০২৪

শিরোনাম:
কামারিয়া ইউনিয়নকে আধুনিক ও স্মার্ট ইউনিয়ন গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে ইউপি চেয়ারম্যান আজহার খুলনার মাকসিদুলের বিভীষিকাময় ২৪ ঘণ্টা : গৌরীপুরেটর্চারসেল থেকে আবারও যুবক উদ্ধার \ গ্রেফতার-১ মুক্তিযুদ্ধা মেজবা উদ্দিনের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন গৌরীপুরে বিএমএসএফের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত গৌরীপুর মহিলা কলেজের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন ময়মনসিংহে মেধা ও যোগ্যতায় পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকুরী পেলেন ১২৮ জন পুলিশের উর্দ্বতন কর্মকর্তা পরিচয়ে ফেইসবুকে প্রতারণা।  ডিবির হাতে গ্রেফতার মসিকের উদ্যোগে ৫৫০ টাকা কেজি গরুর মাংস বিক্রি শুরু শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হলেন ময়মনসিংহের রাকিবুল হাসান মিলন মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস :গৌরীপুরে পতাকা মিছিল ও সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন
||
  • প্রকাশিত সময় : জুন, ২, ২০২০, ১:৩৭ পূর্বাহ্ণ




পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি– লুৎফর রহমান

পুরুষতন্ত্রে নারীর প্রতি পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি ঋণাত্মক। নীচে এর ওপর আমরা আলোচনার প্রয়াস পাবো।
প্রয়োজন:
পুরুষতন্ত্রে পুরুষ মূলগতভাবে নারীকে অপছন্দ করে, ঘৃণা করে, কিন্তু সব সময় নিজের সাথে রাখতে চায়। এর পেছনে যৌনতা ও জাগতিক প্রয়োজন কাজ করে। যতোই নারীবিদ্বেষী হোক সন্ত্রাসী কর্মে লিপ্ত থাকুক ওসামা বিন লাদেন, বাংলাভাই ও শায়েখ আব্দুর্ রহমানরা যৌন সাথিকে দূরে রাখে নাই, সাথেই ছিলো। কবি নারীর পক্ষে বলেছেন যে, কর্ম হয়ে গেলে সে কেনো পাশ ফিরে শোয়? আমাদের সমাজে পুরুষের রান্না শিখতে হয় না, কিন্তু ছোট্ট কন্যা শিশুটিকে ঠিকই রান্না শেখার তাগিদ দেয়া হয়, ঘরসাজানো শেখার তাগিদ দেয়া হয় কারণ পুরুষতন্ত্রের জন্য সেটা প্রয়োজন।
ভয়:
পুরুষের কাছে নারী যেমন আকর্ষণীয় বস্তু তেমনি ভয়েরও। নারী তাকে পাপের পথে নেবে, ভুল পথে নেবে এমন ভয়- যেমন হাওয়া আদমকে নিয়েছিলো। তবে নারীর দেহকে পুরুষ অসংখ্য উপমায় প্রশংসা করে সে শুধু একে একান্ত নিভৃতে পাওয়ার জন্য। আমরা দেখি নিজের মেয়েটিকে পুরুষ আদর করে, মা বলে ডাকে। মেয়েটি যেই যৌবনবতী হলো অমনি বাবার ভয় তাকে কখন কন্যাটি সামাজিকভাবে খাদে ফেলে দেয়! এটা নারীর যৌবনের প্রতি ভয়। তারা মনে করে নারী-যৌবনের বিরাট সম্মোহনী শক্তি আছে যা দিয়ে সে যে কোনো সময় অঘটন ঘটিয়ে দিতে পারে। মনে করে এই সুন্দরের মধ্যে সংহারক শক্তি বিরাজ করে। তাই নারীকে সে ভালোসার ছলনায় ঘরে আটকে রাখতে চায়।
ঋতুকাল:
নারীকে পুরুষ যতোই প্রিয় ভাবুক, ঋতুকালীন সময়টা তার খুব অপছন্দের। এ সময়ে নারী অশুচি, অস্পৃশ্য থাকে। এ সময়টায় তাকে স্পর্শ করা যায় না, ভোগ করা যায় না। হিন্দু ধর্মে এ সময়ে নারীকে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে দেয়া হয় না। আর ইসলাম ধর্মে সব ধর্মীয় কাজ থেকে বিরত করে দেয়া হয় কারণ নারী তখন অপবিত্র। অথচ মাসিক নারীর জৈবিক ধর্ম। এটা বন্ধ হলেই সে পুরুষের কাছে পবিত্র হয়। পুরুষতন্ত্র নারীর ঋতুস্রাবকে তার অপবিত্রতার নিদর্শন স্বরূপ উপস্থাপন করে।
কুমারীত্ব:
পুরুষ নারীর কুমারীত্ব নিয়ে ভাবনার জাল বুনে। সন্দেহ করে নারীর কুমারীত্ব বজায় আছে কিনা! অথবা কোনো সমাজে কুমারীত্বকে ভয় পায় যে এটা ভাঙ্গলে তার লিঙ্গের, পৌরুষের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই সমাজপতি বা পুরুহিত দিয়ে ভাঙ্গিয়ে নেয়। আবার কোনো এলাকার পুরুষ কুমারীত্বের অঞ্চলটিকে লিঙ্গ নামক অস্ত্র দিয়ে দখল নিতে ব্যাকুল হয়। ওখানে বিজয় নিশান ওড়াতে পারলেই নারীকে সে পদানত করে আনন্দ পায়। নারীকে পাওয়ার আগে ছলাকলা আর পেয়ে গেলে স্ব মূর্তিতে ফিরে আসে পুরুষটি।
অলৌকিকতা:
পুরুষ মনে করে নারীর অলৌকিক একটা ক্ষমতা রয়েছে। সে স্বার্থপর যাদুকর। স্বামী স্ত্রীকে বলে, দেখো আমাদের ছেলেটির ওপর কতো আশাভরসা ছিলো, কতো কষ্ট করে মানুষ করলাম আর করিমের ডাইনি মেয়েটি কী যাদু করলো, দখল করে ফেললো। এখানে ওরা নারীর ঐন্দ্রজালিক ক্ষমতার দোষ দিলো আর ছেলেটি নিষ্পাপ রয়ে গেলো। নারীকে পুরুষতন্ত্র সবসময় ডাইনি মনে করে এবং এর থাবা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য শক্তি প্রয়োগ করে অথবা প্রেমের অভিনয় করে। কখনো বিজ্ঞানমনস্কদের ক্ষেত্রেও দেখা যায় নারীর প্রতি ঘৃণা। মনোবিজ্ঞানী ফ্রয়েড বলেছেন, নারী তার যৌনাঙ্গটি দিয়ে পুরুষকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। সুতরাং নারীকে বিশ্বাস করা যাবে না, করলে পতনের সম্ভাবনা বেশি।
নারীর যৌনতা:
নারী-পুরুষ উভয়ের মাঝেই যৌনতা আছে তবে দুটো এক নয়- এমনটাই পুরুষতন্ত্রের ধারণা। পুরুষের কাম হচ্ছে সৃষ্টিজগৎকে রক্ষা করার প্রয়োজনে। আর নারীর যৌনতা হচ্ছে বিনাশের নিমিত্তে। নারীর কাম নিয়ে এই হচ্ছে পুরুষতন্ত্রের বক্তব্য। তারা আরো বলে, নারীর যৌনতা এক অশেষ ক্ষুধা পুরুষকে একেবারে নিংড়ে নেয়। পুরুষটি নিজ স্ত্রীকে বলে, দেখো বিয়ের পর আমাদের ছেলেটির স্বাস্থ্য কেমন ভেঙ্গে পড়ছে; এ মেয়ে রাক্ষসী ছেলেটিকে শেষ করে ছাড়বে। স্ত্রীটির ওপর পুরুষতন্ত্রের সামাজিকীকরণ হয়েছে, সে উত্তর দেয়, এ মেয়ে মক্ষিরাণী দেখবে তোমার ছেলে মৃত্যু জেনেও ওখানেই যাবে।
রহস্যময়তা:
পুরুষতন্ত্র নারীকে রহস্যময়ী ভাবে। পিতৃতান্ত্রিক কবি নারীকে রমণীয়, কমণীয়, পেলব বলে বর্ণনা করে তার গোপন রহস্যের সন্ধানে লিপ্ত হয়। পুরুষতন্ত্র নারীকে এভাবে এক রহস্যময়ী সত্তা রূপে জ্ঞান করে, নারী যে পুরুষের মতোই মানুষ এ সত্যকে বাতিল করে দেয়। এখানেই মূল লড়াই। পুরুষতন্ত্র কর্তৃক আরোপিত এই রহস্যময়তার পর্দাকে ছিন্ন করে নারীকে মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। সে জন্য প্রয়োজন হবে বৈষম্যের সমাজটিকে উৎখাত করে একটি মানবিক সাম্যের সমাজ প্রতিষ্ঠার। এ লড়াই চলছে, এখন প্রয়োজন সংগঠিত রূপ দিয়ে একে ত্বরান্বিত করা। (চলবে)——–
৩১/০৫/২০০২০ খ্রিঃ।




Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও খবর




অনলাইন জরিপ

জাতিসংঘের বিশেষ দূত এলিস ক্রুজ বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল সব মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। আপনিও কি তা-ই মনে করেন?

View Results

Loading ... Loading ...

পুরনো সংখ্যার নিউজ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১